Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধূপখোলা মাঠের ঐতিহ্য রক্ষায় লিগ্যাল নোটিশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

গেন্ডারিয়ার ধূপখোলা মাঠ অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার এবং তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার সাত বেসরকারি সংস্থা ও বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ নোটিশ দেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করর্পোরেশনের মেয়র, ভূমি মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব, পরিবেশ মন্ত্রণালয় সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, রাজউক চেয়ারম্যান, পুলিশ কমিশনার, প্রধানগর পরিকল্পনাবিদ, ঢাকার জেলা প্রশাসক এবং ৪৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে নোটিশের ‘প্রাপক’ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৫ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত ৭ দশমিক ৪৭ একর আয়তন বিশিষ্ট পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ধূপখোলা মাঠ যা ঢাকা মহানগরীর সর্ববৃহৎ মাঠ। এ মাঠে পুরান ঢাকার সাতটি থানা এলাকার শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করে। এটি শুধু একটি খেলার জায়গাই নয়, আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা, বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে অবসর সময় কাটানোর জন্যও এ মাঠে যায় লোকজন। ধূপখোলা মাঠটি ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্য ও গর্বের একটি অংশ। এ মাঠে বাংলাদেশের জাতীয় দলের বেশ ক’জন খেলোয়াড় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এখনও প্রতিবছরই ধূপখোলা মাঠ থেকে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় তৈরি হয়।
মাঠটি মূলত তিন ভাগে বিভক্ত উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, এর একটি অংশ জগনড়বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। বাকি দু’টি অংশ ইস্ট এন্ড ক্লাব মাঠ ও স্থানীয় খেলার মাঠ। তিনটি অংশের প্রত্যেকটি আকারে একটি ফুটবল মাঠের চেয়ে বড়।
২০১৬ সালে মাঠে একটি বাণিজ্যিক শিশুপার্ক নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিবাদে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাধ্য হয়ে গণশুনানির আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। তাতে এলাকাবাসী বাণিজ্যিক আগ্রাসন থেকে ধূপখোলা মাঠ রক্ষার পক্ষে অবস্থান নেন। গণদাবির মুখে বাণিজ্যিক শিশুপার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেও বর্তমানে মাঠটিতে গ্যালারিসহ খেলার মাঠ ও শিশু কর্ণার এবং একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। প্রবল জন আপত্তি ও আন্দোলনের ফলে প্রকল্পের কাজ সাময়িক বন্ধ রাখলেও ২০২১ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই মাঠের ভেতরে রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে একটি বহুতল মার্কেট তৈরির কাজ শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, এটি মাঠ ‘উনড়বয়ন’ উদ্যোগের অংশ। এ মার্কেটের কারণে মাঠের শূণ্য দশমিক ৬২ শতাংশ জায়গা কমে যাবে। বহুতল মার্কেটটি ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করর্পোরেশন মাঠটিতে হাঁটার রাস্তা, বসার ব্যবস্থা, পার্কিং জোন, একটি ক্যাফেটেরিয়া ও শিশুদের জন্য একটি আলাদা জোন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় নোটিশে। এতে মাঠের জায়গা আরও কমবে। কথিত ’উনড়বয়ন’ কাজের ফলে ফুটবল মাঠের আকার ৭ দশমিক ৪৭ একর থেকে ৪ দশমিক ০১ একরে নেমে আসবে। এর ফলে উন্মুক্ত ও জনসাধারণের ব্যবহৃত স্থান হিসেবে মাঠের মূল বৈশিষ্ট্যগুলোই হারিয়ে যাবে। সেইসঙ্গে হারাবে এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। তাই নোটিশে ‘অননুমোদিত ও বেআইনিভাবে’ শুরু হওয়া মার্কেট নির্মাণের সকল কার্যμম বন্ধ করে মাঠটিকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
নোটিশ প্রদানকারী সংস্থাগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), নিজেরা করি, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি ( বেলা), ব্লাস্ট, নাগরিক উদ্যোগ, গ্রীণ ভয়েস এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ শাহআলম মিজি ২২ আগস্ট, ২০২২, ৯:১৮ এএম says : 0
    ব‍্যানিজ‍্যক কোন ভবন না করে এখানে আধুনিক গার্ডেন কাম পার্ক তৈরি করুন যাতে দেশী বিদেশী পর্যটক দেখতে আসবে কিছুটা যেমন যাত্রাবারীতে করা হয়েছে,এলাকাবাসী ও দেশ উপকৃত হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ