Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এতো চামড়া গেল কোথায়? ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

 ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি হয়েছে এক কোটির বেশি। প্রাণি ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন দাবি করছে চামড়া সংগ্রহ হয়েছে মাত্র সাড়ে ৫ লাখ। তাহলে এতো চামড়া গেল কোথায়?
গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ জানান, কোরবানির ঈদের তিন দিনে সাড়ে ৫ লাখ পিস কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। তিনি বলেন, এ বছর ঈদের সময় ট্যানারি মালিকরা সরাসরি সাড়ে ৫ লাখ কাঁচা চামড়া কিনেছেন। এর মধ্যে ঈদের দিনেই সংগ্রহ করেছেন সাড়ে ৩ লাখ। গত বছরের চেয়ে এই সংগ্রহ প্রায় আড়াই লাখ বেশি। গত বছর ট্যানারি মালিকেরা মাত্র তিন লাখ কাঁচা চামড়া কিনেছিলেন।
এর আগে ঈদের পরের দিন প্রাণি ও পশু সম্পদ মন্ত্রনালয় সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫২১টি গবাদিপশু বেশি কোরবানি হয়েছে। গত বছর সারাদেশে মোট ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছিল।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে ছাগলের চামড়ার বিশ্বব্যাপী ডিমান্ড কমেছে। আমরা হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিফট করেছি ২০১৭ সালে। সেখানে মূলত খাসি ও ছাগলের চামড়ার ইউনিট ছিল। সেই ইউনিটগুলোকে আমরা নিতে পারিনি। সাভারে আমাদের ৫ থেকে ৬টি ইন্ডাস্ট্রি আছে যারা ছাগল ও খাসির চামড়া প্রসেস করে। এটার একটা বিরূপ প্রভাব কয়েক বছর ধরে পড়েছে।
তিনি বলেন, আজ এবং আগামীকাল থেকে আমরা লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করব। বিভিন্ন হাট ধরে চামড়া সংগ্রহ শুরু হবে। বিভিন্ন জায়গায় লবণ দিয়ে রাখায় চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে এ বছর। ৫ থেকে ৬ লাখ বকরির চামড়া নষ্ট হয়েছে এমন তথ্য আছে আমাদের কাছে। ৯০ থেকে ৯৫ লাখ পিস চামড়া আমরা সংগ্রহ করতে পারব।
চামড়াজাত পণ্যের দাম বাড়ছে, চামড়ার চাহিদাও আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে। এরপরও বাংলাদেশে চামড়ার দাম কমছে। এর কারণ জানতে চাইলে শাহীন বলেন, চামড়াজাত পণ্য বা চামড়ার দর বহির্বিশ্বে কমেনি। আমরা যে চামড়া উৎপাদন করছি, সেই চামড়া আমরা ব্র্যান্ড বায়ারদের কাছে সেল করতে পারছি না।
তিনি বলেন, আমরা নন-কমপ্লায়েন্ট বায়ার অর্থাৎ চায়নিজ বায়ারের কাছে যে পণ্যের দাম ২ ডলার সেটা ১ ডলারে বিক্রি করছি। অধিকাংশ ট্যানারি মালিক ব্যবসা পরিচালনা করার স্বার্থে লসে চামড়াগুলো সেল করছেন।
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক-বিএসইসি
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে পাশে পাওয়ার আশা করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী-রুবাইয়াত-উল ইসলাম। গভর্নরের দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন গতকাল বুধবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই আশার কথা বলেন বিএসইসি প্রধান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও আব্দুল হালিম।
বৈঠক শেষে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে দেশের আর্থিক খাতের প্রধান দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মধ্যে সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই। সদ্য যোগদানকৃত গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও ঘনিষ্ঠ ও নিবিড় সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবে।
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিএসইসি চেয়ারম্যানকে বলেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। তবে পুঁজিবাজারে যাতে সবাই নির্ভয়ে বিনিয়োগ করতে পারে সেটি বিএসইসিকে নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর থেকে পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে ভিন্ন চিন্তার বিষয়টি সামনে আসে। প্রায় এক বছর ধরে পুঁজিবাজার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে নানা বিষয়ে মতভেদের কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের সীমা বা এক্সপোজার লিমিট গণনার পদ্ধতিই নয় কেবল, আরও নানা বিষয়ে দুই পক্ষের চিন্তা ভিন্ন।
এ নিয়ে এক দফা সরাসরি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যস্থতায় আরও এক দফায় বৈঠক হলেও দুই পক্ষ কাছাকাছি আসেনি। আর পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে দুই পক্ষ সমন্বয় করে কাজ করবে বলে ২০১৪ সালে সরকারের পক্ষ থেকে যে ঘোষণা দেয়া হয়, সেটি মেনে চলার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি।
পুঁজিবাজার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রক্ষণশীল মনোভাবের জন্য যে কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়, তাকে ১৯ বছর পর বদলি করায় নতুন এক ধরনের সমীকরণ অবশ্য তৈরি হয়েছে। নতুন গভর্নর পুঁজিবাজার নিয়ে ভিন্নভাবে ভাববেন-এমন আশার কথাও বলছে বিএসইসি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে আব্দুর রউফ তালুকদার সর্বদা পুঁজিবাজারবান্ধব নেতৃত্ব প্রদান করেছেন।
বিএসইসি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রæপ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফডিআই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্স-২০২১’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্ভাবনা তুলে ধরার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিএসইসির যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডে আয়োজিত রোড শোতেও তিনি অংশ নেন। এগুলো পুঁজিবাজার তথা সামগ্রিক অর্থনীতির প্রতি তার দায়বদ্ধতার প্রমাণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
আগামীকাল শুক্রবার দুপুর ১২টায় গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন নতুন গভর্নর। এছাড়া একই দিনে সার্কিট হাউস পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফেরত আসার কথা রয়েছে তার।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ