Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভারতের নতুন প্রেসিডেন্ট আদিবাসী নারী দ্রৌপদী মুর্মু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ভারতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন সাঁওতাল নারী দ্রৌপদী মুর্মু। ভোটের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা না হলেও নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভোটের বেশি তিনি পেয়ে গেছেন। বিজেপির পছন্দের প্রার্থী দ্রৌপদীই প্রথম কোনো আদিবাসী নারী যিনি ভারতের প্রেসিডেন্টর দায়িত্ব পালন করতে চলেছেন। ভারত পাচ্ছে তাদের দ্বিতীয় নারী প্রেসিডেন্ট। দ্রৌপদী ভারতের পঞ্চদশ প্রেসিডেন্ট হিসেবে আগামী ২৫ জুলাই শপথ নেবেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ ওইদিন শেষ হবে।
সাবেক শিক্ষক ৬৪ বছর বয়সের দ্রৌপদী ওড়িশার মেয়ে। গত কয়েক দশক ধরে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ঝাড়খÐের প্রাদেশিক গভর্নর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভারতে প্রেসিডেন্ট পদটি অনেকটা অলঙ্কারিক। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ হলেও দেশ পরিচালনায় প্রেসিডেন্টের তেমন কোনো ভ‚মিকা নেই। পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের (লোকসভা এবং রাজ্যসভা) সদস্য, দেশটির সবগুলো রাজ্যের বিধানসভার সদস্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর প্রতিনিধিদের ভোটে ভারতে একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এরইমধ্যে দ্রৌপদী মুর্মুরের সঙ্গে দেখা করে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে গত সোমবার। গতকাল সকালে ভোট গণনা শুরু হয়। তৃতীয় রাউন্ডের ভোট গণনা শেষেই দেখা যায় দ্রৌপদী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে গেছেন। তৃতীয় রাউন্ড শেষে দ্রৌপদীর মোট ভোট পাঁচ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৭টি। জয়ী হতে তার প্রয়োজন ছিল পাঁচ লাখ ৪০ হাজার ৯৯৬ ভোট। সব ভোট গণনা শেষে দ্রৌপদীকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এনডিটিভি। নিজেদের প্রার্থীর বিজয়ে দেশজুড়ে উৎসব শুরু করেছেন বিজেপি নেতাকর্মীরা।
দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে প্রথম গণমাধ্যমে হইচই হয়েছিল ২০১৭ সালে। সেবার গুঞ্জন রটেছিল, বিজেপি তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তার নাম বিবেচনা করছে। তিনি ওই সময় ঝাড়খÐ রাজ্যের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ১৯৫৮ সালের ২০ জুন ময়ুরভাঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এবং বৃহৎ আদিবাসী গোষ্ঠী সাঁওতাল স¤প্রদায়ের মেয়ে।
একটি গ্রামের গ্রাম প্রধানের মেয়ে দ্রৌপদী রাজ্যের রাজধানী ভ‚বনেশ্বরের রামাদেবী উইমেন্স কলেজে লেখাপড়া করেছেন। ওড়িশা রাজ্য সরকারের একজন কেরানি হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যের কৃষি ও জ্বালানি অধিদপ্তরে একজন জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করেছেন।
১৯৯৪-৯৭ সাল পর্যন্ত রাইরংপুরে শ্রী অরবিন্দ ইনটেগরাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। দ্রৌপদীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। সেবার তিনি রাইরংপুরে স্থানীয় নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। বিজেপি’র হয়ে রাইরংপুর আসন থেকে তিনি ২০০০ ও ২০০৯ সালে দুইবার বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০০-২০০৪ সালে তিনি রাজ্যের জোট সরকারের একজন মন্ত্রীও ছিলেন।
প্রথমে বাণিজ্য ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করলেও পরে তিনি মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয় সামলান। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্য বিজেপি’র ‘পিছিয়ে পড়া আদিবাসী’ শাখার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ঝাড়খÐ রাজ্যের প্রথম নারী রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১৫ সালে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে বিদায় নেন। দ্রৌপদী ওড়িশার প্রথম আদিবাসী নেত্রী যিনি রাজ্যপালের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত টানা ছয় বছর তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। বিবিসি জানায়, দ্রৌপদী মুর্মু বেশ সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার কার্যালয়ের দরজা সব সময় সব শ্রেণীর মানুষের জন্য খোলা থাকত। সূত্র : এনডিটিভি ও বিবিসি নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ