Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে হত্যার ১৯ বছর পর স্বামী গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২২, ১২:০৩ এএম

মানিকগঞ্জ সদর থানার বাসিন্দা গৃহবধূ জুলেখা বেগম হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি স্বামী সিরাজুল ইসলামকে (৪০) ১৯ বছর পর গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গত বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি দল নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন চর সৈয়দপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। গতকাল দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।

ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক জানান, সিরাজুল ও জুলেখার ২০০২ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সিরাজুল জুলেখাকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে থাকেন। এর মধ্যে জুলেখা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সিরাজুল তার প্রতিবেশী মোশারফ নামে এক যুবকের সঙ্গে জুলেখার পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে মিথ্যা অভিযোগ তোলে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০০৩ সালে সিরাজুল ব্যাগে থাকা গামছা স্ত্রী জুলেখার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করেন। পরে মরদেহ নদীর পাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় সিরাজুল।
র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, ২০০২ সালে বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে বেশকিছু নগদ অর্থ, গহনা ও আসবাবপত্র বর পক্ষকে দেন জুলেখার বাবা। বিয়ের পর থেকে সিরাজুল ভিকটিমকে আরও যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে এবং ভিকটিমকে যৌতুক না দিতে পারলে তালাক দেওয়ার ভয়-ভীতি দেখায়। ভিকটিমের পরিবার থেকে পর্যাপ্ত যৌতুক না পাওয়ায় আসামির নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে আসামি সিরাজুল প্রতিবেশী মোশারফ নামে এক যুবকের সঙ্গে ভিকটিমের পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে মিথ্যা অভিযোগ তোলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, আসামির নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভিকটিমের বাবা ও ভাইসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে গ্রামে সালিশ বৈঠক হয়। সেখানে ভিকটিমের কোনো দোষ না পেয়ে এবং পরকীয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় সালিশে আসামি সিরাজুলকে গালিগালাজ করা হয়। একই সঙ্গে ভিকটিমকে নির্যাতন না করার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর সিরাজুল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে জুলেখাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর সিরাজুল জুলেখাকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি সিংগাইরের উত্তর জামশা গ্রামে যায়। এর তিন দিন পর সিরাজুল জুলেখাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে মানিকগঞ্জ শহরে নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন অজুহাতে কালক্ষেপণ করে গভীর রাতে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে মানিকগঞ্জ শহর থেকে রওনা হয়। মানিকগঞ্জ শহর থেকে সিরাজুল জুলেখাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি না গিয়ে কৌশলে তার শ্বশুরবাড়ির নিকটবর্তী কালীগঙ্গা নদীর পাড়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়।
র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মো.মোজাম্মেল হক বলেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি তার ব্যাগে থাকা গামছা বের করে জুলেখার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে নদীর পাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।



 

Show all comments
  • salman ২৪ জুন, ২০২২, ২:৪৯ এএম says : 0
    Kukur ta k 2 Jon (Wife & Agoto Sontan) k hottar Jonno DRUTO Fashi dewaa hok
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ