পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সৈয়দ শামীম শিরাজী, সিরাজগঞ্জ থেকে : সিরাজগঞ্জবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে বাংলাদেশ রেলওয়ে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপনও ইতিমধ্যে জারি করা হয়েছে। ট্রেনটি’র আসন সংখ্যা বৃদ্ধিসহ ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জ-ঢাকা চলাচলের অপ্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উল্লেখ করে সরাসরি সিরাজগঞ্জ বাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করবে। গত মঙ্গলবার জারিকৃত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আগামী ১৩ ডিসেম্বর থেকে ভোর ৬টায় সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন থেকে ছেড়ে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাবে সকাল ১০টায় সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস। আবার বিকেল ৫টায় ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে রাত ৯টা ১৫ মিনিটে সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশনে ফিরে আসবে।
জানা গেছে, নতুন সময়সূচি অনুযায়ী চলাচলকারী ট্রেনে ভারত থেকে আমদানী করা নতুন কোচ সংযুক্ত থাকবে। এতে আসন সংখ্যা থাকবে ১০৫৬টি। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন স্বাক্ষরিত ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) রফিকুল ইসলাম প্রেরিত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে আরো জানা যায়, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস প্রতিদিন সকাল ০৭টা ৪৫ মিনিটে ঈশ্বরদী স্টেশন ত্যাগ করে সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশনে পৌঁছে বেলা ০৯টা ৫০ মিনিটে। বেলা ১০টা ৪০ মিনিটে এই স্টেশন ত্যাগ করে দুপুর ০৩টা ১০মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে। বিকেল ০৫টায় ওই স্টেশন ত্যাগ করে রাত ০৯টা ২৫ মিনিটে সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশনে যাত্রী নামিয়ে ঈশ্বরদী পৌঁছে রাত ১২টায়। ঢাকা-জামতৈল-সিরাজগঞ্জ বাজার-জামতৈল-ঈশ্বরদী রুটে চলাচল করায় ঈশ্বরদী থেকে জামতৈল পর্যন্ত যাত্রীদের চলাচলে অতিরিক্ত প্রায় দুই ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। ফলে ঈশ্বরদী-জামতৈল সেকশনের যাত্রীগণ এই ট্রেনে ভ্রমণে অনাগ্রহী হয়ে পড়ে। অক্টোবর ২০১৬ মাসে ঈশ্বরদী-জামতৈল সেকশনে ৭৭৫ নম্বর ট্রেনে ১০২৭০ কোটার বিপরীতে মাত্র ১৪৩৬টি টিকেট (অকুপেন্সি ১৪%) ও ৭৭৬ নম্বর ট্রেনে ৭৮২৬ কোটার বিপরীতে ২২২টি টিকেট (অকুপেন্সি ৩%) বিক্রি হয়। যাত্রী চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও কেবল পিট এটেনশনের জন্য সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী পর্যন্ত পরিচালনা করতে হয়। কিন্তু সম্প্রতি বিজি ওয়াশপিট নির্মিত হওয়ায় সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসসহ অন্যান্য বিজি ট্রেনের পিট এটেনশন এখন থেকে ঢাকায় করা হবে। এজন্য সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঈশ্বরদী পর্যন্ত পরিচালনার আর কোন প্রয়োজন নেই। এ অবস্থায় সিরাজগঞ্জবাসীর আন্দোলন ও সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত), সদর-কামারখন্দ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত মুন্নার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও যোগাযোগের ফল হিসেবে প্রথমে চলতি বছরের ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা নতুন ভারতীয় বিজি কোচ দিয়ে সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন টু কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস চলাচলের অনুমতি প্রদান করেন। এরপর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আগামী ১৩ ডিসেম্বর থেকে ভোর ৬টায় সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন ত্যাগ করে জামতৈল রেলওয়ে স্টেশন হয়ে সকাল ১০টায় ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছবে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস। সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশনে ইঞ্জিন ঘুরানো ও কোচে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নির্মিত হলে ট্রেনটি ঢাকা-সিরাজগঞ্জ রুটে চলাচলের জন্য ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখ থেকে প্রস্তুত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে নতুন ভারতীয় কোচ ১০৫৬টি আসন দিয়ে সাজানো সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি আগামী ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হকের ‘ফ্লাগ অফ” এর মাধ্যমে উদ্বোধনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিরাজগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত), সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি জানান, দীর্ঘদিন পর সিরাজগঞ্জবাসীর আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে নতুন ও আধুনিক ভারতীয় কোচ সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন সরাসরি সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন থেকে জামতৈল হয়ে ঢাকা যাতায়াত করার মাধ্যমে। সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের সময় নিয়ে কিছুটা যাত্রী ভোগান্তির কথা স্বীকার করে মুন্না এমপি আরো বলেন, আশা করছি এখন যে সময় নির্ধারিত হয়েছে তাতে আর যাত্রীদের কোন সমস্যা হবে না। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে দু’দেশের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আলোচ্যসূচির এক নম্বরে রয়েছে সিরাজগঞ্জ থেকে সয়দাবাদ ও সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণ চুক্তির বিষয়টি। এদিকে এ বিষয়টি জানার পর সিরাজগঞ্জ স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক গাজী ডা. জহুরুল হক রাজা সিরাজগঞ্জবাসীর দাবি বাস্তবায়নে আন্তরিকতা ও নিরলসভাবে পরিশ্রম করার মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের নতুন কোচ সংযোজন, আসন বৃদ্ধি ও সময়সূচি পরিবর্তনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেই সাথে ভোর ৬টায় ছেড়ে যাওয়া ও বিকেল ৫টায় ফিরে আসার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন সিরাজগঞ্জবাসী। সিরাজগঞ্জ থেকে যাত্রীদের ঢাকায় যাওয়ার চরম দুর্ভোগের পরিসমাপ্তি ঘটবে বলে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।