Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

আয়ুর্বেদিকের আড়ালে মাদক বিক্রি

নারিন্দায় র‌্যাবের অভিযান গ্রেফতার ৬

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাজধানীর নারিন্দাতে আয়ুর্বেদিক ওষুধের কারখানায় তৈরি করা হচ্ছিল মাদকমিশ্রিত বিশেষ এক পানীয়। সম্প্রতি মাদকমিশ্রিত এ পানীয়তে আসক্ত হয়ে পড়েন কামরাঙ্গীরচরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার শত শত যুবক। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ যায় র‌্যাবের কাছে। সর্বশেষ গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-২।

তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারিন্দার কারখানাটিতে অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ৫০০ বোতল বিভিন্ন প্রকার মাদকমিশ্রিত পানীয় জব্দ করা হয়। এছাড়া এ পানীয় তৈরির কাজে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ইয়াবার গুড়া, গাঁজা সদৃশ বস্তু ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো-মূলহোতা মো. ওয়াজেদ ইসলাম শান্ত (২০), মো. রাসেল (২৯), মো. হৃদয় (২৯), মো. মুরসালিন আহম্মেদ (১৮), মো. সবুজ মিয়া (১৮) ও মো. নান্টু (৫২)।

র‌্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বেশ কয়েকজন অভিভাবকের কাছ থেকে অভিযোগ পাই। অভিযোগগুলো এমন যে- কামরাঙ্গীরচরের একটি দোকানে আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে এক প্রকার পানীয় বিক্রি হচ্ছে। তাদের সন্তানরা এ পানীয়ের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছেন ও সেবনের পর মাদকাসক্তদের মতো আচরণ করছেন। র‌্যাব-২ এর গোয়েন্দা দল গোপনে ওই দোকান থেকে পানীয় সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠায়। পরীক্ষাগারে ওই পানীয়ের মধ্যে গাঁজা, ইয়াবা, ড্যান্ডি তৈরিতে ব্যবহৃত টলুইন নামক ‘ক’ শ্রেণির মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়া তীব্র ঘুমের ওষুধ ও যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির বিভিন্ন উপকরণ ও এসিড জাতীয় দ্রব্যাদিসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায় ওই পানীয়তে। এটি পান করলে কিডনিজনিত ছাড়াও নানান রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, নারিন্দাতে অবস্থিত কারখানায়, কামরাঙ্গীরচর, কাটাবন, নাজিরাবাজার, গুলিস্তান ও পুরান ঢাকার বিভিন্ন আউটলেটে অভিযান চালিয়ে আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে মাদকমিশ্রিত পানীয় উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, চক্রটি ফার্মেসির নামে লাইসেন্স নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিক্রির আড়ালে মাদক ও যৌন উত্তেজক দ্রব্যাদি মেশানো পানীয় প্রস্তুত ও বিক্রি করে আসছিল। প্রতিটি পানীয়ের প্রতি বোতলের দাম ১৬০-২০০ টাকা। বিভিন্ন আউটলেট থেকে প্রতিদিন এ পানীয়ের অন্তত ৩০০-৪০০ বোতল বিক্রি হতো। অল্প দামে পাওয়ায় ও নেশা জাতীয় দ্রব্যাদির উপস্থিতি থাকায় তরুণ-যুবকদের কাছে পানীয়টির চাহিদা সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা গত ২-৩ বছর ধরে এ পানীয় উৎপাদন ও বিক্রি করছে। পানীয়টি নারিন্দার কারখানায় উৎপাদন করা হয়, পরে রাজধানীর বিভিন্ন আউটলেটে সরবরাহ করা হতো। তারা ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে কারখানার কার্যক্রম পরিচালনা করতো। বিভিন্ন সময়ে তারা বাসা পরিবর্তনের মাধ্যমে অবস্থান পরিবর্তন করেছিলো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ