পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারে গত ৬ নভেম্বর সংঘটিত ঘটনার ৩ সপ্তাহ পর গতকাল শনিবার বেলা ২টা ২৫ মিনিটের দিকে সাঁওতালদের পক্ষে থোমাস হেমরম গোবিন্দগঞ্জ থানায় হাজির হয়ে স্থানীয় এমপি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫/৬শ’ জনকে আসামি করে ৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতির দাবি করে মামলা দায়ের করেছে।
গতকাল শনিবার বেলা ২টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের ভিতরে হরিনমারী নতুন পল্লীর বাসিন্দা মহলে হেমরমের পুত্র থোমাস হেমরম গত ৬ নভেম্বর সংঘটিত ঘটনায় মামলা করার উদ্দেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট মোঃ সামিউল আলম সরকার, এডভোকেট আব্দুর রশিদ, আসকের এএল আরডি রফিকুল ইসলাম, প্রোগ্রাম অফিসার একেএম বুলবুল আহমেদ, নিজেরা করি’র কেন্দ্রীয় টিম মেম্বার, ব্লাস্ট’র কো-অডিনেটর এডভোকেট নাছিমা খানম, স্টাফ লইয়ার এড. ফারজানা হক, প্যানেল লইয়ার এড. সায়েম সরকার’কে সাথে নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় প্রবেশ করে। এসময় গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার থানায় উপস্থিত ছিলেন না। ২০মিনিট পর ওসি থানায় হাজির হলে মামলার বাদী লিখিত এজাহার ওসির নিকট দাখিল করে। এর পর ২টা ২৫ মিনিটে ওসি মামলাটি গ্রহণ করে।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, প্রায় ২ হাজার সাঁওতালসহ আদিবাসী ও বাঙালী পরিবার বাগদা ফার্ম এবং আশপাশে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বিভিন্ন ফসলাদি আবাদ করে আসছে। গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা-৪) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ সাঁওতালসহ অন্যান্য অদিবাসী ও বাঙালী প্রায় ২৫০০ পরিবারকে (যাদের বাপ-দাদার জমি হুকুম দখল করা হয়েছিল) বাগদা ইক্ষু খামারের জমিতে ঘরবাড়ি তোলার ব্যবস্থা করে দেয়। হুকুম দখলকৃত জমি পূর্বের মালিকদের ফেরত পাওয়ার জন্য তিনি এবং সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল আমাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন সভা সমিতিসহ আন্দোলন গড়ে তোলেন। কিন্তু দু’জনেরই নির্বাচনের পর তারা আমাদেরকে নগ্নভাবে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করতে থাকে। বিভিন্ন সভা সমিতির মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে মিলের কর্মচারিদের উষ্কে দেয় এবং স্থানীয় লোকজনদের আমাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলে। গত ০৬/১১/১৬ তারিখ সকাল অনুমান ৯.৩০ মিনিটের সময় ইক্ষু কাটাকে কেন্দ্র করে সাঁওতালদের সাথে ইক্ষু ফার্মের শ্রমিক/কর্মচারী এবং বহিরাগতদের সংঘর্ষ শুরু হয়। ঐ সময় ঘটনাস্থলে উপস্তিত সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে এবং সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলকুল, সদস্য মোশারফ, আইয়ুব হোসেন, শাহ আলম, সাবেক সদস্য শহিদুল, ইক্ষু খামারের নিরাপত্তা কর্মী বুলু, মোজাম্মেল, তরফ কামাল গ্রামের সুজা মিয়া, পিতা অজ্ঞাত, খামারপাড়া গ্রামের শাহিন, পিতা-মাজদার, উচামেরী গ্রামের মোজাম, পিতা নিজামউদ্দিন, মাদারপুর গ্রামের রুহুল আমিন, পিতা আজিজার রহমান, গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকার মোঃ হোসেন ফুকু, পিতা অজ্ঞাত ও আব্দুল মতিন, পিতা অজ্ঞাত সহ ৫০০/৬০০ লোক ঐ সংঘর্ষে অংশগ্রহণ করে।
উল্লেখ্য, গত ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমিতে চিনিকল কর্তৃপক্ষের লাগানো আখ কাটাতে গেলে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে দখলদার বাঙালী ও সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জন তীরবিদ্ধ এবং ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়। এই সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন সাঁওতাল নিহত হয়। ঘটনার ১১ দিন পর সাঁওতালদের পক্ষে সাপমারা ইউনিয়নের রামপুরা গ্রামের স্বপন মুরমু বাদী হয়ে প্রায় ৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করে। স্বপন মুরমু মামলায় পুলিশ এপর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার ৩ সপ্তাহ পর থোমাস হেমরম গতকাল শনিবার এ মামলা করলো।
এদিকে গাইবান্ধা-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাদায়ের প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগ একটি প্রতিবাদ মিছিল বেড় করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।