Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমলো ৩৫ টাকা

ডিএফের বিষয়ে বিইআরসি আইনি উদ্যোগ নেবে : বিইআরসির চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

 জুলাই মাসে দাম কিছুটা বৃদ্ধির পর চলতি আগস্ট মাসে কিছুটা কমেছে এলপিজির দাম। প্রতি কেজিতে কমলো ৩ টাকা। এই হিসাবে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম কমলো ৩৫ টাকা। একইভাবে দাম কমেছে অটোগ্যাসেরও। রান্নার কাজে বহুল ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের ১২ কেজির দাম ১২১৯ টাকা এবং যানবাহনে ব্যবহৃত অটোগ্যাস লিটার প্রতি ৫৬.৮৫ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। নতুন দর গতকাল সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে কার্যকর করা হয়েছে। টানা কয়েকমাস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর মে মাসে থেকে কমতে থাকে এলপি গ্যাসের দাম। মে মাসে এলপি গ্যাসের দর ছিল (১২ কেজি) ১৩৩৫ টাকা, অটোগ্যাস লিটার প্রতি ৬২.২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন দর ঘোষণা করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, এলএনজি আমদানির জন্য গ্যাস উন্নয়ন তহবিল (জিডিএফ) থেকে পেট্রোবাংলাকে কোন অর্থ দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অবহিত নয়। আইনি ও নীতিগতভাবে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্যাস উন্নয়ন তহবিল, এনার্জি নিরাপত্তা তহবিল ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিলের যথাযথ ব্যবহারের জন্য কমিশন সচেষ্ট রয়েছে। এনার্জি নিরাপত্তা ফান্ডের বিষয়ে নীতিমালা করেছে বিইআরসি, আর গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের নীতিমালা করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের নীতিমালা করার কথা ছিল বিইআরসির। আপাতত এ বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কথা বলতে চাচ্ছি না।
তহবিল তিনটি বিইআরসির বিভিন্ন অর্ডারের মাধ্যমে গঠিত হয়। বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিলের সঙ্গে এসব খাতে ভোক্তাদের থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ নেওয়া হচ্ছে। তহবিল গঠনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল, তহবিল সংকটের কারণে অনেক সময় ভালো ভালো প্রকল্প নেওয়া যায় না। বিদেশি অর্থায়নের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। বিদেশি ঋণ পেলেও তাতে নানান শর্তযুক্ত থাকে। এসব তহবিলের টাকায় এমন সব প্রকল্প নেওয়া হবে যাতে, সাশ্রয়ী দর নিশ্চিত করা যায়। ইদানিং এই তহবিলের অনেক অপব্যবহারের অভিযোগ উঠছে। সর্বশেষ অর্থমন্ত্রণালয় এক চিঠিতে এলএনজি আমদানির জন্য ২ হাজার কোটি টাকা ছাড় করার নির্দেশ দিয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বাড়ন্ত এলপি গ্যাসের দর এপ্রিলে (১২ কেজি) গিয়ে দাঁড়ায় ১৪৩৯ টাকায়। সা¤প্রতিক বছরগুলোর সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় এ বছর। এপ্রিল মাসে (সৌদি আরামকো) সর্বোচ্চ দর ওঠে প্রপেন ৯৪০, বিউটেন ৯৬০ ডলার। ২০১৪ সালের পর আর কখনও এতো বেশি দরে বেচাকেনা হয়নি। বাংলাদেশে রান্নার কাজে বহুল ব্যবহৃত জ্বালানি পণ্যটি। মে মাসে কমে যথাক্রমে টন প্রতি দাম দাঁড়ায় ৮৫০ ও ৮৬০ ডলারে। চলতি মাসে গড়মূল্য ৬৬৩.৫০ ডলারে নেমে এসেছে। তবে ডলার ঊর্ধ্বমুখী দরের কারণে সেভাবে সুবিধা পাচ্ছেন না ভোক্তারা। সাংবাদিক সম্মেলনে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, কেউ বেশি দাম চাইলে ভোক্তা অধিদফতরে অভিযোগ দিন, অথবা আমাদেরকে জানান। অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ভোক্তা অধিদফতর বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করেছে।
গত বছরের ১২ এপ্রিলের আগে পর্যন্ত এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন বলা হয়েছিল আমদানি নির্ভর এই জ্বালানির সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে ভিত্তি মূল্য ধরা হবে। সৌদির দর উঠানামা করলে ভিত্তিমূল্য উঠানামা করবে। অন্যান্য কমিশন অরপরিবর্তিত থাকবে। ঘোষণার পর থেকে প্রতিমাসে এলপিজির দর ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি।
অপর এক প্রশ্নে জবাবে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চুক্তি অনুমোদন করে রেগুলেটরি অথরিটি, বাংলাদেশে চুক্তিগুলো বিইআরসি অনুমোদন করে না। বিইআরসি যখন অন্যান্য দেশের মতো চুক্তি অনুমোদন করবে তখন অনেক প্রশ্নের সমাধান পাওয়া যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, এলপিজির আমদানিকারকরা অনেকেই দাম বৃদ্ধির আবেদন করেছে। এলসির ভিত্তিতে ডলারের দর নির্ধারণ ও ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে। তা সমন্বয়ের আবেদন এসেছে। কমিশনের বৈঠকে তোলা হবে, সেখানে যদি গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে গণশুনানি করা হবে। ডলারের দর নিয়ে আমদানিকারকদের আপত্তি প্রশ্নে বিইআরসির সদস্য (অর্থ) আবু ফারুক বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে শেষ করিনি। আমি নিজে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার ডিজিএম’র সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছেন, গাইডলাইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক দর বেঁধে দিতে পারেন না। দর চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে। আমি কোন কোন ব্যাংকের নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, যে দামে কিনেছেন সেই দামেই বিক্রি করা হচ্ছে। কোন কমিশন ধরেন নি, কমিশন যোগ করলে দর আরও বেড়ে যেতো। স্পর্ট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির কথা বলে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন যেহেতু স্পর্ট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ। তাই গ্যাসের দাম কমানো হবে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনের সদস্য মকবুল ই- এলাহী চৌধুরী বলেন, স্পর্ট মার্কেট থেকে ক্রয় বন্ধের কথা আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে শুনেছি, একমাসও হয়নি। কিছুদিন যাক তারপর দেখা যাবে যে কথা বলে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে নিয়েছে, সেখানে মিল অমিল কতটুকু।
##

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ