Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোটার নয় তবুও দলীয় মনোনয়ন বাদ পড়ছেন এম আবু ওসমান চৌধুরী

হাবিবুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নির্বাচনী এলাকার ভোটার নয় তবুও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম নেতা মুক্তিযোদ্ধা এম আবু ওসমান চৌধুরী। নিজ নির্বাচনী এলাকার ভোটার না হওয়ায় চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে পারছেন না।
যে কোনো সময়  মুক্তিযোদ্ধা এম আবু ওসমান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে জানা  গেছে। অপরদিকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ।
গতকাল রবিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান ইনকিলাবকে বলেন, এম আবু ওসমান চৌধুরীসহ অন্তত তিনজন ভোটার স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেছেন। ভোটকে সামনে রেখে তফসিল ঘোষণার পর এ ধরনের ঠিকানা স্থানান্তরের আবেদন আমলে নিচ্ছে না কমিশন। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা নিজ এলাকার ভোটার না হওয়ায় প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম  নেতা মুক্তিযোদ্ধা এম আবু ওসমান চৌধুরী রাজধানীর ধানমন্ডির ভোটার। চাঁদপুরের ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য কমিশনে আবেদন করেছেন বলে পরিবারের একজন সদস্য জানান। তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা আজ/কালের মধ্যে জানাবেন।
কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, তিন পার্বত্য জেলা বাদ দিয়ে বাকি ৬১ জেলায় প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে ভোট হচ্ছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে। বাছাই ৩ ও ৪ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১১ ডিসেম্বর। ভোট হবে ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত। নির্দলীয় এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ৬১ জেলায় একক প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করে তালিকাও প্রকাশ করেছে। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশের যে কোনো ভোটার জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারলেও ভোট দিতে পারবেন না। আর জনপ্রতিনিধিরা ভোটার হলেও প্রার্থী হতে পারবেন না। সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন হলেও  জেলা পরিষদ আইনে প্রত্যক্ষ ভোটের বিধান নেই।
প্রত্যেক জেলার অন্তর্ভুক্ত সিটি করপোরেশনের (যদি থাকে) মেয়র ও কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এবং ইউপির  চেয়ারম্যান ও সদস্য জেলার পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার হবেন। তাদের ভোটেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত হবেন। এ হিসেবে স্থানীয় সরকারের চার ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬৭ হাজার নির্বাচিত প্রতিনিধি এ নির্বাচনে ভোট দেবেন।
ইসির উপ সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান,  স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদের ভোটার হতে হবে। ২০ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোটার স্থানান্তরও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ৬১ জেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত পরিষদের প্রশাসকও রয়েছেন। নির্বাচনে অংশ নিতে তাদেরও পদ ছাড়তে হবে। প্রার্থী হলেই পুরো জেলার  ভোটার তালিকা কেনা নিয়ে  ক্ষোভ জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের পুরো জেলার ভোটার তালিকা কিনতে হওয়ায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইসির একজন উপ-সচিব ইনকিলাবকে জানান, প্রার্থী, ভোটার, এজেন্টরা নির্বাচনী এলাকার ভোটার কিনা তা যাচাইয়ে ভোটার তালিকার সিডি সংগ্রহ করতেই হবে প্রার্থীকে। সংসদ থেকে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে  ভোটার তালিকা সিডি কেনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর ব্যত্যয়ের সুযোগ নেই।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার চেয়াম্যান পনির উদ্দিন জেলা পরিষদের প্রার্থী হতে ইচ্ছুক আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী বলেন, আমি পদত্যাগ পত্র সচিব বরাবরে জমা দিয়েছি। ভোটার তালিকা সিডি কিনতে ৫৪ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে মনোনয়ন ক্রয় করেছি। ১ ডিসেম্বর আমি জমা দিব। গাইবান্ধার জেলা পরিষদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক জাসদের খাদিমুল ইসলাম খুদি জানান, জেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্র সংগ্রহে গেলে কর্মকর্তারা জানান ভোটার তালিকা সিডি কিনতে ৫৪ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হবে। সেই সঙ্গে জামানত ২০ হাজার টাকা।  নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা ভোট দিতে পারছেন না। ভোট দেবে প্রতি জেলার সহস্্রাধিক জনপ্রতিনিধি, যারা এ নির্বাচনে ভোটার। তাহলে কেন আমাকে পুরো জেলার ভোটার তালিকা অর্ধ লাখ টাকা দিয়ে কিনতে হবে? আমি এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা ভাবছি বলেন তিনি। সেক্ষেত্রে ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলার পরিষদে  চেয়ারম্যান প্রার্থীকে লাখ টাকা ভোটার সিডি কিনতে হচ্ছে। সদস্য পদের জন্য ওয়ার্ড অনুপাতে ৫০০ টাকা করে সিডি কিনতে হবে।
চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উল্লেখ করে ইনকিলাবকে বলেন, এ জেলায় ভোটার সিডি কিনতে ৮২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। জামানতের আরও ২০ হাজার টাকা। চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনী ব্যয়সীমা ৫ লাখ টাকার মধ্যে এ ব্যয় দেখানো হবে। এ এলাকায় আবু ওসমান চৌধুরী  জেলার  ভোটার না হওয়ায় প্রার্থী হতে পারছেন না। উনি দলীয় মনোনয়নও পেয়েছিলেন। আমি জেলা কমান্ডার হওয়ায় দলীয় কোনো পদে নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ