পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা পরিকল্পিতভাবেই দেশটাকে গড়ে তুলতে চাই। তৃণমূলের মানুষ যেন শহরের সব সুযোগ-সুবিধা পায় সে ব্যবস্থাটা করা। পল্লী জনপদটা ওইভাবে করেছি কারণ হচ্ছে মানুষের পরিবার বেড়ে যায়, হয়তো একটা ঘর। ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা ঘর লাগে। আমরা লেখাপড়ার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। লেখাপড়া শেখার পরে চাকরি করে সে একটু ভালোভাবে থাকতে চায় সেখানেও বিরাট একটা দালান তুলে ফেলে, সেটা যাতে না হয় আবার সীমিত আয়ের মধ্য দিয়ে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন জীবনমান যাতে গড়ে ওঠে।’
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকালে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি এবং রংপুরে পল্লী জনপদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
অপরিকল্পিতভাবে কল-কারখানা গড়ে না তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফসলের জমি নষ্ট করে কেউ কল-কারখানা করতে পারবে না। করলে আমরা বিদ্যুৎ-গ্যাস কোনো কিছুই দেবো না। পরিষ্কার কথা আমাদের। কাজে এটা কেউ করতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার মতো সেই নেতৃত্ব তো আর গড়ে উঠবে না আর এটা কেউ পারবেও না—সুতরাং আমি চেষ্টা করছি একেবারে পল্লী অঞ্চলে তৃণমূলে পড়ে থাকা মানুষগুলো, তাদের ভাগ্যটা কীভাবে পরিবর্তন করা যায়। উন্নয়নের যত কর্মসূচি আমরা নিয়েছি, সব আমরা গ্রামের মানুষকে লক্ষ রেখেই করেছি। যেন আমাদের উন্নয়নটা গ্রাম থেকে উঠে আসে।’
গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া এই দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ তো সব সময় অবহেলিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অঞ্চলের মানুষকে যাতে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় সে জন্য দারিদ্র্য বিমোচন কমপ্লেক্স আমরা প্রথমে কোটালিপাড়ায় গড়ে তুলি সেটাই পর্যায়ক্রমিকভাবে আজকে একাডেমিতে উন্নীত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেওয়া পদক্ষেপ ধীরে ধীরে মানুষের জীবন-মান উন্নত করছে। ৯৬ সালে যেসব উদ্যোগ নিয়েছিলাম তার অনেক কাজ ২০০১-এ বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসে তা বন্ধ করে দিয়েছিল। তৃতীয়-চতুর্থবার আসতে পেরেছি বলেই সময় পেয়েছি হাতে যে কারণে আমাদের উন্নয়নগুলো আজকে দৃশ্যমান হচ্ছে, মানুষ তার সুফলটা পাচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচনের কথা যদি বলি তাহলে অবশ্যই আমাকে তৃণমূলে যেতে হবে। তাছাড়া আমাকে চাষের জমি রক্ষা করতে হবে। সে জন্য সারা বাংলাদেশে আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। যত্রতত্র কেউ শিল্প গড়ে তুলতে পারবে না। জাতির পিতা করেছিলেন বিসিক শিল্প নগরী। তার এই ধারণা থেকেই আমরা আরও বড় আকারে...আমাদের দেশে ক্ষুদ্র-মাঝারী শিল্প সব চেয়ে বেশি কার্যকর, এটা দারিদ্র্য বিমোচনে সব থেকে বেশি কার্যকর। একটা বড় শিল্প হলে ক্ষুদ্র শিল্পের প্রয়োজন হয়। এটার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী স্তরে আমরা ১০০টি শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলছি। ফসলের জমি নষ্ট করে কেউ কল-কারখানা করতে পারবে না। করলে আমরা বিদ্যুৎ-গ্যাস কোনো কিছুই দেবো না। পরিষ্কার কথা আমাদের। কাজে এটা কেউ করতে পারবে না।’
সীমিত আয়ের লোক একসঙ্গে বাড়ি করতে পারবে না, ফ্ল্যাট কিনতে পারবে না বা কিছু করতে পারবে না শুধু শহরে এসে ফ্ল্যাট বাড়িতে থাকবে সেটা না—গ্রামেও যেন তার জীবনমান উন্নত করতে পারে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ফ্ল্যাটে থাকতে পারে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘মাত্র ৩০ শতাংশ টাকা দিয়ে একটা ফ্ল্যাটের মালিক হবে এবং ধীরে ধীরে ১৫ বছরে বাকি টাকাটা দেবে। কিন্তু নিজের থাকার একটা জায়গা হয়ে যাবে যেটা আধুনিক সুযোগ সম্পন্ন হবে। রংপুরে পল্লী জনপদ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেক বিভাগে প্রথমে একটা করে করা হবে এবং চাহিদা অনুযায়ী এটা আরও বাড়ানো হবে যাতে মানুষ সম্পূর্ণ শহরের নাগরিক সুবিধা পাবে।’
সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্ম সেতু নির্মাণ হয়ে গেছে। যে দক্ষিণ অঞ্চল সারা জীবন অবহেলিত, আর অবহেলিত থাকবে না। কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা একটা জায়গায় যদি হয় তাহলে সেখানকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এমনিই উন্নত হয়। সেটা হলো বাস্তবতা। আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ, পদ্মাপাড়ের মানুষ সব সময় অবহেলিত ছিলাম। দারিদ্র্য আমাদের নিত্যসঙ্গী। আল্লাহর রহমতে আর সেটা থাকবে না।’
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উৎসব শুধু পদ্মাপাড়ে হবে না, সারা বাংলাদেশে উৎসবটা করবেন। আমি চাচ্ছি বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলায় উৎসব হোক কারণ এটা আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল। বিশ্বের সব থেকে খরস্রোতা নদী আমাজন, তারপর হচ্ছে পদ্মা। আমরা এখানে সেতু করতে পারি এটা অনেকেরই ধারণা ছিল না। এটা দ্বিতল সেতু—নিচ দিয়ে ট্রেন যাবে, উপর দিয়ে গাড়ি যাবে। এটা একটা কঠিন কাজ। পৃথিবীতে এই ধরনের কাজ বোধ হয় এটাই প্রথম। এখানে যেসব মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয়, এটা বোধ হয় আর কোথাও হয়নি। এর যে বাধা ছিল সেটাও আপনারা জানেন, বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখানে দুর্নীতি করতে বসিনি। নিজেদের ভাগ্য গড়তে বসিনি। দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, দেশের উন্নয়ন করতে এসেছি।’
দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সময় দেশবাসীর কাছ থেকে অভূতপূর্ব সারা যদি আমি না পেতাম এটা আমি করতে পারতাম না। আগামী ২৫ তারিখ এর উদ্বোধন হবে। আমি মনে করি, দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের আর কোনো কষ্ট থাকবে না। শিল্পায়ন হবে, বিদ্যুতের ব্যবস্থা ইতোমধ্যে আমি করেছি। রাস্তা-ঘাট, পুল ব্রিজ সবই আমি করে দিচ্ছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।