Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘আইএমএফ বললে কি দেশের মানুষকে কোরবানি দিবেন’

সরকারের প্রতি জিএম কাদেরের প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আইএমএফ বললে কি দেশের মানুষকে কোরবানি করবেন! আমার মনে হয় এ সরকার করবে, কারণ টাকার দরকার। গতকাল সোমবার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। তেলে দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ১০ আগস্ট দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল।
জিএম কাদের বলেন, নজিরবিহীন ভাবে জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়েছে। এটাকে আমরা বলেছি নির্দয় সিদ্ধান্ত। তেল এমন জিনিস এর দাম বাড়লে জনগণের হৃদয়ে আঘাত করতো। তেলের দাম যখন নিমড়বমূখী তখন হঠাৎ করে দাম বাড়াতে হলো। তিনি আরো বলেন, আমি এক সময় এ সেক্টরে কাজ করেছি। সে কারণে দায়িত্ব নিয়ে বলছি আমদানির পর সবখরচ ও ডিউটি যোগ করেও যা দাঁড়ায় তার চেয়েও বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। যখন কম ছিল, তখন লাভ করলেন, সেই টাকা গেলো কোথায়, লুটপাট হয়েছে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ডিজেলের দাম বাড়লে বাস মালিকরা হরতাল কল করেনা। তারা ঘোষণা ছাড়াই বাস বন্ধ করে দেয়। সরকার তাদের হাতে পায়ে ধরে নামান, কিছু পয়সা বাড়িয়ে। আপনারা টের পান না, জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পায়। সরকার নির্ধারিত টাকায় বাসে উঠতে পারে না, নামিয়ে দেওয়া হয়। জ্বালানি দাম বৃদ্ধি মানে সব জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি। জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি মানে আপনার বেতন অর্ধেক হয়ে গেছে। এই সময়ে তেলে দাম বৃদ্ধি মরার, উপর খাঁড়ার ঘা। রেন্টাল কুইক রেন্টালের নামে কিছু মানুষকে হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের লোককে দেওয়া হচ্ছে। মাসে ২ হাজার কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ছাড়াই দিতে হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকে সকাল সন্ধ্যা গালাগাল করলো, তাদের কাছে টাকার জন্য ধর্না দিচ্ছে। শুধু বিশ্ব ব্যাংক নয় জাইকাসহ অনেকের কাছে ছুটছে। আমি ছয়-সাত মাস আগে যখন বলেছি দেশ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছেন। তখন আমাকে বলা হলো আমি নাকি মুর্খ। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দুটি মিল রয়েছে সেখানেও শাসকের কোন জবাবদিহি নেই, মেগা প্রকল্পের বাড়তি খরচ। আমরা শ্রীলঙ্কার মতো স্বৈরশাসন চাই না, মেগা প্রকল্প চাই না। তিনি বলেন, সরকার বলছে, রিজার্ভ রয়েছে, কিন্তু আমরা দেখছি সরকার টাকার জন্য এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে। বড় বড় ভবন করা হচ্ছে, সেখানে ডাক্তার নেই, কেনো ভবন করলেন, ভবন করলে টুপাইস পাওয়া যায়। ধরে নিলাম রিজার্ভ রয়েছে, তাহলে ঋণের জন্য ছুটছেন কেনো, বলছে মেগা প্রকল্প করবে। কেনো মেগা প্রকল্প, এখানে টুপাইস মিলবে, বিদেশে পাচার করা যাবে যে কারণে তাদের মেগা প্রকল্পে আগ্রহ।
জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৮০ হাজার কোটির টাকা সুদ দিতে হয় ঋণের। এনবিআর রাজস্বের যে টার্গেড নিয়েছে, এটা না হলে বেতনভাতা দিতে পারবে না। ঋণ করতে হবে। আমরা জনগণের সরকার চাই, স্বাধীনতা ৫০ বছর পর বলতে হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্ত বৃথা গেছে। দেশে প্রজাতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র নেই, রাজার শাসন চলছে। এখন তন্ত্র মন্ত্র নিয়ে বেশি বলতে চাই না, বললে এখানেই কি হয় বলা যায় না। তোমাদের কি হয় বলতে পারি না। তোমরা বুঝে নাও কি তন্ত্র চলছে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুনড়বু এমপি, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা, ফকরুল ইমাম এমপি, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, আলমগীর সিকদার লোটন, আরিফ খান, আসিফ শাহরিয়ার, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহাজাদা প্রমূখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ