পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিকল্প ধারার সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের পথ ধরেই দেশ গণতন্ত্রের পথে ফিরতে পারে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সেই ব্যক্তি, তার বক্তব্যের পথ ধরেই আমরা গণতন্ত্রের পথে যেতে পারি।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, সিপিবির প্রেসিডিয়ামের সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রেসিডেন্টের সাক্ষাত চেয়ে বিএনপির আগ্রহের বিষয়ে অধ্যাপক বি চৌধুরী বলেন, সাংবিধানিকভাবেই প্রেসিডেন্টের কোনও ক্ষমতা নেই। তিনি যা করবেন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে করবেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টকে গুণবাচক যত ক্ষমতাই দেন না কেন, আপনারা তার কাছে ধর্ণা দিলেও কোনও লাভ নেই। তিনি কিছুই করতে পারবেন না। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীই একমাত্র শক্তিশালী বলে মন্তব্য করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব বিএনপি মিসড করেছে বলেও মন্তব্য করেন বি চৌধুরী। তিনি বলেন, আপনারা মিসড করে গেছেন। ওই প্রস্তাবই ছিল কিছুটা নিউট্রাল সরকারের ইঙ্গিত। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান তিনি।
সরকার যদি ন্যুনতম নিরপেক্ষ না হয়, তাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনেও কোন লাভ নেই মন্তব্য করে বি চৌধুরী বলেন, বিগত নির্বাচন যেগুলো নিরপেক্ষ হয়েছে, সেগুলো সব নিরপেক্ষ সরকারের কারণে। ওই সরকারগুলো কিছুটা নিউট্রাল ছিল বলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এ কারণে ওই সময় কারা কমিশনার ছিল, এ নিয়ে মাথা ব্যাথা ছিল না।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, মওলানা ভাসানীকে আওয়ামী লীগও এবার স্মরণ করেছে, এটা ভালো লেগেছে। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, আমি বলি কি, তাকে মাঝে মধ্যে স্মরণ করেন।
আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রসঙ্গে অভিযোগ করে বি চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের উপর হামলা হচ্ছে, সরকার এটার প্রতিবাদ করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। বিএনপি চেয়ারপারসনও কোনও কথা বলছেন না।
স্মরণসভা প্রধান বক্তা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী মহিরুহ ছিলেন। গোটা জাতির মুক্তির জন্য, বিনির্মাণের জন্য ভাসানী এখনও প্রাসঙ্গিক। সমাজগঠনে, রাষ্ট্রগঠনে এখনও মওলানা ভাসানীর দর্শন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর, প্যালেস্টাইনে, কাশ্মিরে মুসলমানদের উপর হামলা হলেও এখন প্রতিবাদের কোনও নেতা নেই বলে হতাশা ব্যক্ত করেন ফখরুল। মওলানা ভাসানী এই প্রতিবাদ করতেন বলে মনে করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ওই সময় মওলানা ভাসানীকে অন্তরীণ করা হয়েছিল। জাসদের ত্রিশ হাজার নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছিল। সিরাজ শিকদারের মত দেশপ্রেমিক ব্যক্তিকে ক্রসফায়ার করে হত্যা করা হয়েছিল।
বিএনপির ইসি গঠন প্রস্তাব নাকচ করে দেয়ার কড়া সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, সরকার ২০১৪ সালের নির্বাচন যেভাবে করেছিল, আবারও সে রকমই একটি নির্বাচন করতে চায়। তিনি বলেন, প্রস্তাব দিয়েছি মাত্র ৫ মিনিটও যায়নি, নাচক করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে বলেই বিএনপির প্রস্তাব এড়িয়ে গেছে। তিনি আহ্বান জানান, মওলানা ভাসানীর দর্শন থেকে শিক্ষা নিয়ে গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে আরও ত্বরান্বিত করতে হবে।
কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, এদেশের মানুষ কোনও নেতার খবর রাখে না। কোনও নেতাকে কেউ সম্মান করে না। করতেও জানে না। তিনি দাবি করেন, নেতাদের যদি গাড়ি-বাড়ি না থাকত, তাহলে তাদের সন্তানদের মুখের খাবার দেয়ার লোকও থাকত না।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমার যদি গাড়ি-বাড়ি না থাকত, যদি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে যে ভূমিকা, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট না হতেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা যদি শেখ হাসিনা ও রেহানা না হত, তাহলে এদেশের মানুষ তাদের মুখে খাবারও তুলে দিত না। কেউ খোঁজ নিত না। আজকে মওলানা ভাসানীর স্মরণে সভা হচ্ছে, কিন্তু তিনি যে ৩ বিয়ে করেছিলেন, তার কোনও খবর কেউ রাখেনি।
সিপিবির প্রেসিডিয়ামের সদস্য হায়দার আকবর খান রনো বলেন, মওলানা ভাসানীর প্রধান দিক হল তিনি মেহনতি ও শ্রমিক মানুষের নেতা ছিলেন। ১৯৫৭ সালে স্বায়ত্বশাসনের স্বপ্নও ভাসানীই দেখিয়েছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজকে পাঠ্যবইয়ে মওলানা ভাসানীর জন্য একটি পৃষ্ঠাও নেই। শেখ মুজিব বেঁচে থাকলেও এগুলো এলাউ করতেন না। তিনি সব দলকে গণতন্ত্রের জন্য সম্মিলিত বিরোধীদল হয়ে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান।
এছাড়া আগামীকাল (আজ) শনিবার শহীদ মিনারে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরুদ্ধে জাতীয় কমিটির মহাসমাবেশে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান ডা. জাফরুল্লাহ। পাশাপাশি শান্তির পতাকা নিয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।