পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
পণ্য রফতানি বাণিজ্যে নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম মাস, জুলাইয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে জুলাইয়ের রফতানি। গত মাসে বাংলাদেশ ৩৯৮ কোটি মার্কিন ডলারের সমমূল্যের পণ্য রফতানি করেছে। যারমধ্যে পোশাক খাতের রফতানি হয়েছে ৩৩৬ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের। এ হিসেবে মোট রফতানির ৮৪ দশমিক ৪৯ শতাংশই পোশাক পণ্য। এ পণ্যটির রফতানি গত অর্থবছরের জুলাই মাসের তুলনায় ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ইপিবি এই হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে বাংলাদেশ ৩৯৮ কোটি মার্কিন ডলারের সমমূল্যের পণ্য রফতানি করেছে। ২০২১ সালের জুলাই মাসে এ রফতানির পরিমাণ ছিল ৩৪৭ কোটি ডলার। এ ক্ষেত্রে আগের বছরের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত জুলাইয়ে সরকারের পক্ষ থেকে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৯২ কোটি ডলার। সেই হিসাবে দেখা যাচ্ছে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৬ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রফতানি হয়েছে। তবে জুনের তুলনায় জুলাইয়ে রফতানি প্রায় ১০০ কোটি ডলার কমে গেছে। গত জুনে বাংলাদেশ ৪৯১ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছিল। জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯৮ কোটি ডলারে।
রফতানিকারকেরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে, তাতে উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় উঠে যাচ্ছে। এতে সেসব দেশের মানুষের জীবনযাত্রার খরচ অনেক বেড়ে গেছে। বাড়তি খরচ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। এতে ওই সব দেশে নিত্যপণ্যের বাইরে অন্যান্য পণ্যের বিক্রি কমে গেছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানির বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো। সেখানে বিক্রি কমলে তার প্রভাবও এ দেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের ওপর পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।
জুলাইয়ের রফতানি তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, মাসটিতে নিট ও ওভেন মিলিয়ে ৩৩৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। গত বছরের জুলাইয়ে ২৮৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছিল। তবে সদ্য বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে পোশাক খাতে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় সাড়ে ৩৫ শতাংশ। বিগত অর্থবছরের জুলাই মাসের তুলনায় চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাইতে রফতানি ১৪ দশমিক ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বিষয়ে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির এই কঠিন সময়ে যেখানে আমাদের অর্থনীতি আমদানিকৃত মুদ্রাস্ফীতির মুখোমুখি, ইউরো মার্কিন ডলারের বিপরীতে কমছে। আমদানি ব্যয় বাড়ছে। এই অবস্থায় জুলাই মাসে রফতানি আয় বেড়েছে এটা আমাদের জন্য পজিটিভ।
প্রসঙ্গত, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ৫০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক পেরিয়ে ৫২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি করেছে বাংলাদেশ। সমাপ্ত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৩৭ দশমিক ১৯ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।