পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুসহ জোড়া খুনের ঘটনার সঙ্গে মিল্কি হত্যার যোগসূত্র পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কিকে ফিল্মি কায়দায় হত্যা করা হয়। ওই খুনের ঘটনায় আর্থিক লেনদেন হয় বলে টিপু হত্যার মাস্টার মাইন্ড মুসা তদন্তকারীদের জানিয়েছে। কারাগারে থাকা ল্যাংড়া খালেদ ওই টাকা কিলার গ্রুপকে দেয়ার জন্য টিপুকে দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু, টিপু ওই টাকা সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করেননি বলে খালেদের কানে যায়। এতে কারাগারে থাকা ল্যাংড়া খালেদ টিপুর ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। মিল্কি হত্যাকাণ্ডের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অভিযানে গ্রেফতারের পর ল্যাংড়া খালেদ চলে যায় কারাগারে। এতে মতিঝিলের টেন্ডার বাণিজ্য এবং পুরো এলাকার আধিপত্য আসে জাহিদুল ইসলাম টিপুর হাতে। এতে টিপু ওই এলাকার সর্বসেরা হয়ে ওঠেন। অন্যদিকে টিপুর সঙ্গে হাত মেলান কারাগারে থাকা আরেক যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা। রিমান্ডে থানা হত্যা মামলার আসামি মুসা, ইশতিয়াক আহমেদ জিতু ও সহযোগী মারুফ খান দ্বিতীয় দফা রিমান্ডে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের ‘সাপ্লায়ার’ ইশতিয়াক আহমেদ জিতু ও সহযোগী মারুফ খানকে রিমান্ডে নিয়ে ‘কিলার’ মুসার মুখোমুখি করা হচ্ছে। ডিবির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অন্যদিকে রিমান্ডে থাকা সুমন সিকদার মুসা, ইমরান আহমেদ জিতু ও রাকিবুর রহমান রাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তলটি জিতু শুটার আকাশের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল। পিস্তলটি জিতু মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল শাহরিয়ার ওরফে শটগান সোহেল ওরফে সুন্দরী সোহেলের নির্দেশে সংগ্রহ করেছিলেন। দুবাই থেকে মুসার সঙ্গে সোহেলের একাধিকবার ফোনালাপ হয়েছিল- সেটা স্বীকারও করেছে। প্রাথমিকভাবে এই হত্যায় আন্ডারওয়ার্ল্ডে ২ কোটি টাকার লেনদেন করা হয়। কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ১৫ লাখ টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেয় সোহেল। এই ১৫ লাখ টাকার মধ্যে ৯ লাখ টাকা আগাম টাকা হিসাবে দুবাই থেকে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো হয় কিলার গ্রুপের আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ’র কাছে। শুটার সালেহ অবশ্য মুসার আপন ছোট ভাই। হন্ডিতে পাঠানো ৯ লাখ টাকা কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ১২ জনের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। দ্বিতীয় দফার চার দিনের রিমান্ডের প্রথম দিন মুসা তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে চমকপ্রদ নতুন তথ্য দিয়েছেন। এসব তথ্য ডিবি পুলিশ এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এক কর্মকর্তা জানান, জিতু একজন অস্ত্র ব্যবসায়ী। তার কাছ থেকে অপরাধীরা অস্ত্র ও গুলি সংগ্রহ করত। জিতুর কাছ থেকে রাকিবসহ ৩ জনের হাত বদলের পর অস্ত্র চলে যায় মাসুম আহমেদ ওরফে আকাশ আহমেদের কাছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রিমান্ডে আসামিদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মুসার দাবি অনুযায়ি দুবাইয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের নির্দেশনায় পরিকল্পিতভাবে টিপুকে হত্যা করা হয়েছে। জিতু নামের একজন হত্যায় অস্ত্র সরবরাহ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য যাচাইয়ের পাশাপাশি সন্দেহভাজন আসামিদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে গোয়েন্দা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তের সাথে সম্পৃক্ত ডিবির একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছে মুসাসহ অন্যান্য আসামিরা। রিমান্ডে থাকা মুসার কাছ থেকে পাওয়া বেশ কিছু তথ্য জিতু ও মারুফের দেয়া তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। ওইসব তথ্যের ভিত্তিতেই টিপু হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হচ্চে। শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে টিপু হত্যার রহস্যজট খুলবে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে এ হত্যার পেছনে প্রধানত ৩টি কারণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি হলো- ‘রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার’, চাঁদা আদায় আর অন্যটি হলো ‘প্রতিশোধ’।
জিতুর রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, এই আসামিকে গত বুধবার রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এই আসামি টিপু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহকারী বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া এই হত্যাকাণ্ড তার জড়িত থাকার কথা প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার এবং অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। অন্য আসামি মারুফ খানের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মারুফ খানও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এই মামলার অন্যতম আসামি হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী সুমন সিকদার ওরফে ‘কিলার’ মুসার মুখোমুখি করা হবে। তাহলে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।