পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মানসিক রোগীদের জন্য ওষুধ ও পথ্য ক্রয়ের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পৃথক ৬টি মামলা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থার পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মো: শহীদুল আলম সরকার বাদী হয়ে গতকাল বুধবার এ মামলা করেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৫শ’ শয্যা বিশিষ্ট পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের শতভাগ ওষুধ-পথ্য সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয়। মেডিক্যাল অ্যান্ড সার্জিক্যাল রিকুইজেট (এমএসআর) খাতে সাধারণত: ঔষধ,সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি,পরীক্ষা-নিরীক্ষার কেমিক্যাল,লিলেন,আসবাবপত্র,গজ, ব্যান্ডেজ,কটন ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়। অন্যদিকে ‘পথ্য’ ( কোড নং-৪৮৭২) খাতে চাল,ডাল,মসলা, ভোজ্য তেল,পাউরুটি,দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি, খাসির মাংস,মুরগির মাংস,মাছ, ডিম,তরি-তরকারি,শাক-সবজী ও ফলমূল ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে হাসপাতালের পথ্য খাতে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পথ্য কেনার লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ৯ মে ৩টি গ্রুপে দরপত্র (স্মারক নং-মাহাপা/দরপত্র বিজ্ঞপ্তি/২০১৭/১৩৬৪) আহ্বান করে। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ‘ক’ গ্রুপে চাল,ডাল,মসলা, ভোজ্য তেল,পাউরুটি,দুগ্ধজাত দ্রব্যাদিসহ মোট ২৭টি দ্রব্য সংগ্রহের লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই গ্রুপে ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। তিনটি দরপত্রই ‘বৈধ’ মর্মে বিবেচিত হয়। তৎকালিন জেলা মার্কেটিং অফিসার ওই অর্থ বছরে শিশু পরিবার,পাবনা’র জন্য সামগ্রির যে বাজার দর দিয়েছেন একই অর্থ বছরে ঠিকাদার এবং হাসপাতালের পরিচালক পরষ্পর যোগসাজশে উচ্চ বাজার দর প্রদান করেন। যা প্রকৃত বাজারদরের চেয়ে অনেক বেশি। অন্য দিকে ঠিকাদার জেলা মার্কেটিং অফিসারের দেয়া উচ্চ বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দরপত্র দাখিল করেন। পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক, দরপত্র প্রস্তাব মূল্যায়ণ কমিটির সভাপতি হিসেবে অসদুদ্দেশ্যে পথ্য সামগ্রির বাজার দর যাচাইয়ের লক্ষ্যে কোনো কমিটি গঠন করেন নি। তিনি জেলা মার্কেটিং অফিসারের দেয়া বাজার দরকে ‘প্রাক্কলিত মূল্য’ বিবেচনা করে দরপত্রের তুলনামূলক বিবরণী (সিএস)সহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র তৈরি করেন। দরপত্র প্রস্তাব ও মূল্যায়ণ কমিটির সভায় জেলা মার্কেটিং অফিসারের দেয়া বাজার দরের ভিত্তিতে সর্বনিম্ন দরদাতা এ.এইচ.এম. রেজাউন কার্যাদেশ দেয়ার সুপারিশ করেন। ঠিকাদার পণ্য সরবরাহ সাপেক্ষে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ৮৩ লাখ ১৩ হাজার ২২ টাকার বিল দাখিল করেন। পণ্য সরবারের পর বিল উত্তোলন করেন। কিন্তু শিশু পরিবারকে দেয়া জেলা মার্কেটিং অফিসারের বাজার দর অনুযায়ী এই মূল্য পরিশোধ করা হলেও ঠিকাদারের প্রকৃত বিল আসতো ৬২ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৩ টাকা। উচ্চ মূল্যে সরবরাহের কার্যাদেশ দেয়ায় সরকারের ২০ লাখ ৬৬ হাজার ৮৯ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অতি উচ্চ মূল্যে কার্যাদেশ দেয়া হলেও ঠিকাদার অতি নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করেন।
এ ক্ষেত্রে ঠিকাদার এ.এইচ.এম. রেজাউন,পাবনা মানসিক হাসপাতালের তৎকালিন পরিচালক ডা: তন্ময় প্রকাশ বিশ্বাস, তৎকালিন পাবনা জেলা মার্কেটিং অফিসার মো: হুমায়ুন কবির পরষ্পর যোগসাজশে এই অর্থ আত্মসাৎ করেন।
একইভাবে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ‘খ’ গ্রুপে খাসির গোশত,মুরগির গোশত, মাছ ও ডিম ইত্যাদি পণ্য সামগ্রি কেনার লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। ঠিকাদারগণ পাবনা জেলা মার্কেটিং অফিসারের দেয়া বাজারদরকে ভিত্তি ধরে ‘সর্বনিম্ন দর’ দাখিল করেন। সবগুলো দরদাতাই ‘বৈধ’ বিবেচিত হয়। একই কায়দায় সামগ্রি সরবরাহ করে ৬০ লাখ ১৮ হাজার ৭১০ টাকার বিল দাখিল করে অর্থ উত্তোলন করেন। এ ক্ষেত্রেও সরকারের ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৬০৭ টাকা আত্মসাত হয়। পাবনা মানসিক হাসপাতালের তৎকালিন পরিচালক ডা: তন্ময় প্রকাশ বিশ্বাস, ঠিকাদার এএইচএম আরেফিন,তৎকালিন পাবনা জেলা মার্কেটিং অফিসার (বর্তমানে দিনাজপুর কৃষি বিপণন অধিদফতরের বিপণন কর্মকর্তা) মো: হুমায়ুন কবির পরষ্পর যোগসাজশে এ অর্থ আত্মসাৎ করেন।
আরেকটি কার্যাদেশে পথ্য সরবরাহ করে পরিচালক ডা: তন্ময় প্রকাশ বিশ্বাস, জেলা মার্কেটিং অফিসার হুমায়ুন কবির, রোজ এন্টারপ্রাইজের মালিক এ.এইচ.এম.ফয়সাল পরষ্পর যোগসাজশে ২৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬২২ টাকা উত্তোলন করেন। উচ্চদরে পণ্য সরবরাহ করে হাতিয়ে নেন ৮ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৫ টাকা।
২০১৮-২০১৯ অর্থ বছর ‘গ্রপ-ক’ দরপত্র দাখিল করে চাল,ডাল,মসলা,ভোজ্য তেল,পাউরুটি,দুগ্ধজাত সামগ্রি সরবরাহ করে ৯৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৬৩ টাকা উত্তোলন করে। উচ্চদরে পণ্য সরবরাহ করে ডা: তন্ময় প্রকাশ,হুমায়ুন কবির এবং এএইচএম ফয়সাল সরকারের ২১ লাখ ৫২ হাজার ৯২৮ টাকা অতিরিক্ত হাতিয়ে নেন। একই অর্থবছরে উচ্চদরে পণ্য সরবরাহ করে এসব ব্যক্তিরাই ৬৯ লাখ ২০ হাজার ৬৩৯ টাকার বিল উত্তোলন করেন। হাতিয়ে নেন সরকারের অতিরিক্ত ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩৬০ টাকা। আরেকটি সরবরাহের বিপরীতে তারা উত্তোলন করেন ২৮ লাখ ৯১ হাজার ৩৭২ টাকা। অতিরিক্ত হাতিয়ে নেন ৭ লাখ ৩ হাজার ৩৯ টাকা। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, বাজেট বরাদ্দের আগেই দেয়া হয় এসব কার্যাদেশ দেয়া হয়। এভাবে পৃথক কার্যাদেশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হয় সরকারের কয়েক কোটি টাকা। যা দন্ডবিধির ৪০৯/৩৪ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।