পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মূলত দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমানের দেয়া একটি স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। হাজার হাজার মন্তব্য ও বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রচারের পর ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়ে দলটির আমীর গণমাধ্যমের উপর দায় চাপিয়ে বলেছেন ‘গণমাধ্যম ও কিছু ব্যক্তি এটাকে (তার বক্তব্য) নিজ নিজ পছন্দের আঙ্গিকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছেন।’
ফেসবুক, ব্লগ, টুইটারে বেশির ভাগ মন্তব্যে জামায়াত সৎ লোকের দল এবং ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য যথার্থ হিসেবে অবিহিত করেছেন। আবার কেউ কেউ দলটিকে সুবিধাবাদী দল হিসেবে অবিহিত করেছেন। তবে একজন লিখেছেন ‘বিএনপির উপর জুলুম-নির্যাতন-মামলা হামলা চললেও জামায়াত গত কয়েক বছর ধরে গর্তে লুকিয়ে রয়েছে। এখন সামনে নির্বাচন আসায় দলটি ফের গণমাধ্যমে আলোচনায় আসতে চায়। এটা করতে গিয়ে তারা বিগত সত্তুর-আশির দশকের মুম্বাইয়ের হিন্দি সিনেমার নায়িকাদের পথ অনুসরণ করছেন। ওই নায়িকারা নিজেদের সিনেমার কাটটি বাড়ানোর জন্য নিজেরাই নিজেদের স্ক্যাণ্ডাল মিডিয়ায় ছড়াতেন। তাদের নিয়ে মিডিয়ায় বিতর্ক ছড়াতো; এতে সিনেমা হলে দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। অবশ্য জামায়াত নেতার দ্বিতীয় স্ট্যাটাস দেখে মনে হয় দলটির পোষ্য কিছু অতি উৎসাহী সাংবাদিক জামায়ামকে রাজনীতির মাঠে আলোচনায় আনতে নেতিবাচক খবর প্রচারের কৌশল নিয়েছেন।
গতকাল জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান লিছেছেন, ‘গত ২৫ জুন আমার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে কিছু কিছু গণমাধ্যম ও ব্যক্তি এটাকে নিজ নিজ পছন্দের আঙ্গিকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছেন। তাদের উদ্দেশ্য আমার কাছে স্পষ্ট নয়। আমি আমার স্ট্যাটাসে কাউকে শুভেচ্ছা কিংবা অভিনন্দন সূচক একটি শব্দও উচ্চারণ করিনি। আমি সর্বাবস্থায় দেশের মানুষের কল্যাণ ও মহান রাব্বুল আলামীনের শুকরিয়া আদায় করে স্ট্যাটাসটি দিয়েছি। ফেসবুক ওয়ালে এখনো আমার স্ট্যাটাসটি চলমান আছে। যে কেউ পুনরায় দেখে নিতে পারেন। আমি এ ব্যাপারে ঐসব গণমাধ্যম ও ব্যক্তিকে আহবান জানাবো, যাতে করে তারা স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে কোনো ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত না করেন। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ ও জ্ঞান দান করুন। আমীন।’
এর আগে ২৫ জুন জামায়াতের আমীর স্ট্যাটাসে লেখেন ‘যুগ-যুগ ধরে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণ রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সাথে যাতায়াত ও যোগাযোগে সীমাহীন কষ্ট স্বীকার করে আসছিলেন। এমনকি মাঝে-মধ্যে ঢাকার উদ্দেশ্যে জরুরী চিকিৎসা নিতে আসা লোকদের কারো কারো মৃত্যু ফেরীঘাটেই হয়েছে। চিন্তা করলে যা খুবই হৃদয় বিদারক। আজ তাদের সে কষ্টের অনেকখানিই অবসান হলো। মহান রবের দরবারে এজন্য শুকরিয়া আদায় করছি, আলহামদুলিল্লাহ।’
সেতু নির্মাণে যার যেখানে যতটুকু অবদান কিংবা ভালো-মন্দ, তার বিচারের ভার জনগণের ওপর। পৃথিবীতে যা কিছুই কল্যাণকর হয়, তার জন্য মহান প্রভুর শুকরিয়া আদায় করাই হচ্ছে মানুষের দায়িত্ব। আর মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞচিত্ত মানুষ বিনয়ী হয়। বিনয় হলো- ভালো মানুষের পোশাক। মহান আল্লাহ্র দরবারে দো’য়া করি- জনগণের ভ্যাট, ট্যাক্সের অর্থ এবং উন্নয়ন সহযোগীদের আর্থিক ও কারিগরি অংশগ্রহণে যে সেতু তৈরি হলো, তা জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হোক। কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান, যানবাহনে উচ্চ হারের টোল যেন তাদের পুনর্বিবেচনায় স্থান পায়।’
দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জামায়াতের আমীরের এই স্ট্যাটাসে কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নেই। তবে রাজনীতিতে দলটির অবস্থান পরিবর্তনের কিছু ইঙ্গিত এতে রয়েছে। কারণ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে সেতুতে তুলে ‘টুস করে নদীতে ফেলে দেয়া’ বক্তব্য দেয়ার কারণে বিএনপি সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যায়নি। বরং দলটির অনেক নেতাই সেতুটি নির্মাণের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতের আমীরের এমন বক্তব্য দলটির স্বতন্ত্র অবস্থানের ইঙ্গিত করে। কারণ গণমাধ্যমে খবর এসেছে গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় পর্যায়ের জামায়াতের অনেক নেতাই আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। র্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর সরকার দিল্লির সহায়তায় আবার ২০২৩ সালে যেনতেন নির্বাচনে ছক আঁকছে। এ কারণে বিএনপিও জামায়াত নেতাদের সঙ্গে পৃথক ভাবে বৈঠক করেছেন বিদেশী ওই দুতাবাসের কর্মকতারা এমন গুজব রয়েছে। বিএনপিকে একশ সিট দিয়ে বিরোধী দলে বসার প্রস্তাব দেয়া হলে দলটি তা প্রত্যাখান করেছে বলে গুজব রয়েছে। এ অবস্থায় বিএনপিকে টেক্কা দিয়ে জাতীয় পার্টির মতো জামায়াতও আগামীতে বিরোধী দলে যেতে চায় এমন প্রত্যাশা থেকে দলটি নতুন এই কৌশল নিতে পারে।’ অবশ্য কেউ কেউ লিখেছেন, ‘জামায়াত গঠনমূলক রাজনীতি করে বিরোধিতার জন্য শুধু বিরোধিতা করে না। তার প্রকাশ আমীরের এই বক্তব্য।’ আবার কেউ লিখেছেণ, ‘জামায়াতে ইসলামী প্রকৃত কোনো ইসলামী দল নয়। তাদের পক্ষে সবকিছুই সম্ভব।’
দলটির গঠনতন্ত্রের শৃংখলা অনুযায়ী আমীর ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য নিয়ে জামায়াতের অন্য নেতারা কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি। তাদের কথা ‘এটি আমীরে জামায়াতের বক্তব্য। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা উচিত হবে না।’ তবে এ প্রসঙ্গে দলটির প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন,‘আমীরে জামায়াত আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করেছেন। এ সেতুতে বাংলাদেশের মানুষের সবারই অবদান রয়েছে। তিনি যেটা বলেছেন, আমাদের সংগঠনের কালচারই হচ্ছে আমরা যা কিছু ভালো করতে সক্ষম হবো তার শুকরিয়া আদায় করবো। এই হিসেবে সেতুর বিষয়ে তার মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। এতে কোনো রাজনীতি নেই। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।