Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চট্টগ্রামে থামছে না ডায়রিয়ার প্রকোপ

আক্রান্ত আরো ১৩৯ জন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামে ডায়রিয়ার প্রকোপ থামছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরী ও জেলায় আরো ১৩৯ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। নগরীর হালিশহর, পতেঙ্গা ও আগ্রাবাদ এলাকায় আক্রান্ত ৪১ জন ভর্তি হয়েছেন বিশেষায়িত হাসপাতাল ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ হাসপাতালে। সেখানে গতকাল পর্যন্ত ৫৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। জেলার ১৫টি উপজেলার ১৩টিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৭২ জন।
গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নগরীর হালিশহর, পতেঙ্গা ও আগ্রাবাদ এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ চলছে। আট দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৪১ জন রোগী। গতকাল পর্যন্ত ডায়রিয়ায় কারো মৃত্যু না হলেও এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া। হাসপাতালে ভর্তি ৮১ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে এ পর্যন্ত ৩৬ জনের নমুনায় কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে বলা হচ্ছে, ঘনবসতিপূর্ণ এসব এলাকায় পানি দূষণের কারণে পানিবাহিত এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রবল জোয়ারে এসব এলাকা নিয়মিত প্লাবিত হচ্ছে। জোয়ারের পানির সাথে আসা ময়লা-আবর্জনা পানির উৎসে ঢুকে পড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে।
বিআইটিআইডি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিদিনই হাসপাতালে ডায়রিয়ার সমস্যা নিয়ে রোগী ভর্তি হচ্ছে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশিরভাগই একটা নির্দিষ্ট এলাকার। ওই এলাকার খাবারের পানিতে কোনো সমস্যা আছে কিনা তা যাচাই করা দরকার। আক্রান্ত রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে। কয়েকজনের শরীরে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে।
নগরীর হালিশহরসহ আশপাশের এলাকায় ডায়রিয়ার কারণ চিহ্নিত করতে গত শুক্রবার থেকে কাজ করছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি দল। সাত সদস্যের এ টিম নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। গতকাল টিমের সদস্যরা নগরীর ৩৭ এবং ৪০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। সিভিল সার্জন অফিস থেকে বলা হয়, পানির নমুনা পরীক্ষার পর ডায়রিয়ার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এদিকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী মহানগরীর নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকার পাশাপাশি উপজেলাতেও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে পটিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ১৭ জন রোগী পাওয়া গেছে। এছাড়া হাটহাজারী, বোয়ালখালী ও চন্দনাইশ উপজেলায় ১০ জন করে, রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়ি উপজেলায় ৯, আনোয়ারায় ৭ জন, রাউজানে ৬ জন, মীরসরাইয়ে ৫ জন, সীতাকুণ্ডে ৩ জন, সন্দ্বীপ ও লোহাগাড়ায় ১ জন করে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৭২ জন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী জানিয়েছেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় ১৫টি উপজেলায় ২৮৪টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে। যেহেতু ডায়রিয়া আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী এক-দুই দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাই তেমন সমস্যা হবে না আশা করি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, নিরাপদ পানি পান এবং খাওয়ার আগে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ভালো করে হাত ধোঁয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া ডায়রিয়া থেকে সুরক্ষা পেতে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি খোলা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দেন তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ