পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) আয়কর রিটার্ন বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যারা কয়েক বছর আগে জরুরি কাজে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নিয়েছেন, কিন্তু প্রতিবছর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক হলেও কোনোবারই রিটার্ন দেননি, তারা এবার রিটার্ন দিলে কোনও জরিমানা গুনতে হবে না। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সবাইকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনা হয়েছে। এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, এতোদিন টিআইএন নেওয়ার পর কেউ কোনও বছর রিটার্ন দাখিল না করলে, তাকে প্রতি বছরের জন্য সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা গুনতে হতো। এছাড়া কর্মকর্তাদের হয়রানির ভয়ে মানুষ রিটার্ন দিতে আগ্রহী হতো না। কেননা, রিটার্ন দিলেই ডিসিটি থেকে জয়েন্ট কমিশনার হয়ে ওপরের স্তরে ওই ফাইল যেতেই থাকবে। একইসঙ্গে করদাতাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো।
দেশে বর্তমানে ৭৬ লাখ টিআইএনধারী রয়েছেন, তাদের মধ্যে মাত্র ২৬ লাখ টিআইএনধারী রিটার্ন জমা দেন। বাকি ৫০ লাখ টিআইএনধারীর জন্য এবার বিরাট সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এনবিআরের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। জরিমানা বাতিল করায় করদাতা ও রাজস্ব বিভাগ-উভয়েই উপকৃত হবেন বলে মনে করেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ।
তিনি বলেন, টিআইএনধারী সবাইকে রিটার্ন দাখিল করাতে পারলে একদিকে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। যে ৫০ লাখ টিআইএন করেও রিটার্ন জমা দিতেন না, জরিমানা বাতিল করায় তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ এবার রিটার্ন জমা দেবেন।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে আগের আয় বছরের রিটার্ন দাখিল শুরু হয়। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিল করতে পারেন করদাতারা। অর্থাৎ আগামী ৩০ নভেম্বর চলতি বছরের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।
তবে যৌক্তিক কারণে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দাখিল না করতে পারলে উপকর কমিশনারের কাছে আবেদন করে করদাতা সময় নিতে পারেন। কিন্তু আবেদন না করলে তাকে প্রদেয় করের ১০ শতাংশ বা ১ হাজার টাকার মধ্যে যা বেশি, ওই পরিমাণ অর্থ এবং প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা করে জরিমানা দিতে হয়। যাদের বছরে তিন লাখ টাকার বেশি আয় আছে, তাদের মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সবার টিআইএন নেওয়া ও প্রতি বছর আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে টিআইএনধারীদের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৩৭ ধরনের সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে কেবল জমি বিক্রি করতে এবং ক্রেডিট কার্ড নিতে যারা টিআইএন নিয়েছেন, তাদের রিটার্ন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। এছাড়া বাংলাদেশে স্থায়ী ভিত্তি নেই-এমন বাসিন্দাদের রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক নয়।
আয়কর বিভাগের হিসাব মতে, প্রতিটি কর অঞ্চল থেকে ই-টিআইএনধারী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে রিটার্ন দাখিল করতে নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ই-টিআইএন-এ দেওয়া ঠিকানায় সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার খুঁজে পাওয়া গেলেও তারা রিটার্ন দেয় না। তাদের অনেকে ভয়ে ও অনেকে ঝামেলায় এড়াতে রিটার্ন দাখিল থেকে বিরত থাকে। অনেকে মনে করেন, একবার রিটার্ন দাখিল করলে প্রতিবছর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। অহেতুক ঝামেলা এড়াতে একাধিক নোটিশ দেওয়া হলেও বেশিরভাগ মানুষ কর্ণপাত করে না। গত দুই বছর কর অঞ্চল থেকে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ই-টিআইএন-এ দেওয়া মোবাইল ফোন নম্বরে এসএমএস দিয়ে রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য তাগিদ দেওয়া হয়। এরপরও বেশিরভাগ টিআইএনধারী রিটার্ন জমা দিচ্ছেন না। যদিও ২০১৯ সাল থেকেই প্রত্যেক টিআইএনধারীর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। জানা গেছে, টিআইএনধারীদের মধ্যে ২৬ লাখের কোনও হদিসই পাওয়া যাচ্ছে না, যা ‘ফাইল্ড কেস’ হিসেবে রাখা হয়েছে।
ব্যক্তি করদাতা ছাড়াও প্রায় পৌঁনে ২ লাখ নিবন্ধিত কোম্পানি রয়েছে, যার মধ্যে রিটার্ন জমা দেয় ৩০ হাজারের কম। জিডিপিতে করের অবদান বিবেচনায় বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম পিছিয়ে থাকা একটি দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশই ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিওতে বাংলাদেশের ওপরে অবস্থান করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।