পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নরসিংদীর ডিসি আবু হেনা মোরশেদ জামানকে অপসারণের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে। মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান আজিম এবং নরসিংদী পৌরসভার প্যানেল মেয়র রিপন সরকার। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১১টায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীরা নরসিংদী সরকারি কলেজ মাঠ এবং বাসাইল বাজার চত্বরে মিলিত হয়। এসব সমাবেশে অংশ নেয় নরসিংদীর চরাঞ্চলের আলোকবালী, করিমপুর, নজরপুরসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু। তাদের নেতৃত্ব দেন আলোকবালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু এবং করিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান হারিছুল হক ও নজরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সরকার। সেখান থেকে তারা মিছিলে সংগঠিত হয়ে আপত্তিকর স্লোগানসহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে পৃথক পৃথকভাবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কলেজ মাঠে সংগঠিত মিছিলটি দীর্ঘ প্রায় ১ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কোর্ট রোড ধরে বিএডিসি অফিসের সামনে এলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিলকারীরা কালেক্টরেট ভবনের প্রধান গেটে গিয়ে একটি সমাবেশে মিলিত হয়। মিছিলকারীরা প্রথম বাধা উপেক্ষা করার পর দ্বিতীয়বার পুলিশ আর তাদের বাধা দেয়নি। দ্বিতীয় মিছিলটি বাসাইল এলাকা থেকে সংগঠিত হয়ে নরসিংদী স্টেডিয়াম চত্বরে এলে দাঙ্গা পুলিশের একটি দল তাদের সেখানে গতিরোধ করে। ফলে তারা সেখানেই একটি পথসভায় মিলিত হয়। দু’টি সমাবেশেই বক্তাদের দাবি ছিল জেলা প্রশাসকের অপসারণ। বক্তারা অভিযোগ করেন, নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান একজন ভালো মানুষের মুখোশধারী দুর্নীতিবাজ। তার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির কথা মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। তিনি তার সাবেক এডিসি (রাজস্ব) কামাল হোসেনকে দিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলা ভূমি অফিস থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে অফিসগুলোকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। ৩ জন এডিসি থাকা সত্ত্বেও ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন, নরসিংদীর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্যের জন্য মো: কামাল হোসেনকে এডিসি রাজস্ব পদে বহাল রাখেন এবং সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি) নামে একটি পদ সৃষ্টি করে জসিম উদ্দিন হায়দার নামে একজন এডিসিকে পদায়ন করেন। নরসিংদীবাসী না হওয়া সত্ত্বেও ডিসি আবু হেনা পরিচয় গোপন করে তার ড. দিল আফরোজকে রোকেয়া পদকের জন্য নির্বাচিত করেন। ক্যান্ডেল লাইট স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে একটি ঠিকানাবিহীন ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে প্রায় এক একর সরকারি খাস ভূমি বরাদ্দ দেয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছেন।
এদিকে ডিসি আবু হেনা মোরশেদ জামানকে অপসারণের দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই মিছিল ও ঘেরাওয়ের কারণে নরসিংদীর রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের জনগণের মধ্যে ব্যাপক গণউৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিমন্ত্রী, মেয়র ও কাউন্সিলরের মতো শক্তিশালী নেতা থাকায় এবং জেলা প্রশাসক একজন প্রশাসনিক প্রধান হওয়ায় কেউ তাদের ব্যাপারে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। ঘন ঘন মিছিল, ডিসি আবু হেনার বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্লোগানসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচির কারণে সাধারণ মানুষ সার্বক্ষণিক আতঙ্কের মধ্যে পতিত হয়েছে। এদিকে ফেসবুকে নরসিংদী কালেক্টরেট কর্মচারী কল্যাণ সমিতির আইডিতে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় শপথ গ্রহণের ছবিসহ বিভিন্ন বক্তব্য-বিবৃতি প্রকাশিত হওয়ায় উৎকণ্ঠা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ বলছে দু’পক্ষের বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ না নিলে যে কোনো সময় বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তবে রাজনৈতিক মহল থেকে সরাসরি কেউ মন্তব্য করতে চাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রাজনৈতিক নেতা বলেন, একজন ডিসিকে বদলি করার জন্য মিটিং-মিছিলের কোনো প্রয়োজন হতে পারে না। ডিসি পদটি একটি প্রশাসনিক পদ। সরকারের একজন মন্ত্রী যদি একজন ডিসিকে বদলি করতে চান তাহলে একটি গণতান্ত্রিক দেশে একজন ডিসি মন্ত্রীকে উপেক্ষা করে তার স্বপদে বহাল থাকতে পারেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।