Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৭ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ সফর ১৪৪৬ হিজরী

ব্যর্থ সরকার লাঠির জোরে ক্ষমতায় থাকতে চায়

বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা ও প্রতিবাদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

সারাদেশে তীব্র লোডশেডিং ও জ্বালানিখাতে অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ভোলায় বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক হামলা ও আব্দুর রহিম নামে একজন নেতা নিহত ও অনেক আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন। গতকাল সোমবার পৃথক বিবৃতিতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে লাঠির জোড়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়। ভোলার ঘটনা সরকারের অমানবিক-দুঃশাসনেরই বহিঃপ্রকাশ।
ইউট্যাব: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠনের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো: মোর্শেদ হাসান খান গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, সভা-সমাবেশ করা প্রত্যেকটি নাগরিকের সংবিধান স্বীকৃত অধিকার। কিন্তু রোববার ভোলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে হামলা ও গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রকৃতপক্ষে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। এতে প্রমাণিত হয় সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে। লাখো শহিদের রক্ত ও ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্র আজ আওয়ামী দু:শাসনে পরাজিত। এখানে মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে ও অনিয়মের প্রতিবাদ করতে পারেনা। কেউ ভিন্নমত পোষণ করলেই তার ওপর নেমে আসে পাশবিক নির্যাতন। যা অতীতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী করতো। ইউট্যাবের নেতৃদ্বয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ফ্যাসিবাদী সরকারের বেআইনি নির্দেশ পালনে বিরত থাকা এবং প্রশাসনকে জনগণের সাথে পেশাদার আচরণের মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। এর ব্যত্যয় ঘটলে জনগণই সমুচিত জবাব দিবে।
স্বেচ্ছাসেবক দল: বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ভোলায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ বেপরোয়া হামলা চালায়। এতে পুলিশের গুলিতে দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব প্রার্থী আব্দুর রহিম নিহত হয়। আহত হয়েছেন শতাধিক নেতাকর্মী। এদের মধ্যে ৪/৫ জনের অবস্থা আশংকাজনক। এছাড়া কর্মসূচি পালনকালে কুষ্টিয়ায় সোহানুর রহমান লিংকনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নেতৃবৃন্দ পুলিশের এধরনের ন্যাক্কারজনক ও অমানবিক কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। নিহত আব্দুর রহিমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ ও রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকার্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। আহত নেতাকর্মীদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
নাগরিক ঐক্য: ভোলায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে ১ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহতের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ এবং নিন্দা জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, অবৈধ দখলদার সরকার জোরপূর্বক ক্ষমতায় থাকতে জনগণের ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ কর্মসূচিতে গুলিবর্ষণ করছে। কিন্তু জনগণ ফুঁসে উঠেছে, সরকারের পতন ঘন্টা বেজে গেছে। গুলির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। পালানোর পথ খুঁজেও লাভ হবে না। প্রতিটি গুলির হিসাব নেয়া হবে।
এনপিপি: ভোলার ঘটনা সরকারের অমানবিক-দুঃশাসনেরই বহিঃপ্রকাশ মন্তব্য ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা এক বিবৃতিতে বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের পতন আঁচ করতে পেরে মরণ কামড় দিচ্ছে। মূলত: এই সরকার মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা তথা জনগণের দুশমন। ভোলা ও ঝালকাঠি সহ দেশের কয়েকটি স্থানে পুলিশের হামলা এবং ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিমকে হত্যাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।
কল্যাণ পার্টি: ভোলায় বিএনপির মিছিলে পুলিশের গুলিতে একজনের মৃত্যু ও অনেক নেতাকর্মী আহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক বলেন, জ্বালানি তেল ও বিদ্যুৎ সঙ্কটে সাধারণ মানুষের অবস্থা শোচনীয়। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে সরকার ব্যর্থ। অসহিষ্ণু সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথাই বলতে দিচ্ছে না। রাজনৈতিক দলের মিছিলে পুলিশের নির্বিচার গুলি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের আক্রমণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
ডেমোক্র্যাটিক লীগ: এছাড়া ভোলায় বিএনপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি বলেন, জনগণের স্বতস্ফূর্ত আন্দোলনের ভয়েই ভোলায় গুলি। জনগণ আন্দোলনে নামলে এই স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারবে না। সকল স্বৈরশাসকই পতনের আগে এ ধরণের আগ্রাসী আচরণ করে। এই অবৈধ ভোটারবিহীন সরকারের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। যে কারণে নিরস্ত্র মানুষের সমাবেশেও গুলি চালাতে তারা দ্বিধাবোধ করছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ