পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধে ড. ইউনূসের তৎপরতা অস্বীকার করে ইউনূস সেন্টার যে বিবৃতি দিয়েছে তা ‹শাক দিয়ে মাছ ঢাকা›র অপচেষ্টা বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ইউনূস সেন্টারের বিবৃতির বিষয় তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ায় অনেক বিরোধিতাকারীর সুর পাল্টেছে। বিএনপিও কিছুটা সুর পাল্টানোর চেষ্টা করছে, যদিও মির্জা ফখরুল সাহেব এখনো কিছু বলেননি। দেখলাম ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে, সেটির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। পদ্মা সেতুর বিরোধিতাকারী, বিশেষ করে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের কুশীলবদের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি ড. মুহম্মদ ইউনূস সাহেবের প্রতি যথাযথ সম্মান-শ্রদ্ধা রেখেই এ ব্যাপারে কিছু বক্তব্য, কিছু তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরতে চাই।
ড. হাছান বলেন, ড. ইউনূস সাহেব হিলারি ক্লিনটনের সাথে বিশেষ সখ্য থাকার সুবাদে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের ক্ষেত্রে যে মূল কুশীলবের ভূমিকা পালন করেছিলেন, সেটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট, দেশ-বিদেশে সবাই সেটি জানে। মন্ত্রী বলেন, তখনকার বিশ্বব্যাংকের মিস্টার জেলিক বলেছিলেন, এটি বন্ধ করার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। কারণ প্রথমত বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের অন্যতম অংশীদার দেশ অর্থাৎ সেখানে আমাদের শেয়ার আছে। দ্বিতীয়ত বাংলাদেশ কখনো ঋণখেলাপী হয়নি। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে খুবই ভালো। এভাবে, কোনো যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ না থাকায় মিস্টার জেলিকের ওপর ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করা হলেও তিনি কিন্তু সেটি করেননি। তিনি যেদিন অবসরে যাচ্ছেন, তার শেষ কর্মদিবসের শেষ ঘন্টায় তিনি অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্তে সই করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এর কারণ ড. ইউনূস সাহেব বেআইনীভাবে ১০ বছর অতিরিক্ত সময় গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডি ছিলেন এবং আরও থাকতে চেয়েছিলেন। ব্যাংকের এমডিদের বয়সসীমা বাংলাদেশে ৬০ বছর। কোনো বেসরকারি ব্যাংকেও এ বয়সের পর আর এমডি থাকা যায় না। তার বয়স তখন ৭০ এর কোঠায় অর্থাৎ কমপক্ষে ১০ বছর অতিরিক্ত সময় ধরে তিনি এমডি ছিলেন। আর গ্রামীণ ব্যাংক হচ্ছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বা কর্ম সংস্থান ব্যাংকের মতো সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, যেখানে সরকারের শেয়ার আছে। গ্রামীণ ব্যাংকে তখন সরকারের শেয়ার ছিল ৫১ শতাংশ ও অন্যদের ৪৯ শতাংশ। সংবিধিবদ্ধ অন্য ব্যাংকের জন্য যে আইন এখানেও সেই আইন। কিন্তু তিনি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমডির দায়িত্বে ছিলেন। সরকার তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরে ব্যাংক ছেড়ে যেতে বলেনি, বরং উপদেষ্টা হতে বলেছিল, তখন তিনি সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করলেন। মামলায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পর্যন্ত গেছেন এবং হেরেছেন। অর্থাৎ তিনি যে বেআইনীভাবে এমডি পদে ছিলেন, সেটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দিয়ে নিশ্চিত করেছে। সরকার সবসময় গ্রামীণ ব্যাংককে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশেষ করে ১৯৯৮ সালের বন্যার পর যখন তাদের ঋণ গ্রহীতারা অর্থ ফেরত দিতে পারছিলো না, তখন শেখ হাসিনার সরকার বিভিন্ন সময়ে গ্রামীণ ব্যাংকে ৪শ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরষ্কারের অর্থ দিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ চালু করেছিলেন, আর ক্ষুদ্র ঋণের কথা বলে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া ড. ইউনূসের পুরস্কারের অর্থ তার ব্যক্তিগত একাউন্টেই আছে, গ্রামীণ ব্যাংকেও যায়নি, অন্য কোনো জনহিতকর কাজেও তিনি খরচ করেননি। ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি সত্যের অপলাপ› উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইউনূস সাহেব যে পদ্মা সেতু এবং এতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের বিরোধিতা করেছেন, সেটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট। তিনি আগে কখনো বলেননি যে তিনি এই অপচেষ্টা চালাননি। বরং যখন বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হলো, তখন দম্ভ করে বিভিন্ন জায়গায় তিনি নানা কথা বলেছিলেন, যেগুলো এখনো বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এভাবে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টায় কোনো লাভ নেই। যদি প্রয়োজন হয় আমরা আরো তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।