পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্তমান সরকারকে আর টিকতে দেয়া যায় না’ বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাবের কথা তুলে ধরে রোববার সকালে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কৃষক দলের সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের দেশে বাইক চালায় যারা, মোটর সাইকেল চালায় যারা, যারা তাদের পরিবারকে একটু পালে, বউ-বাচ্চার খরচ যোগায়- তারা এখন চোখে অন্ধকার দেখছে। চোখে অন্ধকার দেখছে আমাদের কৃষক ভাইয়েরা যে, ডিজেলের দাম বাড়লে কিভাবে সেচের কাজ করবেন? এটাতে সরকারের কোনো কিছু যায় আসে না। কারণ জনগণের তাদের দরকার নাই। তাদের আছে পুলিশ বাহিনী, বন্দুক বাহিনী, বিজিবি বাহিনী-এই বাহিনী দিয়ে সে দেশ চালাবে।”
‘‘ আমাদের স্পষ্ট কথা- আর হবে না। এদেশের মানুষ আর এভাবে দেশ চালাতে দেবে না। আমাদের রাজনীতিকে তারা ধবংস করেছে, আমাদের অর্থনীতিকে তারা ধবংস করেছে, আমাদের ভবিষ্যতকে তারা ধবংস করেছে। সুতরাং এই সরকারকে আর টিকতে দেয়া যায় না।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা সবাই সংঘবদ্ধ হচ্ছি, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। গতকাল আমি সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহবান জানিয়েছি- আসুন আর নিজেদের মধ্যে ছোট-খাটো বিভেদ সৃষ্টি না করে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৯৭১ সালের আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের যে আকাংখা ছিলো জনগনের একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা তৈরি করা এবং একটা সাম্য তৈরি করা সেটা করি।”
‘‘ সরকারকে বলব, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন এবং পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। সংসদ বিলুপ্ত করুন এবং একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে তার মাধ্যমে জনগনের পার্লামেন্টে জনগনের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে তারাই সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। এ্টাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র পথ, আর অন্য কোনো পথ নাই। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাই।”
‘সরকার মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘দেশে কিছু মানুষকে আপনারা ধনী থেকে আরো ধনী বানিয়েছেন। আর কিছু মানুষকে গরীব থেকে গরীবে নিয়ে গেছেন। বড় বড় বড়াই করেন, মিথ্যা তথ্য দেন। একটা তথ্যও তাদের সঠিক না। সমস্ত তথ্যগুলো হচ্ছে জনগনকে বিভ্রান্ত করবার জন্য।”
‘‘ আজকে জনগনকে আহবান জানাব, এদের তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে সত্যিকার যে বিষয়টা-আপনার নিজেকে প্রশ্ন করুন। তাহলে দেখবেন যে, চালের দাম কত বেড়েছে, তেলের দাম কত বেড়েছে, সবজীর দাম কত বেড়েছে, মাছের দাম কত বেড়েছে, গোসতের দাম কত বেড়েছে? তাহলে বুঝবেন এই দেশের অবস্থা কি?”
তিনি বলেন, ‘‘ পেট্রল-ডিজেল-অকটেন সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। গ্যাসের দাম বাড়িয়েছেন, পানির দাম বাড়িয়েছেন, সারের বাড়িয়েছেন। কোথায় যাবে মানুষ?”
‘‘ আপনাদের পকেটে বহু দুর্নীতির টাকা আছে, ঘুষের টাকা আছে। কিন্তু আমাদের পকেটে ভাই নিজের বেঁচে থাকার পয়সাটুকু শেষ হয়ে যাচ্ছে।”
গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষক দলকে সংগঠিত করার আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ গ্রামে গ্রামে সংগঠনকে সংগঠিত করুন। ইনশাল্লাহ জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে আমরা এখানে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।”
‘আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও দেশে কমে না’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে সারের দাম বাড়বে, যাতায়াত খরচ বেড়ে যাবে- সব কিছুর দাম বাড়বে। অর্থনীতিতে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং অর্থনীতি খারাপের দিকে যাবে? তেলের কেনো বাড়ালে? বলছেন যে, পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লোকসানে যাচ্ছে।লোকসানে কেনো যাবে? ৫ বছর তো এই প্রতিষ্ঠান লাভ করেছে প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম ছিলো। কিন্তু আপনারা কমাননি।”
‘‘ এখন কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে। আমাদের হাছান মাহমুদ(তথ্য মন্ত্রী) সাহেব বললেন, বিশ্বের সব দেশে নাকী তেলে দাম আমাদের চেয়ে বেশি। আমেরিকাতে ১৪ ডলার ছিলো, তেলের দাম কমানোর সঙ্গে সঙ্গে তা ৩ ডলারে পৌঁছেছে। অর্থাত আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমছে তখন তারাও কমায়, আমাদের দেশে- আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে তখন এখানে(বাংলাদেশে) তেলের দাম বাড়ানো হয়। কেনো? তারা যে লুটপাট করে, তারা যে চুরি করে, দুর্নীতি করে সেই টাকাকে হালাল করার জন্য জনগনের পকেট থেকে কেড়ে নিয়ে যায়। পয়সা আমরা দেই।”
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘‘ আমরা গত এক যুগ ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন উন্নয়ন শুনে আসছি। এই উন্নয়নটা কিসের উন্নয়ন? এই উন্নয়নটা হচ্ছে বাংলাদেশে ধর্ষনের জোয়ার, এটা কোনো উন্নয়নের জোয়ার না, বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতির জোয়ার, এটা কোনো উন্নয়নের জোয়ার না, বাংলাদেশে মানুষের অধিকার হরণের জোয়ার, কোনো উন্নয়নের জোয়ার না।”
‘‘ এটা হচ্ছে ব্যাংক লুটের জোয়ার, এই জোয়ারে বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকে আর কিছু অবশিষ্ট নাই। প্রত্যেকটা ব্যাংককে আওয়ামী লুটেরা বাহিনী ধবংস করে দিয়েছে- আপনারা সহসাই আস্তে আস্তে বুঝবেন। এই জোয়ার ডলারের অতিমূল্যায়ন এবং টাকার অবমূল্যায়ন। অতত্রব এই জোয়ারের বিরুদ্ধে আর প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
গত ৩১ জুলাই ভোলার সমাবেশে পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুর রহিম ও ছাত্র দলের নুরে আলমের মৃত্যু এবং জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কৃষক দলের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে সমাবেশটি শেষ হয় দুপুর ১টায়।
রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ছাড়াও ঢাকার আশ-পাশের জেলাগুলো থেকে কৃষক দলের নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ বুকে লাগিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে এই সমাবেশে অংশ নেয়। প্রখর রোদ্র উপেক্ষা করে কর্মীরা পলিথিনের মাদুরে বসে নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশি হামলা ও জ্বালানি তেল-সারের ম্ল্যূ বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানায়।
ভোলার ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তার অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিনের রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আমিনুল হকসহ কৃষক দলের নাসির হায়দার, জামাল উদ্দিন খান মিলন, মামুনুর রশিদ খান, এসএম ফয়সাল, খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, ভিপি ইব্রাহিম, সৈয়দ অলি উল্রাহ সিদ্দিকী, ওব্ইাদুর রহমান টিপু, মাহমুদা হাবিবা, মেহেদি হাসান পলাশসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।