পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্ববাজারে যখন ইউরিয়া সারের দাম কমছে; তখন হঠাৎ করে দেশে ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইনডেক্স মুন্ডির তথ্য মতে ইউরিয়া সারের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমে আসছে। গত এপ্রিল মাসে প্রতি টনের দাম ছিল ৯২৫ ডলার। যা জুন মাসে নেমে এসেছে ৬৯০ ডলারে। এতে কৃষক পর্যায়ে খাদ্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। হঠাৎ করে ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধি অনেক কৃষক বিপাকে পড়ে গেছেন। কারণ এক বিঘা জমিতে কমপক্ষ্যে ৪০ কেজি ইউরিয়ার প্রয়োজন পড়ে। এতে অনেক কৃষক প্রয়োজনীয় সার জমিতে দিতে পারবেন না। এতে উৎপাদন কমে আসবে। উৎপাদন করলে আমদানি নির্ভরতা বেড়ে যাবে।
হঠাৎ করে ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতি কেজিতে বাড়ানো হয়েছে ৬ টাকা। ইউরিয়া সারের এই দাম বাড়ায় চলতি আমন ও পরবর্তী বোরো মৌসুমে চাল উৎপাদনে কৃষকের ১৬০০ কোটি টাকা খরচ বাড়বে। কৃষি অর্থনীতিবিদরা এ তথ্য জানিয়েছেন। গত সোমবার থেকে ইউরিয়া সারের দাম বাড়ানো হয়। দেশে এখন প্রায় ৭৫ শতাংশ জমিতে ধানের আবাদ হয়। ফলে এই মূল্যবৃদ্ধির সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে চাল উৎপাদনে। কৃষকরা বলছেন, সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বাড়বে। পরবর্তীতে ধান চালের দামও বেড়ে যাবে। তবে এখন কৃষকদের হাতে টাকা নেই। দাম বৃদ্ধি করায় তারা বিপাকে পড়ে গেছেণ।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর তথ্য মতে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে চালের উৎপাদন হয়েছে প্রায় তিন কোটি ৫৮ লাখ টন। চলতি অর্থবছরে তা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে তিন কোটি ৬৩ লাখ টন হতে পারে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইউরিয়া সারের প্রয়োজন প্রায় ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন। কৃষক পর্যায়ে যদি এই পরিমাণ সারের ব্যবহার হয়, তাহলে মূল্যবৃদ্ধির ফলে কৃষকের বাড়তি খরচ হবে প্রায় এক হাজার ৫৯০ কোটি টাকা; প্রতি মণ ধানে যা প্রায় ১৬ টাকা। এ ছাড়া কৃষকের উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়া ছাড়াও সার্বিকভাবে দেশে চালের উৎপাদন কমে যেতে পারে। এর ফলে চালের আমদানিনির্ভরতা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।
সারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে কৃষকের খরচ বৃদ্ধি পাবে বলে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ব্রি)। আমনের তুলনায় বোরোতে সারের ব্যবহার তুলনামূলকভাবে বেশি। ফলে বোরো ধান উৎপাদনে কৃষকের তুলনামূলক বেশি খরচ হবে।
এ বিষয়ে কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিশ্বব্যাপী যখন সারের দাম কমার দিকে, তখন দেশে সারের দাম বাড়ানো মোটেও যৌক্তিক হয়নি। সারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চলতি আমন ও আগামী বোরো মৌসুমে ধানের উৎপাদন কমতে পারে। আমন মৌসুমে বন্যার পর এখন তীব্র খরার কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। এরপর সারের মূল্যবৃদ্ধি মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। কৃষক নিরুৎসাহ হয়ে আগামী বোরো মৌসুমে আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন। ফলে দুই মৌসুমে উৎপাদন কমার কারণে খাদ্যঘাটতিতে পড়তে পারে দেশ। এতে বাড়তে পারে আমদানি নির্ভরতা।
গত সোমবার কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দাম ১৬ টাকা থেকে ৩৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে ২২ টাকা করা হয়েছে। ডিলার পর্যায়ে ১৪ টাকা থেকে ৪২.৮ শতাংশ বৃদ্ধি করে ২০ টাকা করা হয়েছে। অন্যান্য সারের দাম অপরিবর্তিত রেখে ইউরিয়া সারের দাম ডিলার ও কৃষক পর্যায়ে ছয় টাকা বাড়ানো হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ডিএপি সারে শতকরা ১৮ ভাগ নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের উপাদান রয়েছে। সে জন্য ডিএপির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য সরকার ডিএপি সারের মূল্য প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করে কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে বিগত কয়েক বছরে ডিএপি সারের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে ডিএপি ব্যবহার হতো ৮ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ১৬ লাখ টন। ইউরিয়া সারের দাম বাড়ালে কৃষক পর্যায়ে ডিএপি সারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। ফলে কৃষক পর্যায়ে খুব বেশি খরচ বাড়বে না। আমন মৌসুম (জুলাই- সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, বিপরীতে বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৭ লাখ ২৭ হাজার টন, যা প্রয়োজনের চেয়ে প্রায় এক লাখ টন বেশি।
অবশ্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, সারের দাম বাড়াতে উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বে না। কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।