Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দলমত নির্বিশেষে সবাই ঘর পাবে : প্রধানমন্ত্রী

একটি ঘর মানুষের জীবন পাল্টে দেয় : বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে মিতব্যয়ী হোন : প্রতি ইঞ্চি জমি কাজে লাগানোর আহবান

ইয়াছিন রানা, মাগুরা থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

দলমত নির্বিশেষে সকলের ঠিকানা সরকার নিশ্চিত করবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের প্রতিটি নাগরিকের সুন্দর জীবন নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব। দলমতের ভিন্নতা থাকতে পারে, তাতে কিছু এসে যায় না। দেশটা তো আমাদের। আর আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, তার মানে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব আমার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো কাছে যদি খবর থাকে বাংলাদেশের একটি মানুষ ভ‚মিহীন বা গৃহহীন রয়েছে অবশ্যই আমাদের খবর দেবেন। দলমত নির্বিশেষে যেই গৃহহীন থাকবে, আমরা তাদেরই ঘর করে দেব, ঠিকানা এবং জীবিকার ব্যবস্থা করে দেব।

গতকাল সারা দেশে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপের আওতায় ভ‚মিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে আরো ২৬ হাজার ২২৯টি ঘরসহ জমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলমত, আদর্শের ভিন্নতা থাকলেও মানুষের বড় পরিচয় সে মানুষ এবং সেভাবেই তিনি মানুষকে বিবেচনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, মানুষকে আমি মানুষ হিসেবেই দেখি এবং প্রত্যেকটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে, সেটাই আমি চাই। আমার বাবার সেটাই শিক্ষা। যে কারণে এদেশের প্রত্যেকটি মানুষের আমি সুন্দর জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়ে যেতে চাই।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই ভ‚মিহীন ও গৃহহীন মানুষের কাছে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করেন। পাশাপাশি, পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সবগুলো উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভুমিহীন উপজেলা হিসেবেও ঘোষণা দেন।

সরকারের পদক্ষেপের ফলে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সবকটি উপজেলাসহ দেশের ৫২টি উপজেলা সম্পূর্ণ ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত হওয়ার সাফল্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশা করি, আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলার প্রত্যেকটি উপজেলাকেই এভাবে ভ‚মিহীন গৃহহীনমুক্ত করতে পারব। প্রত্যেকের একটি ঘর থাকবে, একটি স্থায়ী ঠিকানা থাকবে, একটি সুন্দর বাসস্থান থাকবে এবং তারা সুন্দরভাবে বাঁচবে। আর ইনশাআল্লাহ সেটা আমরা করে ফেলতে পারবো বলেই বিশ্বাস করি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠনসহ সকল রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী, জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করেন নিজ নিজ গ্রামে বা এলাকায় কোন ভুমিহীন বা গৃহহীন রয়েছে কি-না তা খুঁজে দেখার আহবান জানিয়ে বলেন, সরকার তাদের ঘর নির্মাণ করে দেবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৪৫ জন ভ‚মিহীন-গৃহহীন মানুষকে তাদের নিজস্ব ঘরে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে পেরেছি। আমরা চাই এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের কোনও মানুষ যেন আর ছিন্নমূল না থাকে। সে ব্যবস্থাই আমরা নেব, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশ্রয়ণ প্রকল্প শুরু হওয়ার পর মোট ৫ লাখ ৯ হাজার ৩৭০টি পরিবারের পুনর্বাসন হয়েছে। ১৯৯৭ সালে আমরা পুনর্বাসনের যে কাজ শুরু করেছিলাম তা হিসাব করলে এ পর্যন্ত আমরা ৭ লাখ ১১ হাজার ২৬৩টি পরিবারকে ঘর তৈরি করে দিয়েছি। প্রতি পরিবারে ৫ জন হিসাবে ঘরগুলোতে মোট আশ্রয় পেয়েছেন ৩৫ লাখ ৫ হাজার ৩১৫ জন। এর পাশাপাশি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়, তাছাড়া সচিবরা উদ্যোগ নিয়ে দিয়েছে, পুলিশবাহিনী, সেনাবাহিনীসহ সমাজের অনেক মানুষ গৃহহীনদের ঘর বানিয়ে দেওয়ায় এগিয়ে এসেছেন। ফলে আমি বিশ্বাস করি, এ দেশে কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্যই আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে। পাশাপাশি, ঋণ দেওয়া হচ্ছে এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেই সুযোগ নিয়ে নিজেদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে জীবনটাকে আরো উন্নত করবেন এবং নিজেরাও ভ‚মি কিনে ঘর বাড়ি করার যোগ্যতা যেন অর্জন করতে পারেন সেটাও আমরা চাই। কারো কাছে হাত পেতে নয়, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মর্যাদার সাথে যেন বেঁচে থাকতে পারেন।
তিনি বলেন, এই সমাজটাকে আরো সুন্দরভাবে গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি গ্রামের মানুষ যেন সবধরনের নাগরিক সুবিধা পেতে পারেন- সেটাই আমরা নিশ্চিত করতে চাই।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পাঁচটি জেলার পাঁচটি স্থানের সাথে সংযুক্ত থেকে উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন।
স্থানগুলো হচ্ছে- লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলাধীন চরকলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলাধীন গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলাধীন চর ভেড়ামারা আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন মহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প ও মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলাধীন জাঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আশ্রয়ণ -২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান প্রকল্পের উপর একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন এবং এর পরেই একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের ২য় ধাপে দেশব্যাপী মোট ৬৭ হাজার ৮০০টি ঘর দেওয়া হচ্ছে। এই ৬৭ হাজার ৮০০ ঘরের মধ্যে ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বাকি ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর নির্মাণাধীন রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২০২২ পর্যন্ত ১ লাখ ৮৫ হাজার ১২৯টি বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি, ৬৩ হাজার ৯৯৯ গৃহহীন ও ভ‚মিহীন পরিবার তাদের মাথার ওপর ছাদ পায়। আর গত বছরের ২০ জুন আশ্রয়ণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৩০টি পরিবার ঘর পায়।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে সরকার ঘরগুলোকে অধিকতর টেকসই ও জলবায়ু সহিষ্ণু করে গড়ে তুলতে ঘরগুলোর নকশা পরিবর্তন করেন। এতে ঘরগুলোর নির্মাণ খরচ বেড়ে যায়। আর এজন্যই এখন গৃহহীন ও ভ‚মিহীন মানুষরা দুই শতাংশ জমির ওপর আরও উন্নতমানের টিনশেডের আধাপাকা ঘর পাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা ঘর একটা মানুষের জীবন পাল্টে দেয়। ঘর পাওয়া মানুষের মুখের সেই হাসিই জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া, এরচেয়ে বড় কিছু আর হতে পারে না। আশ্রয়ণ একটি মানুষের ঠিকানা। জীবন-জীবিকার একটি সুযোগ, বেঁচে থাকা, স্বপ্ন দেখা এবং তা বাস্তবায়ন করার। যে বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, সে বাংলাদেশের কোনও মানুষ যেন ঠিকানাবিহীন না থাকে, তাদের জীবনটা যেন অর্থহীন হয়ে না যায়, তাদের জীবনটা যেন সুন্দর হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই এই উদ্যোগটা সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুই নিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭০ সালের ১৪ নভেম্বর যখন ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়, তখন নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছিল। সে নির্বাচনের কাজ ছেড়ে দিয়ে জাতির পিতা পৌঁছে গিয়েছিলেন দুর্গত মানুষে পাশে। ভোলা, পটুয়াখালীসহ অনেক জায়গায় গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ালেন, দেখেছেন মানুষের দুর্দশা। তারপর থেকেই দুর্যোগ মোকাবিলায় তার চিন্তাভাবনা ছিল। একাত্তর সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি সেই চিন্তার বাস্তবায়ন করেছিলেন। ভ‚মিহীন মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেন। সিদ্ধান্ত নেন খাস জমি ভ‚মিহীনদের মাঝে বিতরণ করার। ১০০ বিঘার উপর কেউ জমি রাখতে পারবে না, ভ‚মি ব্যবস্থাপনায় এমন নীতি গ্রহণ করেন। তাদের বাড়তি জমি খাসজমি হয়ে যাবে। এসব জমি ভ‚মিহীনদের মাঝে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত তিনি এবং তা বাস্তবায়ন শুরু করেন। দুর্ভাগ্য যে, সেটা তিনি শেষ করে যেতে পারেননি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আজকে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমরা গৃহহীনদের সেমিপাকা বাড়িঘর করে দেবো এবং দুই কাঠা জমি সকলের নামে কিনে দেবো। এই জমি কেনার জন্য, কিছু জমি খাস জমি উদ্ধার করা, পাশাপাশি যেখানে খাস জমি পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে যেন জমি কিনে দেওয়া যায় তার জন্য একটি ফান্ড তৈরি করি। প্রয়োজনে আমরা জমি কিনে প্রকল্পের মাধ্যমে এখন ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। এসময় প্রধানমন্ত্রী এ ফান্ডে যারা অনুদান দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারে তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে আমরা ২৬ হাজার ২২৯টি ভ‚মিহীন-গৃহহীন পরিবারকে স্থায়ীভাবে মাথা গোঁজার ঠিকানা দিতে পারছি বলে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। এই কাজের সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে অসহায় মানুষগুলোর জন্য ঘর নির্মাণে সম্পৃক্ত থাকায় বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং ছিন্নমূল মানুষগুলোরও ঠিকানা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এটা একটা মহৎ কাজ, মহৎ উদ্যোগ। কারণ, একটা ঘর পাওয়ার পর একটা মানুষের জীবনটা তো পাল্টে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাচ্ছি আমাদের বাংলাদেশে শতভাগ ভ‚মিহীন-গৃহহীন পুনর্বাসন হবে। প্রত্যেকটা মানুষ তার ঠিকানা পাবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটা বাস্তবায়ন করাই তার লক্ষ্য, আর এজন্য জীবনে বার বার মৃত্যুঝুঁকির মধ্যে পড়লেও মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমতে তিনি প্রাণে রক্ষা পান বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বোধহয় সে জন্যই (জাতির পিতার উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা) আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন। না হলে বারবার মৃত্যুকে আমি সামনে দেখেছি। কিন্তু, আমি কখনো ঘাবড়ে যাইনি বা ভয়ও পাইনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছি যেন, এই দেশের মানুষকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে বাঁচার মতো একটা সুন্দর সমাজ দিতে পারি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা জনগণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা, স্কুলগুলোকে জাতীয়করণের পাশাপাশি প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন মাধ্যমে গণমানুষের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি। একইসঙ্গে মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার দ্বার অবারিতকরণের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং দেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত করতেও সরকারের পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী করোনার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেনযুদ্ধ এবং একে কেন্দ্র করে আমেরিকার ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার উল্লেখ করে সবাইকে মিতব্যয়ী ও সাশ্রয়ী হবার মাধ্যমে সংকট উত্তোরণে দেশবাসীর সহযোগিতার প্রত্যাশাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। সকলকে দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি কাজে লাগানোর মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর আহবানও জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, একদিকে করোনা আর একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমেরিকা রাশিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) দিয়েছে, তার ফলে, আমাদের সার কিনতে সমস্যা হচ্ছে, খাদ্য কিনতে সমস্যা হচ্ছে এবং এ সমস্ত কারণেই আজকে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বব্যাপীই মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে এবং উন্নত দেশগুলোতে পর্যন্ত খাদ্যের জন্য হাহাকার দেখা গিয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে আমেরিকা বলেন, ইংল্যান্ড বলেন সবজায়গাতেই বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা হচ্ছে। পেট্রল ও ডিজেলসহ জ্বালানি সাশ্রয় করার উদ্যোগ উন্নত দেশগুলোও নিয়েছে। স্পেন, পর্তুগালসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দাবানলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগও দেখা দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখনো আমাদের দেশটা ভালোভাবে চালাতে পারছি। কিন্তু, আমাদের এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে এবং সকল প্রকার সতর্কতামূলক পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। তাই, সবাইকে বলব বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে হবে, পানি এবং জ্বালানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে, আপদকালীন সঞ্চয় সবাইকে বাড়াতে হবে। আর কোথাও এক ইঞ্চি জমিও যেন পড়ে না থাকে, সেখানে খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। ইনশাআল্লাহ, তবেই আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করতে সমর্থ হবো।

শেখ হাসিনা বলেন, কোনো জমি কেউ ফেলে রাখবেন না, একটা তরকারি গাছ বা মরিচ গাছ হলেও লাগান, কোনো জলাধার কেউ ফেলে রাখবেন না। হাঁস-মুরগি গবাবিপশু প্রতিপালন থেকে শুরু করে সকলকেই যার যেভাবে সম্ভব তাকে সেভাবে উৎপাদনে সম্পৃক্ত হবার আহবান জানান তিনি। যেন আমরা নিজেরাই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারি এবং খাদ্যের জন্য কারো মুখাপেক্ষী হতে না হয়।

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ এবং এই দুর্যোগের সঙ্গেই আমাদের বসবাস উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, বর্ষাকাল চলমান থাকায় আবারও যে কোনো সময় বন্যা আসতে পারে সেজন্যও সতর্ক থাকতে হবে। এবার দক্ষিণাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে।

এরআগে বৃহত্তর সিলেট বিভাগে বন্যা মোকাবিলায় বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের সংগঠন কাজেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই আমাদের কাজ।



 

Show all comments
  • salman ২২ জুলাই, ২০২২, ১:৩৯ এএম says : 0
    GHOR pacche sob nij dal er lok Jon, attio, sojon raaa
    Total Reply(0) Reply
  • Hassan Shafi Uddin Ahmed ২২ জুলাই, ২০২২, ৭:২৭ এএম says : 0
    আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কে ধন্যবাদ না জানালে অকৃতজ্ঞ হয়ে থাকবো। আমি আমার হৃদয় থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Habib ২২ জুলাই, ২০২২, ৭:২৬ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ ভালো কাজের উপর আল্লাহ পাক রহমত দান করুন
    Total Reply(0) Reply
  • Mostakim Hossain Mridul Prodhan ২২ জুলাই, ২০২২, ৭:২৬ এএম says : 0
    ধন্যবাদ মননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রাণের জেলা পঞ্চগড়'কে গৃহহীন ও ভুমিহীন মুক্ত জেলা ঘোষণা করায়।
    Total Reply(0) Reply
  • আসিফ ইয়াসির ২২ জুলাই, ২০২২, ৭:২৭ এএম says : 0
    রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার অধীনে ভারত সীমান্ত সংলগ্ন চরখানপুর , চরখিদিরপুর , চরমাঝাড়দিয়ার নামে তিনটা গ্রাম আছে ।পদ্মা নদীতে প্রায় ভাঙ্গনের শিকার গ্রাম ৩ টা নিশ্চিহ্ন হবার পথে ।তাই সরকারের কাছে অনুরোধ এ ৩ গ্রামের মানুষকে ঐ এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে অন্যকোথাও পুনর্বাসন করা হোক ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Liton ২২ জুলাই, ২০২২, ৭:২৭ এএম says : 0
    ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
    Total Reply(0) Reply
  • Md Noyon ২২ জুলাই, ২০২২, ৭:২৮ এএম says : 0
    যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
    Total Reply(0) Reply
  • Estiak Rayhan Ome ২২ জুলাই, ২০২২, ৭:২৮ এএম says : 0
    ভালো কাজের জন্য প্রশংসা নিরন্তর!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ