Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

আগামী রোববার মূল ফটকে মানববন্ধন

মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাও করতে চান সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীরা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশস্থ ওই দেশের দূতাবাস ঘেরাওয়ের দাবি জানান সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবীরা। মানবিক কারণে নির্যাতিত উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেয়ারও আহ্বান জানান তারা। একই সঙ্গে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সাং সুচির নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয় কর্মসূচি থেকে। গতকাল বুধবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রাঙ্গণে এক মানববন্ধনে আইনজীবী এ দাবি জানান তারা। আইনজীবী সমিতি এ মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করেন। আগামী রোববার সুপ্রিমকোর্টের মূল ফটকে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন সমিতির নেতৃবৃন্দরা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানবন্ধনে সব দল মত নির্বিশেষে সাধারণ আইনজীবীরা অংশ নেন। এদিকে এ মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নির্যাতন বন্ধের দাবির প্রতি সংহতি জানান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া। তবে তিনি কোনো বক্তব্য রাখেননি।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সমিতির সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, যারা সব সময় শান্তির কথা বলেন, তারা আজ কোথায়? মিয়ানমারের সাধারণ মানুষের অধিকার আজ ভুলুন্ঠিত হচ্ছে। চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার। জাতিসংঘ যদি এ হামলা বন্ধে কোন পদক্ষেপ না নিতে পারে তাহলে আমরা মনে করবো জাতিসংঘ একটি কাগুজে বাঘ। সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, মিয়ানমারে যা ঘটছে তা মানবাধিকারের চরম লংঘন। পৈশাচিক এই কর্মকা-ের বিরুদ্ধে আইনজীবীদের একটি প্রতিনিধি বাংলাদেশস্থ জাতিসংঘ অফিসে দেখা করবে বলে আমি আশা করি। এরপরও জাতিসংঘ এই হামলা বন্ধ করতে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে জাতিসংঘ মিশন ঘেরাও করতে হবে।
সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের আর্তনাদ দেখতে পাই। সেখানে সন্তানের লাশ নিয়ে মাকে আহাজারি করতে হচ্ছে। এসব দৃশ্য জাতির বিবেককে নাড়িয়ে দিচ্ছে। সেখানে তারা আর্তনাদ করছে যে আমাদেরকে বাংলাদেশে জেলে হলেও রাখেন।  তিনি বলেন, এই কর্মসূচি কোনো দলের নয়। এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি সব দলের আইনজীবীরাই উপস্থিত হয়েছেন। কারণ মানবতাকে বাঁচাতে হবে।
এ অবস্থায় সাধারণ আইনজীবীদের দাবি অনুযায়ী বাংলাদেশে জাতিসংঘ অফিসের সঙ্গে আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি দেখা করবে বলেও উল্লেখ করেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি বলেন, আমরা সমিতির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করব। এছাড়াও এমনেস্টিসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আমরা দেখা করে নির্যাতন বন্ধের দাবি জানাব। তবে প্রাথমিকভাবে আগামী রোববার সুপ্রিমকোর্টের মূল ফটকে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করছি। সমিতির সাবেক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম বলেন, আমরা অবশ্যই এ ধরনের মানবতাবিরোধী কর্মকা-ের প্রতিবাদ জানাই। তবে একইসঙ্গে এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যেন সংখ্যালঘুদের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি না হয় এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট না হয় সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত কোটি উদ্বাস্তু লোককে আ¤্রয় দিয়েছিল। অথচ আমরা রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে পারছি না। নির্যাতিত মানুষ প্রাণভয়ে ফিরে আসলেও আমরা তাদেরকে পুশব্যাক করে ফিরিয়ে দিচ্ছি। অথচ চীন ও ফিলিপাইন এসব রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন তার দেশে এক ইঞ্চি খালি জায়গা থাকা পর্যন্ত তিনি শরণার্থী গ্রহণ করতে থাকবেন। মানববন্ধনে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, আইনজীবী নেতা আজহার উল্লাহ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট সাইফুদ্দিন, অ্যাডভোকেট সালাহউদ্দিন প্রমুখ। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ