পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘরের সামনে, পেছনে এবং পাশে অল্প একটু জমি খালি। তাতেই লাগিয়েছেন পুঁই শাক, বেগুন, বরবটি ও কুমড়া। এর মধ্যে হাঁস-মুরগি, রাজ হাঁসের ডাকে মুখরিত ঘরগুলো। আশ্রয়ণের পাশের পুকুরে হাঁসের মেলা। কেউ কেউ লালন পালন করছেন গরু ও ছাগল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুই শতক জমিতে গড়ে তোলা ঘরের পাশে অল্প একটু অংশ খালি রাখছেন না কেউই। দীর্ঘদিনের গৃহহীন, ভূমিহীন, আর্থিক অস্বচ্ছল মানুষগুলো নিজেদের মত করে সাজিয়ে তুলছেন আপন ভুবন। যারা ঘর পেয়েছেন তারা শাকসবজি চাষ, গৃহপালিত পশু-পাখি লালন-পালন করে স্বাবলম্বী হবার চেষ্টা করছেন। দেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখছেন না কেউই। আশ্রয়ণের ঘরের পাশে অল্প ফাঁকা জমি কোন না কোন ভাবে কাজে লাগাচ্ছেন তারা।
মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের ফকিরের বাছড়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এখানে মোট ১৫টি পরিবার ঘর পেয়েছেন।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে যেসব ভাসমান গৃহহীন, ভূমিহীন মানুষ ঘর পেয়েছেন তাদের এখন কিছু নিয়মিত শাকসবজি না কিনলেও তারা চলতে পারছেন। এছাড়া নিজেদের চাষ করা সবজির কিছু অংশ তারা বিক্রি করে লাভবানও হচ্ছেন। এছাড়া যারা হাঁস-মুরগী পালন করছেন তারা হাঁস-মুরগি বিক্রি করতে পারছেন এবং তারা হাঁস-মুরগির ডিম বিক্রি করতে পারছেন। এখানের মহিলাদের কয়েকজন কাঁথা সেলাই করে তা বিক্রি করছেন আয় করছেন।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের মোট ১৫টি পরিবার ঘর পেয়েছেন প্রায় এক বছর। যারা ঘর পেয়েছেন তাদের বেশিরভাগই এখন তাদের জীবন জীবিকা উন্নত করার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাচ্ছেন।
তারা কেউই আর পেছনে ফিরে তাকাচ্ছেন না। সকলের মুখেই হাসি। তাদের এখন সামনে এগিয়ে যাবার পালা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের হাজেরা খাতুন বলেন, তার একটি ছেলে আছে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে রোল নাম্বার তিন। তিনি আশা করছেন একসময় ছেলে বড় হয়ে ভালো রেজাল্ট করে সরকারি চাকরি পাবে এবং তার মায়ের দুঃখ দূর করবে। কারণ তার সন্তান যখন পেটে মাত্র দুই মাস, তখনই তার স্বামী মারা যান।
হাজেরা খাতুন বলেন, আমার ঘরের সামনে যে সবজি গুলো আমি লাগিয়েছি চাষ করছি এর ফলে আমার সবজি কিনা লাগে না। শুধু চাল ডাল কিনলেই হয়। বর্তমানে তিনি মানুষের বাসায় কাজ করছেন কাজের ফাঁকে এই সবজি চাষ করেন এবং কাঁথা সেলাইয়ের কাজ করেন।
হাজেরা বলেন, মানুষের অনেক আশায করে কিন্তু সব আশা তো পূরণ হয় না। তবে একটি আশা পূরণ হয়েছে তা হল ঘরের। আমার আশা স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসিনা পূরণ করেছেন
আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরেকজন রিনা খাতুন। তার দুটি সন্তান রয়েছে তার স্বামী আব্দুর রহমান কৃষিকাজ করেন এবং রিনা খাতুন কাঁথা সেলাই করেন। তিনি এখানে শাকসবজি চাষ করেন। তার ঘরের চারপাশে কয়েক ধরনের সবজি দেখা গেছে। এরমধ্যে বৈশাখ বেগুন গাছ বরবটি গাছ রয়েছে। এছাড়া রিনা খাতুন দুটি ছাগল লালন-পালন করছেন আগামী কোরবানির ঈদে ছাগল দুটো বিক্রি করার আশা করছেন। সাথে তার অনেকগুলো হাঁস রয়েছে।
নিজেদের স্বপ্নের ঘরগুছিয়ে নিয়েছেন তাহমিনা খাতুন এবং মহিউদ্দিন।
তাহমিনা স্কুলে চাকরি করার জন্য চেষ্টা করছেন এবং মহিউদ্দিন ইটভাটায় ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন। তাহমিনার ইচ্ছা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ছেলেমেয়েদের তিনি পড়াবেন। মহিউদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে ঘর দিয়েছেন, আমাদের এখন আর পিছে ফিরে তাকানোর কিছু নেই। আমরা এখন চাচ্ছি জীবন-জীবিকা উন্নয়নের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে চলার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। মহিউদ্দিন আরও বলেন, এর আগে তিনি ভাড়া থাকতেন তার যে ঘর ভাড়ার টাকা লাগতো, এখন সেই টাকাটা তার থেকে যাচ্ছে। এই টাকা দিয়ে তিনি তার ঘরের অল্প একটু অংশ বাড়তি করে তৈরী করেছেন এবং তার ঘরের সামনে একটি টিউবয়েলে স্থাপন করছেন। তার সন্তানের জন্য তিনি কিছু সঞ্চয় ও করছেন। মহিউদ্দিনের স্ত্রী মোসাম্মৎ তাহমিনা বলেন তার ঘরের চারপাশে যে সবজি তিনি লাগিয়েছেন এর ফলে তার তেমন একটা সবজি কিনা লাগে না।
এদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনে রয়েছে বিশাল একটি পুকুর পুকুর টি সরকারি কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পের যারা করেছেন তাদের ব্যবহারের জন্য এই সরকারি পুকুর লিজ দেয়া হয়নি। এই পুকুরের সবার হাঁস দেখা গেছে, হাঁসগুলোর মধ্যে পাতিহাঁস এবং অনেকগুলো রাজা হাস রয়েছে। একেকটি রাজ হাঁস পনেরশো থেকে দুই হাজার টাকা টাকা বিক্রি করা যায়।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিষয়ে মাগুরা জেলার ডিসি ড. আশরাফুল আলম ইনকিলাবকে বলেন, আমরা তাদেরকে ঘর করে দিয়েছি তা দ্বারা যারা আশ্রয়হীন ছিল ভূমিহীন ছিল আমরা তাদের আশ্রয় এবং ভূমির ব্যবহার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আগামীতে আমরা তাদের জন্য জীবন-জীবিকা উন্নয়নের জন্য তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য নতুন করে উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা করব।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাখাওয়াত মুন ইনকিলাবকে বলেন, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার ছিল একটি মানুষও গৃহহীন ভূমিহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারে অগ্রগণ্য হলো মাগুরা জেলা, এই জেলায় শতভাগ গৃহহীন ভূমিহীন মুক্ত হচ্ছে।
এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের যারা ঘর পেয়েছেন তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা মতো এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখছেন না। ঘরের চারপাশে শাকসবজি চাষ করছেন। এছাড়া হাঁস-মুরগী পালন করছেন। তিনি বলেন, এটি দেখে আমরা অভিভূত হয়েছি, আগামীতে অন্যান্য আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোতেও আমরা এই ধরনের কাজ করার জন্য অনুপ্রেরণা দেব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।