পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রফিকুল ইসলাম সেলিম : চট্টগ্রামের আদালতগুলোতে বিচারাধীন মামলার পাহাড় জমেছে। এখানকার ৭৫টি আদালতে প্রায় সোয়া লাখ মামলা বিচারের অপেক্ষায় ঝুলছে। এগুলোর সাথে প্রতিদিন যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মামলা।
আদালত এবং সেই সাথে বিচারকে সংখ্যা কম হওয়ায় বিচার নিষ্পত্তিতে বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। বেশ কয়েকজন বিচারকের পদ শূন্য দীর্ঘদিন থেকে। যে হারে মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে তার কয়েকগুণ বেশি নতুন মামলা বিচারের জন্য আসছে। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা।
বিচারপ্রার্থীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগস্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে মামলার বিচার শেষ না হওয়ায় বিনা বিচারেই বছরের পর বছর অভিযুক্তদের কারাপ্রকষ্টে থাকতে হচ্ছে। চরম সংকটে দিন কাটছে এসব বন্দিদের পরিবারের।
জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে চট্টগ্রামে আদালত ও বিচারকের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বিচারকদের শূন্যপদ পূরণের উদ্যোগ নিতে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
আদালতে মামলা জটের কারণে বিচার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এক একটি মামলার বিচার শেষ হতে বছরের পর বছর এমনকি যুগের পর যুগও পার হয়ে যাচ্ছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বন্ধুকে খুনের দায়ে বন্ধুর যাবজ্জীবন কারাদ-ের রায় দেয়া হয়। ১৯ বছর পর আলোচিত এ মামলাটির বিচার শেষ হয়। গত রোববার সন্দ্বীপ উপজেলার আলোচিত আক্কাস হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে মামলার সব আসামী খালাস পান। ওই মামলার বিচারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৩ বছর। এত দিনে মামলার তিন আসামীসহ বেশ কয়েকজন সাক্ষী মারা যান।
আক্কাস হত্যা মামলার মতো অনেক মামলা বিচারের জন্য ঝুলছে আদালতে। আলোচিত কিছু হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করা হলেও অনেক মামলা বিচারের অপেক্ষায় বছরের পর বছর আদালতে ঝুলে আছে। ফৌজদারি মামলার চেয়ে নিষ্পত্তিতে বেশি সময় লাগছে দেওয়ানী মামলার।
আইনজীবীরা জানান আদালতে মামলা বেশি হওয়ায় অনেক মামলার বিচারের জন্য মাসে একবার তারিখ নির্ধারণ করা হচ্ছে। কোন কারণে ওই তারিখে সাক্ষী হাজির হতে না পারলে ফের এক মাস পিছিয়ে দিন ধার্য করা হচ্ছে। এতে করে মামলার বিচার কার্যক্রম প্রলম্বিত হচ্ছে।
আদালত সূত্র জানায়, বর্তমানে মহানগর ও জেলা জজের আদালত ও বিচার বিভাগীয় হাকিম আদালতগুলোতে প্রায় সোয়া লাখ মামলা বিচারের অপেক্ষায় আছে। তার সাথে প্রতিদিন নতুন নতুন মামলা যোগ হচ্ছে। লোক সংখ্যার সাথে চট্টগ্রামে থানার সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় আদালত ও বিচারকের সংখ্যা বাড়েনি।
বিগত ১৯৯৯ সালে মহানগরীর মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্য মহানগর আদালতের কার্যক্রম চালু হয়। মহানগর দায়রা জজের অধীন আদালতের সংখ্যা ২১টি। বর্তমানে মহানগরীতে লোক সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। থানার সংখ্যা ১০টি বেড়ে হয়েছে ১৬টি। তবে সে অনুযায়ী আদালত ও বিচারকের সংখ্যা বাড়েনি। এতে করে আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা বাড়ছে।
একই অবস্থা জেলা জজের অধীন আদালতেও। জেলার লোক সংখ্যা বাড়ছে। থানার সংখ্যা ১৪টি থেকে বেড়ে ১৬টি হয়েছে। আরও চারটি নতুন থানা করার প্রক্রিয়া চলছে। তবে সে অনুপাতে আদালত ও বিচারকের সংখ্যা বাড়েনি। তার উপর বিদ্যমান আদালতে বিচারক সংকট চলছে। বিচারকদের পদ প্রায়ই শূন্য থাকছে। এতে করে মামলা নিষ্পত্তিতে সমস্যা হচ্ছে।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান মহানগর ও মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতের অধীন আদালতগুলোতে সম্প্রতি বিচার নিষ্পত্তির হার বেড়েছে। বিশেষ করে মহানগর হাকিম আদালতে আগের তুলনায় অনেক বেশি মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে। তবে অধিকহারে নতুন মামলা আসায় আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা বাড়ছে। এ অবস্থায় আদালতের সংখ্যা বাড়ানো জরুরী বলেও মত দেন তারা।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা বাড়ছে। বিচারকের সংখ্যা কম হওয়ায় অনেক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, গত দশ বছরে চট্টগ্রামে লোক সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনি থানার সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু আদালত ও বিচারকের সংখ্যা সে অনুপাতে বাড়েনি। এতে করে বিচার নিষ্পত্তি প্রলম্বিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ কারণে বিচারপ্রার্থী মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। চট্টগ্রামে আদালত ও বিচারকের সংখ্যা বাড়াতে প্রধান বিচারপ্রতির কাছে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।