পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম। অভাবের তাড়নায় পরিবার-পরিজনের মুখে হাসি ফোটাতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন। রাজধানীর অলিগলিতে রোদে পোড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে রিকশা চালান। উপার্জনের টাকা দিয়ে সুখেই দিন কাটে তার। যতটুকু দৈনিক তার উপার্জন সেটুকু দিয়েই দৈনন্দিন প্রয়োজন মিটান। অন্যের টাকা ও দামি জিনিসের প্রতি তার কোন লোভ নেই জানালেন রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম।
গত কয়েকদিন আগের রাজধানীর গুলশান এলাকার যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন রিকশাচালক আমিনুল। সেসময় তার নজরে আসে একটি দামি মোবাইল ফোন পড়ে রয়েছে। আইফোনোর সর্বাধুনিক ম্যাক্সপ্রো মডেলের ফোনটিতে খুব বেশি চার্জ ছিল না। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোনটি বন্ধ হয়ে যাবে বুঝতে পারছিলেন তিনি। এই অবস্থায় ফোনটি নিয়ে কি করবেন চিন্তায় পড়ে গেলেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন মোবাইল ফোনটিতে কল আসার। এরইমধ্যে চার্জ শেষ হয়ে ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। আইফোনের মধ্যে থাকা সিম কার্ডটি খুলে নিজের ফোনে নিলেন। অপেক্ষা করতে থাকলেন কখন এই নম্বরে ফোন আসে। হঠাৎ একটি কল পেলেন তিনি। যিনি কল করেছেন তিনি ওই ফোনের মূল মালিককে চাইছিলেন। রিকশাচালক তখন অপরপ্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে জানালেন তিনি এই ফোনটি রাস্তায় পেয়েছেন। মূল মালিককে এই নম্বরে ফোন করতে বললেন। তিনি তার পরিচয় দিলেন।
মোবাইল ফোনের মালিকের পক্ষ থেকে ফোন করে রিকশাচালক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা হলো এবং একটি ঠিকানা দিয়ে ফোনটি নিয়ে সেখানে যেতে বলা হলো। ঠিকানা অনুযায়ী রিকশাচালক আমিনুল ফোনটি পৌঁছে দেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিক মোবাইল ফোনের মূল মালিকের হাতে।
এতো দামি ফোন হাতে পেয়েও লোভ না করে রিকশাচালক সেটি ফেরত দেয়ার ঘটনা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম জানতে পারেন। যে কারণে রিকশাচালকের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তিনি গুলশান ডিএনসিসি নগরভবনে ডেকে পাঠান আমিনুলকে। গতকাল রোববার আসেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রের কার্যালয় গুলশান নগর ভবনে। আমিনুল ইসলামের হাতে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে তুলে দেন ডিএনসিসি মেয়র। এসময় উপস্থিত সবাই কড়তালির মাধ্যমে দাঁড়িয়ে ওই রিকশাচালকের সততার প্রতি সম্মান জানান।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, একটা মানুষের মধ্যে কতটা সততা থাকলে দামি ফোনের প্রতি লোভ না করে এভাবে ফেরত দিতে পারেন। আমাদের সমাজের এমন সৎ নির্লোভ মানুষের খুব প্রয়োজন। তাই আমরা তাকে সম্মান দেখিয়ে পুরস্কৃত করছি।
রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, কোনো পুরস্কারের আশায় আমি ফোন ফেরত দেইনি। যখন আমি ফোনটা পেলাম তখন মনে হল একটা ফোনে একজন মানুষের জরুরি অনেক কিছুই থাকতে পারে। যা হারিয়ে গেলে তার ক্ষতি হতে পারে। সেই চিন্তা থেকে আমি তাঁকে খুঁজে বের করে ফোনটি ফেরত দিই। আমার বাসা বাড্ডা এলাকায় হলেও আমি গুলশানের ভেতরে রিকশা চালাই। কিছুদিন আগে ১০৩ নম্বর রোডে আমি এই ফোনটি কুড়িয়ে পাওয়ার পর মূল মালিককে ফেরত দেয়াই ছিল আমার লক্ষ্য। ফোন পাওয়ার পর আমার মধ্যে কোনো লোভ কাজ করেনি, যে কারণে আমি নিজে গিয়ে ফেরত দিয়ে আসি।
আমিনুলের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে। স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়ে তিনি থাকেন বাড্ডায়। তাদের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।