পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে। ক্ষমতায় এসে আমরা নির্বাচনী ইশতেহারটা ফেলে দেই না। রাজধানী ঢাকার মধ্যে গাড়ি যাতে ঢুকতে না পারে, সেজন্য ইস্ট-ওয়েস্ট এক্সপ্রেসওয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকার ভেতরে কাঁচামালের গাড়ি এড়াতে দূরবর্তী এলাকায় বাজার বসাতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রোববার ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠক শেষে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এপিএ সাইনিং হলো। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন যে, আমরা যদি সুশাসন নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে কোনো কিছুই সম্ভব না। গত ৩০ জুন সংসদে প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়েছেন। সেখানে তিনি পদ্মা সেতু নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পদ্মা সেতু সফল হওয়ার একটা বড় কারণ হলো প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা এবং সুশাসন সফল হওয়া। প্রযুক্তিগুলো খুব কঠিন; কিন্তু এখানকার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে পেরেছি বলেই পদ্মার মতো একটা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। সুশাসন যতগুলো মানদণ্ড আছে, সেগুলোতে জোর দিতে হবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী দুটি বিষয়ে নির্দিষ্ট করে নির্দেশনা দিয়েছেন। পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে যে ট্রান্সপোর্ট হবে, সেটা স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানে অনুমোদন করা হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে, যাতে ঢাকা শহরে কোনো গাড়ি না ঢোকে। দ্বিতীয়ত হলোÑ যেহেতু দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের সঙ্গে আমাদের একটা যোগাযোগ হয়ে যাচ্ছে। বিপুল পরিমাণে পণ্য এখন ঢাকা শহরে আসা শুরু করবে বা চট্টগ্রামের দিকে যাবে। সেই ক্ষেত্রে ঢাকা শহরে যে কাঁচামালগুলো আসবে, আমাদের যেহেতু একটাই মার্কেট- কারওয়ানবাজার। এটাকে উনি আগেই নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেটা খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। যাতে ঢাকা শহরে সব কাঁচামাল না ঢোকে। প্রয়োজন হলে কেরানীগঞ্জের ওপাশে, সায়েদাবাদে, আমিনবাজারে আর এদিকে মহাখালী থেকে আর একটু উপরের দিকে কোথাও যদি কাঁচাবাজরগুলো করি এবং সেখান থেকে যদি বিপণন করি, তাহলে আমাদের শহরের কেন্দ্রস্থল যানজট এবং নোংরা হওয়া থেকে রেহাই পাবে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা নোট করেছি। আমরা দ্রুত এটা বাস্তবায়ন করব।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা আগেরই সিদ্ধান্ত ছিল। উনি আরও ৪-৫টা জায়গার কথা উল্লেখ করেছেন। মহাখালীতে একটা বড় জায়গা ছিল। করোনার কারণে আমরা সেখানে একটা ১৫শ’ শয্যার হাসপাতাল করেছি। শুধু এখানে না, উনি কাঁচপুরেও করতে বলেছেন। প্রয়োজন হলে কেরানীগঞ্জে এবং আমিনবাজারেও। এ বিষয়ে এরই মধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ এগুলো নিয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটা করতে। ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শেষে ডিপিপি হচ্ছে। হেমায়েতপুরের ওখান থেকে এলিভেটেড রাস্তা যাবে। এটা কেরানীগঞ্জে এসে উপর দিয়ে ক্রস করবে সেকেন্ড লেভেলে। ঢাকা-মাওয়া সড়ক ফাস্ট লেবেলে আছে, এটা সেকেন্ড লেবেলে ক্রস করবে। ওখানে ইন ও আউট থাকবে। আর একটু ডাউনে গিয়ে পোস্তগোলার ওদিকে ক্যাবল স্টেট ব্রিজ হবে যাতে পিয়ার না পড়ে। এরপর পাগলা ও ফতুল্লাকে ডানে রেখে স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে শীতলক্ষাকে অতিক্রম করবে। ক্যাবল স্ট্রেট ব্রিজ হবে কোনো পিয়ার হবে না, সেটা লাঙ্গলবন্দ দিয়ে উঠবে। আর ওখান থেকে মদনপুর দিয়ে একটা লিংক থাকবে, যারা সিলেটে বা ময়মনসিংয়ের দিকে যাবে, তারা ওদিক দিয়ে বের হয়ে যাবে। আর চট্টগ্রাম-কক্সাবাজারের যারা যাবে, তারা লাঙ্গলবন্দ দিয়ে বের হয়ে চলে যাবে। তখন নারায়ণগঞ্জের একটা অংশের গাড়ি প্রধান সড়কে ঢুকবে না। এখান দিয়ে এসে পোস্তগোলা বা ঢাকার দিক যেখানে সুবিধা হবে। মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের কাছে একটা লিংক থাকবে। এছাড়া গাবতলী থেকে একটা লিংক দেওয়া হবে। যাতে গাবতলীর বাস শহরে ঢোকার প্রয়োজন হবে না। তিনি বলেন, এটার ডিপিপি হচ্ছে। খুব দ্রুত ডিপিপি শেষ হবে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন শিগগিরই হয়ে যাবে। মন্ত্রিসভায় পদ্মা সেতু সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অভিনন্দন প্রস্তাব আনার পর উনিও বলেছেন যে, এটা সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। বিশেষ করে জনগণ যেভাবে সরকারকে বা প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন দিয়েছে বা উদ্বুদ্ধ করেছে, এটা একটা বড় বিষয় হিসেবে কাজ করেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিশেষ ধন্যবাদ এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত মন্ত্রণালয়-বিভাগগুলোর ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) সই এবং ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন পুরস্কার ২০২২’ ও ‘শুদ্ধচার পুরস্কার ২০২২’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছি সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা রাজনীতি করি, আমাদের দল আছে। আমরা যখন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি, একটা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করি। যে ইশতেহারে আমরা এ দেশকে কীভাবে আর্থসামাজিকভাবে উন্নত করব, সেই নির্দেশনা বা কর্মপরিকল্পনার কাঠামো থাকে। কাজেই আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, কখনো আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারটা কিন্তু ফেলে দেইনি। শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবার বাজেট করার সময় সেটাকে অনুসরণ করেই কিন্তু আমাদের কর্মপরিকল্পনা কী নেব, কতটুকু আমরা সফল করতে পারলাম, আর কতটুকু করা বাকি আছে, সেটাও কিন্তু আমরা নির্দিষ্ট করি এবং আমাদের দলের আরও একটা ঘোষণাপত্র থাকে, গঠনতন্ত্র থাকে সেখানেও আমাদের কতগুলো দিকনির্দেশনা থাকে। সেটা আমরা কিন্তু বাস্তবায়ন করি এবং আমাদের যখন দলের সম্মেলন হয়, তখন আবার আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করি, সেখানেও আমরা কতটুকু কাজসম্পন্ন করতে পারলাম, আর কী কী বাকি আছে বা আরও নতুন কী কী করা যেতে পারে, সেটা আমরা প্রণয়ন করি। তারই ওপর ভিত্তি করে আমরা কাজ করি। দেশকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন মেয়াদি পরিকল্পনা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আরেকটা কাজ করেছিলাম, আমাদের আশু করণীয় কী কী বা মধ্য মেয়াদি কাজ অথবা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা। সে ক্ষেত্রে আমরা যেমন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করেছি, পাশাপাশি আমরা আমাদের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনাও প্রণয়ন করে নিয়েছিলাম। ২০১০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত আমরা পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তারই ভিত্তিতে আমরা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করে কর্মসম্পাদন করেছি, আমরা এখন ২০২১ থেকে ২০৪১ পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কাজ করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়নের সব পরিকল্পনাটা হয়, একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে। কারণ আমরা এভাবে চিন্তা করিনি যে, শুধুমাত্র ধনী থেকে ধনী হোক। আমরা চেয়েছি, একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে অবহেলিত মানুষগুলো; আমি নিজে যাদের দেখেছিÑ ’৮১ সালে আসার পর, সারা বাংলাদেশ যখন ঘুরেছি, তাদের গায়ে কাপড় নেই, পরনে ছিন্ন একটা বস্ত্র, পায়ে কোনো জুতা-স্যান্ডেল নেই, তাদের শরীরে কোনো মাংস ছিল নাÑ হাড় আর চামড়া ছাড়া। মনে হতো যেন একেকটা কঙ্কাল হেঁটে বেড়াচ্ছে। এ রকম বিভিন্ন এলাকায় আমি নিজে আমার সচক্ষে দেখেছি। স্বাভাবিকভাবে আমাদের লক্ষ্যই ছিল এই মানুষগুলোর ভাগ্য আমাদের পরিবর্তন করতেই হবে। প্রথম পাঁচ বছরে আমাদের প্রচেষ্টাই ছিল অন্তত তাদের গায়ে একটু কাপড় হবে। পায়ে নিদেনপক্ষে এক জোড়া রাবারের চপ্পল হলেও হবে। কিন্তু সেটুকু আমরা করতে পেরেছিলাম। তারপরে মাঝখানে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি এটা ঠিক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।