Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ত্যাগ চাই মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশুলী ও বিজ্ঞনী আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত ইহকাল ও পরকাল যাবতীয় বিষয়ের সুষ্ঠু সমাধান আল কুরআনে সুবিন্যস্তরূপে তুলে ধরেছেন। সময় ও কালের হিসাব গণনার বিষয়টিও এর একটি অনুষঙ্গ। মহান আল্লাহ পাক আল কুরআনের ৯ নং সূরা তাওবাহ এর ৩৬ নং আয়াতে এতদ সম্পর্কে যে দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন, তা রোজ কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীবাসী মানুষকে হেদায়াত ও সুপথের দিশা দিতে থাকবে এর মাঝে কোনো ব্যতিক্রম হবে না।

আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন : “নিশ্চয়ই আসমানসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাসের সংখ্যা বারটি। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত ও অলংঘনীয়। এটা সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। সুতরাং মুশরিকদের সাথে তোমরা সমবেতভাবে যুদ্ধ করো, যেমন তারাও সমবেতভাবে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। আর মনে রেখ, আল্লাহ পাক মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।” (সূরা তাওবাহ : আয়াত ৯)।

এই আয়াতে কারীমায় সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহ পাকের কাছে মাসের সংখ্যা বারটি। এতে কম-বেশি করার ক্ষমতা কারো নেই। এই বিষয়টি রোজ আমলে অর্থাৎ সৃষ্টির প্রথম দিনেই লাওহে মাহফুজে লিখিত রয়েছে। তবে রোজে আমলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও মাসগুলো আগমন-নির্গমনের ধারাবাহিকতা নির্ধারিত হয় আসমান ও যমীনের সৃষ্টির পরবর্তী মুহূর্ত হতে। তন্মধ্যে চারটি মাস হলোÑ মর্যাদাবান, নিষিদ্ধ ও অলংঘনীয়। এ কারণে এই চার মাসে যুদ্ধবিগ্রহ ও রক্তপাত হারাম। যেহেতু এই চারটি মাস সম্মানিত ও বরকতময় তাই এতে ইবাদত-বন্দেগীর সওয়াব বহু গুণে বৃদ্ধি পায়। এ জন্য এই মাস চতুষ্টয়ে ইবাদতে যত্মবান হওয়ার হুকুমটি কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

আর হিজরি দশম সালে বিদায় হজের প্রাক্কালে মিনা প্রান্তরে প্রদত্ত খুতবায় পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) এই সম্মানিত মাসগুলো চিহ্নিত করে বলেছেন : এর তিনটি মাস ধারাবাহিক আসে। যথাÑ যিলকদ, যিলহজ্জ ও মুহাররাম এবং অপরটি হলো রজব। এই মাসগুলোর ধারাবাহিকতা নির্ধারণ ও সম্মানিত মাসগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট ইসলামী হুকুম আহকামকে সৃষ্টির প্রথম লগ্নের খোদায়ী নিয়ম শৃঙ্খলার সাথে সঙ্গতিশীল রাখাই হলো সুপ্রতিষ্ঠিত ইসলামী বিধান বা দ্বীনে মুস্তাকীম। এতে কোনো মানুষ বা সম্প্রদায়ের পরিবর্তন পরিবর্ধন করা বা কমবেশি করার প্রয়াশ চালানো অসুস্থ বিবেক বুদ্ধি ও ঘৃণ্য এবং মন্দ স্বভাবের আলামত, তা সহজেই অনুমান করা যায়। তাই, উল্লিখিত আয়াতে কারীমায় সংশ্লিষ্ট মাসগুলোর সম্মান বজায় রাখার প্রতি সকল মুমিন-মুসলমানদের সতর্ক করে বলা হয়েছে যে, তোমরা এই মাসগুলোতে প্রকৃত আদব রক্ষা না করে এবং ইবাদত-বন্দেগীর প্রতি উদাসীনতা প্রদর্শন করে নিজেদের প্রতি অবিচার করো না। এ প্রসঙ্গে ইমাম জাস্সাস (রহ.) বলেন : এই সতর্কবাণী থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, এ মাস চতুষ্টয়ে ইবাদত-বন্দেগী করার ফলে অবশিষ্ট মাসগুলোতেও অধিক হারে ইবাদতের তাওফিক ও সাহস বৃদ্ধি পায় এবং পাপাচার থেকে নিজেকে দূরে রাখা সহজতর হয়। এটাই মুত্তাকীনদের সহজতর স্বভাব। আর এ জন্যই আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ