বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাকাএভ) এর পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ঢাকাএভ, চকাএভ ও খুকাএভ-এই তিন অঞ্চলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। আজ বুধবার বাকাএভ এর ২৬১ সদস্যের নব গঠিত কমিটির দপ্তর সম্পাদক শিবলী নোমানী খান সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগে ২০০০ সালের ২০ নং আইনের মাধ্যমে ‘সী কাস্টমস’ এবং ‘ল্যান্ড কাস্টমস’ একীভূত করে মাঠপর্যায়ের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের আন্তঃকমিশনারেট বদলি প্রচলন হয়। ফলে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (ইন্সপেক্টর) ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের (সুপারিন্টেন্ডেন্ট) আঞ্চলিক সংগঠনসমূহ প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ে। কারণ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বাইরে বদলি হলে কমিটির সাংগঠনিক পদ শূন্যতা তৈরি হয়। অল্প সময়ের ব্যবধানে নিয়মিত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিত বদলির কারণে সৃষ্ট সাংগঠনিক পদশূন্যতা, শূন্য পদ পূরণে দীর্ঘসূত্রিতায় দাবি আদায় তো দূরের কথা সহকর্মীদের মানবিক বিষয় নিয়ে কাজ করাটাও দুরূহ হয়ে পড়ে।

আরো বলা হয়, তাছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটি বাকাএভ অঞ্চল কমিটি নির্ভর হওয়ায় অঞ্চলের পদ শূন্যতার কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনেও জটিলতা তৈরি হয়। ফলে দীর্ঘস্থায়ী সাংগঠনিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় এবং যৌক্তিক দাবি আদায় করার জন্য সাংগঠনিক উদ্যোগ গ্রহণ ব্যাহত হয়। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তিন অঞ্চলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা ও পর্যায়ক্রমিক বৈঠকের ফলস্বরূপ বাকাএভ আহবায়ক খন্দকার লুৎফল আজমের সভাপতিত্বে ও বাকাএভ সদস্য সচিব মো. মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে খন্দকার লুৎফল আজম কে সভাপতি, মো. মিজানুর রহমানকে কার্যকরী সভাপতি, মো. মাহবুব মোর্শেদকে মহাসচিব এবং মো. মজিবুর রহমানকে কার্যকরী মহাসচিব করে বাকাএভ কমিটি গঠিত হয় এবং এই ৪ সদস্যের কমিটিকে বাকাএভ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটি বাকাএভ এর সকল সদস্যদের প্রাণের দাবি অনুযায়ী তিনটি অঞ্চল কমিটি বিলুপ্ত করে একটি সমন্বিত বাকাএভ কমিটি গঠনের জন্য গত ২৩ জুলাই সভা আহবান করে। বাকাএভ সভাপতি খন্দকার লুৎফল আজমের সভাপতিত্বে ও বাকাএভ মহাসচিব মো. মাহবুব মোর্শেদ এর সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে অঞ্চল কমিটির বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয় এবং বিলুপ্ত তিনটি অঞ্চল বিবেচনায় নিয়ে সারা দেশের সহকর্মীদের মধ্য থেকে সাংগঠনিক দক্ষতা বিচার বিশ্লেষণ করে ২৬১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি দুই মাসের মধ্যে একটি যুগোপযোগী গঠনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য ১৭ সদস্য বিশিষ্ট গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটিও ঘোষণা করা হয়।

এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নেতৃবৃন্দ সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং বাংলাদেশ কাস্টমস ও ভ্যাট এর ঐতিহ্য বহনকারী ও বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ইন্সপেক্টর-সুপারিন্টেনডেন্ট পদবি পুনর্বহাল, ইন্সপেক্টর পদকে ৯ম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ অন্যান্য দাবি আদায়ে ঘোষিত কমিটির নেতৃত্বে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানানো হয়।

আরো বলা হয়, করোনাকালে আক্রান্ত শতাধিক কর্মকর্তা এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা করোনায় শহীদ হওয়া স্বত্বেও করোনা পরবর্তী সময়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের সুযোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে অপ্রতুল লজিস্টিক সাপোর্ট নিয়েও প্রথমবারের মতো এনবিআর তিন লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের মাইলফলক অতিক্রম করায় মাঠপর্যায়ের সবাই উজ্জীবিত। নেতৃবৃন্দ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার গর্বিত অংশীদার মাঠ পর্যায়ের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও রাজস্ব কর্মকর্তাদেরকে নিয়ে রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আজকের মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ থেকে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।