Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ৮১ লাখ টাকার ভর্তুকি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : মাদারীপুরের চারটি উপজেলার সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ৮২ লাখ টাকার পুনর্বাসন ও প্রণোদনা প্রকল্পে কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন ও কৃষি উপকরণ ক্রয় ও বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তালিকায় থাকা কৃষকদের অনেকই জানেন না, সরকার তাদের কৃষি ফসল বন্যাকবলিত হওয়ায় পুনর্বাসন ও প্রণোদনা উপকরণ দিচ্ছে। এমন কী যেসব উপজেলায় চলতি বছর বন্যা হয়নি, সেসব উপজেলাতেও কৃষকদের একটি তালিকা তৈরি করে তাদেরকে কাগজে-কলমে উপকরণ বিতরণ দেখানো হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, যেসব বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকদের এই উপকরণ দেয়া হয়েছে, তাদের তালিকাগুলো ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানরা তাদের পছন্দমত কৃষকের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ফলে কোথাও কোথাও প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বঞ্চিত হয়েছেন। কৃষকরা বলছেন, অনেক কৃষকের নাম দিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন কর্মকর্তারা। তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এই প্রকল্পের অধীনে সমস্ত টাকারই উপকরণ ক্রয় কমিটির মাধ্যমে ক্রয় করে তা বিতরণ করা হয়েছে।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের চাষী আবুল বেপারী বলেন, আমাগো ইউনিয়নে তো এই বছর বন্যা অয় নাই। তয় এই ইউনিয়নের কৃষকদের সরকার ভর্তুকি দেবে কেন? দিলেও আমিতো পাই নাই।’Ñ ভিন্ন ধরনের কথা বললেন চরজানাজাত ইউনিয়নের আবদুল করিম। তিনি বললেন, ‘আমাগো মেম্বাররে তো আমরা ভোট দেই নাই। এই অভিযোগ নিয়ে সে আমাগো নাম লিস্টে তে উঠায় নাই। তয় হুনছি, চেয়ারম্যান বলছে, আমাগোও নাকি সরকার ভর্তুকি দেবে।’ Ñএভাবেই কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ায় সরকারি ভর্তুকি প্রদান ও তালিকা প্রণয়নে অনিয়ম পাওয়া গেছে।
মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার শিবচর, মাদারীপুর সদর, রাজৈর ও কালকিনি উপজেলায় ২০১৬-২০১৭ সালের প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ৮১ লাখ ৭৮ হাজার ৯শ’ টাকা সরকারের ভর্তুকি হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ করা হয়। যার মধ্যে মাদারীপুর সদরে ২৩ লাখ ৫৮ হাজার ৮ শ ১০ টাকা, রাজৈরে ১৯ লাখ ১২ হাজার ৪৯০ টাকা, শিবচরে ১৩ লাখ ৮ হাজার ৮৫ টাকা এবং কালকিনি উপজেলায় ২৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫শ’ ১৫ টাকা বরাদ্দ করা হয়। পুরো জেলায় এই বরাদ্দের বিপরীতে রোপা আমন ধান চাষী ১০৩ জন, শাক-সবজির বীজ বিতরণ ৫০০ জন, গম বীজ ও সার বিতরণ ৩ হাজার জন, ভুট্টা বীজ ও সার বিতরণ ১০০ জন, সরিষা বীজ ও সার বিতরণ ৩ হাজার ৫০০ জন, চীনা বাদাম বীজ ও সার বিতরণ ১০০ জন, গ্রীষ্মকালীন অন্যান্য বীজ ও সার বিতরণ ১ হাজার জন কৃষক।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও পুনর্বাসন ও প্রণোদনা প্রদান কমিটির সদস্য সচিব আবদুল কাদের বলেন, এই প্রকল্পে উপকরণ ক্রয়ে কোনো ধরনের অনিয়মের আশ্রয় গ্রহণ করা হয়নি। ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বাররা যদি স্বজনপ্রীতি কিংবা রাজনৈতিকভাবে পছন্দের কৃষকদের তালিকা দেন, তাহলে আমরা কী করতে পারি। আমাদের তো করার কিছু নেই।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ