Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

‘বিছানায় আমাদের দুই বোনকে বেঁধে পালা করে ধর্ষণ করেছে সেনা’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

‘বিছানার সঙ্গে ওরা আমাদের দুই বোনকে বেঁধে রেখেছিল। এরপর একজন একজন করে সেনা এসে আমাদের ধর্ষণ করেছে’। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেও সেই আতঙ্ক এখনো তাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে। সেনা-অত্যাচারের বিবরণ দিতে গিয়ে যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাচ্ছিল বছর কুড়ির ছিন্নমূল রোহিঙ্গা যুবতী হাবিবার মুখ। পাশে বসা তার আরো দুই ভাই-বোন, তারাও সেনা-অত্যাচারের সাক্ষী।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার ভেতরে বাংলাদেশের টেকনাফ। সেখানে আরো অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গেই এখন ঠাঁই হয়েছে মিয়ানমার থেকে কোনোক্রমে পালিয়ে আসা চালচুলোহীন দুই বোনের।
‘আমাদের সেখানে ঠিক করে খেতেও দেয়া হতো না। উপবাসে কাটিয়েছি কতদিন’Ñ বলছিল হাবিবার ছোট ভাই হাসিম উল্লাহ। দুই বোনের সঙ্গে প্রাণ নিয়ে সেও চলে এসেছে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে। আতঙ্কগ্রস্ত কচি মুখোগুলোয় যেন স্বস্তি ফিরেছে। ‘এখানে অন্তত কেউ আমাদের খুন করার চেষ্টা করবে না। শারীরিক অত্যাচার হবে না’Ñ বলছিলেন হাবিবার দাদা হাসিম উল্লাহ।
হাবিবার ছোট বোন সামিরা (১৮) জানায়, ‘মিয়ানমারের উদাং গ্রামে আমাদের বাড়ি ছিল। একদিন সেই বাড়িতেই হানা দিলো সেনা জওয়ানরা। দুই বোনকে উপর্যুপরি ওরা ধর্ষণ করল। যাওয়ার আগে আমাদের ঘরটাতেও ওরা আগুন দিলো’। তার আরো আগে হাবিবাদের বাবাকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের মাথার উপর থেকে ছাতাটাই কেড়ে নেয় মিয়ানমার সেনারা।
হাবিবা, সামিরা ব্যতিক্রম নয়। এই দুই বোনের মতো রোজ আরো অনেক রোহিঙ্গা কিশোরী-যুবতী ধর্ষিত হচ্ছে। বাধা দিলে নৃশংসভাবে মেরে ফেলে চলে যাচ্ছে সেনারা। জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে বাড়িঘর।
হাবিবা জানায়, পালিয়ে না এসে উপায়ও ছিল না। সেনারা ফিরে যাওয়ার আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে যায়, ‘এরপর আবার এখানে তোদের দেখতে পেলে খুন করে ফেলব’। আমরা যাতে পালাতে বাধ্য হই, তার জন্য বাড়িই পুড়িয়ে দেয়।
অভিযোগ, উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের তাড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবেই মিয়নামার সেনারা তাদের উপর শারীরিক অত্যাচার চালাচ্ছে। গণহারে ধর্ষণ করা হচ্ছে। এমন একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছেÑ যাতে এই উদ্বাস্তুরা ভয়ে পালায়। জাতিসংঘের এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, হাজারে হাজারে রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। চার দিন পাহাড়ে লুকিয়ে থেকে একটি নৌকায় করে এসেছে হাবিবারা। বাংলাদেশের একটি দ্বীপে ছেড়ে দেয় ওই নৌকার মাঝি। যেটুকু অর্থের সঞ্চয় ছিল, তা-ও তুলে দিতে হয়। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।



 

Show all comments
  • md jahirul islam ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ৮:১৯ এএম says : 0
    রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাংলাদেশে আশ্য় দেওয়া হোক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ