Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে পাওয়ার জেনারেশন বিজনেস শুরু করেছে ‘অ্যাক্টিস’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০২২, ৬:৫১ পিএম

টেকসই অবকাঠামোতে বিনিয়োগকারী শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক বিনিয়োগকারী কোম্পানি অ্যাক্টিস আজ ব্রিডগিন পাওয়ার এর যাত্রা শুরু ঘোষণা করেছে, প্রতিষ্ঠানটির এই পাওয়ার জেনারেশন বিজনেস গ্যাসভিত্তিক পাওয়ার প্রজেক্টের জন্য কাজ করবে এবং ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে চলা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কার্যকরী এনার্জি সরবরাহ ও ট্রানজিশনে ভূমিকা রাখবে। আগামী ২০২৮ সাল নাগাদ এই অঞ্চলে ১.২ গিগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ব্রিডগিন পাওয়ার এর। সোমবার (৪ জুরাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক ম্যানেজমেন্ট টিম যাদের এনার্জি ও পাওয়ার সেক্টরে ১০০ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে তারা প্রতিষ্ঠানটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ব্রিডগিন পাওয়ার ব্যবসা পরিচালনায় মূল্যবোধ-চালিত ও টেকসই নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। কোম্পানির কাঙ্ক্ষিত ভৌগলিক পরিধিতে রয়েছে, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ফিলিপিনস, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ এবং শ্রীলংকা।

ব্রিডগিন সম্প্রতি প্রথম বিনিয়োগ হিসেবে বাংলাদেশের ভোলায় ২২০মেগাওয়াট কম্বাইনড সাইকেল গ্যাস টার্বাইন প্রজেক্টে ৪৯ শতাংশ শেয়ারহোল্ডিং অর্জন সম্পন্ন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘স্টেক’ কিনেছে ভারতের শাপরজি পল্লনজি গ্রুপ থেকে, যেটি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কনস্ট্রাকশন, অবকাঠামো, জ্বালানি, রিয়েল ইস্টেট, পানি ও আর্থিক সেবাখাত কেন্দ্রিক বহুমাত্রিক বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সঙ্গে ভোলা পাওয়ার প্ল্যান্টের ২২ বছরের পিপিএ রয়েছে এবং এটি কমিশনিং অর্জন করে ২০২১ সালের জুনে। এই পাওয়ার প্রজেক্টে প্রাথমিকভাবে অর্থায়ন করেছিল এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি), ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইএসডিবি) এবং ইডকোল বাংলাদেশ, তাদের পরিবর্তে এখন যে কনসোর্টিয়াম দায়িত্বে রয়েছে তারা হলো এসএমবিসি, আইএনজি, ডিবিএস, ব্যাংক অব চায়না, মিজোহো এবং সোকজেন। এছাড়া, ক্লিফোর্ড চান্স এবং শেরম্যান স্টার্লিং দায়িত্ব পালন করেছেন ইন্টারন্যাশনাল লিগ্যাল এডভাইজরস হিসেবে ও এফঅ্যান্ডএ এবং ডিএফডিএল ছিল লোকাল ল কাউন্সিল। এই প্রকল্পে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, পিএমসি ট্রেজারি ও রিভারস্টোন দায়িত্ব পালন করেছে অ্যাভাইজরস ফর দ্য ট্রানজেকশন হিসেবে।

অ্যাক্টিস এর পার্টনার, এনার্জি ইনফ্রাস্ট্রাকচার, সঞ্জীব আগারওয়াল বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে ব্যবসা চালুর ব্যাপারে আমরা রোমাঞ্চিত বোধ করছি; এই অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা ক্রমবর্ধমানভাবে বেড়ে চলেছে এবং এক্ষেত্রে এনার্জি সেক্টরের সমন্বিত প্রসিদ্ধির জন্য আমরা অ্যাক্টিসের গ্রহণযোগ্য ও প্রমাণিত কৌশলসমূহ একটি পরিমাপযোগ্য আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করতে পারি, যাতে এই খাতের ভারসাম্যপূর্ণ পরিবর্তন সম্ভব হয়। আমরা বিশ্বাস করি, সহজলভ্য ও মধ্যমেয়াদি স্বল্প নিঃসরণ জ্বালানি (লো ইমিশন পাওয়ার) হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস একটি প্রয়োজনীয় জ্বালানি-যদিও একই সময়ে এই অঞ্চল নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের দিকে ক্রমশই ঝুঁকছে। বাংলাদেশের ভোলা পাওয়ার প্রজেক্টে ব্রিডগিন পাওয়ার এর এই বিনিয়োগ সে যাত্রার-ই কিছুটা অগ্রগতি। আমাদের ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অ্যাক্টিস এনার্জি ৫ ফান্ড থেকে ব্রিডগিন ম্যানেজমেন্ট টিমের সঙ্গে এই বিনিয়োগ এর মাধ্যমে ২০২৮ সাল নাগাদ ১.২ গিগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ সরবরাহের আশা করছি।”

ডব্রডগিন পাওয়ার এর গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ডেনিস ফো বলেন, “আমরা এমন একটি দেশে আমাদের প্রথম বিনিয়োগ সম্পন্ন করে আনন্দিত, যেখানে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর জন্য গ্যাস নির্ভর জ্বালানির চাহিদা রয়েছে এবং যে দেশটি বিনিয়োগকারীতের স্থিতিশীল পিপিএ কাঠামোর মাধ্যমে সুরক্ষা দিচ্ছে। ভোলাতে এই সম্পদের অধিগ্রহণ বর্ধিত এবং পরিমাপযোগ্য এনার্জি প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে আমাদের যাত্রাকে আরো গতিশীল করবে; পাশাপাশি কার্বন ফুটপ্রিন্ট প্রশমন ও টেকসই ভবিষ্যত তৈরিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের এই ব্যবহার ভূমিকা রাখবে সেতুবন্ধন হিসেবে।”

শাপরজি পল্লনজি ইনফ্রা এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকুন্দান শ্রীনিভাসন বলেন, “অ্যাক্টিসের রিনিউঅ্যাবল প্ল্যাটফর্মে আমাদের সোলার অ্যাসেটস্ এর সফল ডাইভেস্টমেন্ট এর পর, এই উদ্যোগে আবার প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরা আনন্দিত। এই চুক্তি এসপি এর নির্ধারিত স্থান সমূহে উচ্চ মানের অবকাঠামোর ধারাবাহিক ট্র্যাক রেকর্ডও প্রদর্শন করে; যেটি স্টেকহোল্ডারদের জন্য মূল্য তৈরির পাশাপাশি উচ্চ মান-সম্পন্ন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের পছন্দের অংশীদার হতে সাহায্য করে। আমি অন্যান্য পদক্ষেপের জন্যও শুভ কামনা জানাই ও ব্রিডগিন পাওয়ার এর সফলতা কামনা করি।”

অ্যাক্টিস এর পার্টনার অ্যান্ড হেড অব সাসটেইনেবিলিটি স্বামী নিশান বলেন, “অ্যাক্টিস নেট জিরো অ্যাসেট ম্যানেজারস ইনিশিয়েটিভ এর স্বাক্ষরকারী, যেটি ২০৫০ সাল নাগাদ নেট জিরো গ্যাস নিঃসরণ লক্ষ্যপূরণকে সমর্থন করে এবং আমরা সম্প্রতি আমাদের নিজস্ব পোর্টফোলিও-ওয়াইড ২০৫০ নেট জিরো টার্গেট ঘোষণা করেছি। ব্রিডগিন পাওয়ারে আমাদের এই বিনিয়োগ কম কার্বন নির্ভর অর্থনীতি গড়ে তোলায় ট্রানজিশন টুল হিসেবে আমাদের প্রতিশ্রুতি বজায়ে সুযোগ করে দেবে।”

বৈশ্বিকভাবে পাওয়ার সেক্টরে পাওয়ার জেনারেশন তৈরি, ক্রয় এবং সরবরাহে বিনিয়োগ করে থাকে দ্য অ্যাক্টিস এনার্জি ইনফ্রাস্ট্রাকচার টিম। বিগত বছরে ’অ্যাক্টিস এনার্জি ৫’ এর জন্য বিনিয়োগযোগ্য ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফান্ডরাইজিং সহ বিভিন্ন অর্জন প্রতিষ্ঠানটিকে পাওয়ার খাতে আরো বিনিয়োগ এবং ট্রানজিশনে সক্ষম করেছে; ল্যাটিন আমেরিকায় অ্যাক্টিসের তিনটি প্রধান বিনিয়োগ হলো- ব্রাজিলে সর্ববৃহৎ ইনডিপেনডেন্ট রিনিউঅ্যাবল এনার্জি প্ল্যাটফর্ম, চিলিতে সর্ববৃহৎ রিনিউঅ্যাবল এনার্জি আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোভাইডার) এবং মেক্সিকোতে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আইপিপি। এছাড়া, এপ্রিলে অ্যাক্টিস ভারতের অন্যতম বৃহত্তম রিনিউঅ্যাবল কোম্পানিগুলোর একটি স্প্র্যাং এনার্জি বিক্রির জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ