Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা নির্যাতনের নিন্দা এবং স্বচ্ছ তদন্ত চায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জের

ডিক্যাব টকে বার্নিকাট

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:১৫ এএম

বার্মার (মিয়ানমার) আরাকান (রাখাইন) রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বর্বর নির্যাতনের নিন্দা জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপের প্রসংশা করে সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশসহ সমমনা সব দেশের সঙ্গে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী বলেও জানান তিনি। এছাড়া এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দেখতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন বাংলাদেশ সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জের হবে। গতকাল সোমবার বিকালে তিনি ধানমন্ডির ইএমকে সেন্টারে ডিক্যাবের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ডিক্যাব সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পান্থ রহমান। এতে কূটনৈতিক রিপোর্টাররা ছাড়াও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বার্নিকাট বলেন, রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক সেনা অভিযানের পর সেখানে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। তাই সেখানে কী ঘটছে, তা আমরা জানি না। তিনি রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি স্বাধীন, পূর্ণাঙ্গ, স্বচ্ছ ও আনুষ্ঠানিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলেও জানান। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ওই এলাকায় মানবিক ত্রাণকর্মীদের প্রবেশাধিকার নির্বিঘœ করতে তাগিদ দেন তিনি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এনিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান তিনি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, মায়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে বাংলাদেশের আহ্বান ইতিবাচক। বাংলাদেশ সরকার খুব সতর্কতা ও দক্ষতার সঙ্গে এসব বিষয়ে কাজ করছে। তবে রোহিঙ্গাদের সাম্প্রতিক সমস্যা যুক্তরাষ্ট্রকে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। তাই সমস্যাটির সমাধানে বাংলাদেশসহ সমমনা সব দেশকে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে গত সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদেরকে এক ব্রিফিং-এ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের ওপর চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চান।
বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে জানতে চাইলে মার্শা বার্নিকাট বলেন, আমাদের প্রত্যাশা থাকবে বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন কমিশনটি একটি নিরপেক্ষ, শক্তিশালী, স্বাধীন ও দল নিরপেক্ষ হবে; যা একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে। তবে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জের হবে।  
মার্কিন দূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আমাকে জানিয়েছেন, তারা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেখতে চান না। যুক্তরাষ্ট্র চায় পরবর্তী সংসদ নির্বাচন এমন হবে যেখানে প্রত্যেক ভোটার নির্বিঘেœ ভোট প্রদান করতে পারবে এবং তাদের প্রতিটি ভোট গণনা হবে।
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধের বিষয়ে বার্নিকাট বলেন, বিনা বিচারে জঙ্গিহত্যা বিশেষ ক্ষেত্রে হতে পারে, সবক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়মুক্তি দেয়ার সুযোগ নেই।
গুলশানের কূটনৈতিক জোনের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, অনেক চেকপোস্ট এবং নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু আমরা ঢাকায় দেখেছি যে, অভিজাত এলাকার কিছু তরুণ সন্ত্রাসবাদে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। এসমস্যার মূলোৎপাটন জরুরী।
অভিবাসী প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, কেবল ধর্মের ভিত্তিতে অভিবাসীদের বের করে দেয়ার সুযোগ যুক্তরাষ্ট্রের আইনে নেই। বৈধ অভিবাসীদের কোনো সমস্যা হবে না বলেও জানান তিনি। বার্নিকাট আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রেও বৈষম্যমূলক ঘটনা ঘটে। তবে তা বেআইনী।
এছাড়াও মার্কিন রাষ্ট্রদূত সমসাময়িক প্রসঙ্গ, নবনির্বাচিত মার্কিন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান কার্যক্রম, আসন্ন টিকফা ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বৈঠক নিয়ে কথা বলেন।
২০১৭ সালকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও বাড়ানোর সুযোগের বছর হিসেবে উল্লেখ করে মার্কিন দূত বলেন, এই বছরে নবগঠিত সরকার আসবে। সেখানে নতুন প্রশাসন আসবে। কিন্তু বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে মোটাদাগে কোনো পরিবর্তন আসবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ