Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

জঙ্গি নির্মূলে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

রংপুরে ৩ জঙ্গির আত্মসমর্পণ

রংপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ২:৫৭ পিএম

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে বাঙ্গালী ঐতিহ্য লালিত শান্তিপ্রিয় এই দেশে যে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল তা থাকবে না। বাংলাদেশের মানুষ এ ধরণের নৃশংস জঙ্গি কর্মকান্ড মেনে নেয়নি। এ ঘৃণ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। এ দেশ থেকে চিরতরে জঙ্গি নির্মূলের লক্ষ্যে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বুধবার দুপুরে রংপুর সেনানিবাসের ‘শীতল’ কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত জঙ্গিবাদবিরোধী এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।

সমাবেশে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অঙ্গীকার নিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর তিন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন।

জঙ্গী নির্মুলে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গীবাদ সম্পর্কে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে বাবা-মাকে তাদের সন্তানদের প্রতি বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে। জঙ্গীবাদ কি এবং নেতিবাচক দিকগুলো সন্তানদের বোঝাতে হবে। স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষকদেরও সজাগ থাকতে হবে।

সমাবেশে আত্মসমর্পণকারী জঙ্গী সদস্যরা হলেন- দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার লোহারবান গ্রামের মন্দেল হোসেনের ছেলে হাফেজ মো. মাসুদ রানা (১৮), একই উপজেলার বিন্যাগাড়ি গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে হাফিজুর রহমান (১৬) ও জয়রামপুর গ্রামের সারওয়ার হোসেনের ছেলে আখতারুজ্জামান ওরফে আক্তারুল (১৮)।

এসময় সেচ্ছায় আত্মসমর্পনকারী তিন জঙ্গির পুনর্বাসনের লক্ষ্যে র‌্যাবের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে ৫ লক্ষ টাকার চেক হস্তান্তর করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

রংপুর র‌্যাব-১৩ আয়োজিত সুধী সমাবেশে জানানো হয়, শোলাকিয়া হামলায় অংশগ্রহনকারী জঙ্গি শফিউলের সঙ্গে আত্মসমর্পনকারী তিন জঙ্গির যোগসূত্র রয়েছে। শফিউল যে জঙ্গি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জঙ্গি হিসেবে রিক্রুট হয়েছে এরাও একই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে প্রবেশ করেছিল। শোলাকিয়া হামলায় জড়িত শফিউল নূরপুর সালাফিয়া ক্যাডেট মাদরাসায় ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যায়ন করেছে এবং আত্মসমর্পনকারী তিন জঙ্গিও একই মাদরাসায় অধ্যায়ন করেছে। ওই মাদরাসার পিয়ন আরিফুল (বর্তমানে হত্যা মামলায় জেল হাজতে) প্রাথমিক পর্যায়ে শফিউলকে দীক্ষিত করে তোলে এবং পরে আত্মসমর্পনকারী তিন জঙ্গি তাদের সাথে যোগ দেয়।

আরিফুলের পরিকল্পনায় ঘোড়াঘাটের গুড়হাটি এলাকার একটি মেসে থেকে বোমা তৈরীর উপরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল ওই তিন জঙ্গি।

সংগঠন থেকে তাদেরকে স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে গত রমাজান মাসের পর নাশকতার টার্গেট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি তারা।

হলি আর্টিজান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর জঙ্গি শফিউরের সম্পৃক্ততা এবং চারিদিকে সমালোচনার ঝড় দেখে তারা অনুশোচনাবোধ করে আত্মগোপনে চলে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের লোকজনের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে তারা ওই তিন জঙ্গিকে আত্মসমর্পনে উৎসাহী করে র‌্যাবের কাছে নিয়ে আসে।

রংপুর র‌্যাব-১৩ এর অধিনায়ক এটিএম আতিকুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, সরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ল সমর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশী এমপি, রংপুর সিটি মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহম্মেদ, বিভগীয় কমিশনার কাজী হাসান আহম্মেদ, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম, পিপিএম, রংপুর বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ