Inqilab Logo

বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সরকারের নীরবতা রহস্যজনক মির্জা ফখরুল

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়ন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর বর্বর নির্যাতন ও গণহত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল (মঙ্গলবার) এক বিবৃতিতে বলেন, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে নজিরবিহীন মুসলিম নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। সেখানে চলছে নির্বিচারে গণহত্যা। মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর নৃশংসতায় দিশেহারা রাখাইন প্রদেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা। তাদের ওপর সে দেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সীমান্তরক্ষীদের নির্যাতন-নির্মমতা ইতোপূর্বের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এমতাবস্থায় পার্শ্ববর্তী দেশে সংখ্যালঘু মুসলিম রাখাইনদের ওপর নিপীড়নে বাংলাদেশ সরকারের দ্রুত তৎপরতা দেখানো উচিত ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে সরকারের নীরবতা রহস্যজনক।
মির্জা ফখরুল বিবৃতিতে বলেন, মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বাড়িতে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। ধর্ষণ করা হচ্ছে নারী শিশুসহ মা-বোনদের। সব মিলিয়ে সেখানে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, মুসলমানদের কোনো মানবাধিকার থাকতে পারে না। গত কয়েকদিনে সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে মুসলিম নিধনের প্রতিবাদে সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে হাজার হাজার মুসলিম জনগোষ্ঠী বাঁচার জন্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদ এলাকায় আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন। নির্যাতনের ভয়াবহতা এতই ব্যাপক যে, রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী ঝোঁপে, ঝাড়ে, জঙ্গলে, সমুদ্রে আশ্রয়ের জন্য ছুটে বেড়াতে গিয়ে অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে এক ভয়াবহ মানব বিপর্যয়ের চিত্র আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অসহায় উপদ্রুত আরাকান ও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা এলাকায় কোনো মিডিয়া কর্মীকেও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বর্বর-অমানবিকতার সব রেকর্ড ছাড়ানোর কথা ইতোমেধ্য বিশ্বজুড়ে আলোচিত। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হয়েছে, অনুরোধ জানানো হয়েছে জাতিসংঘসহ বিশ্বের শক্তিশালী সরকারগুলোর পক্ষ থেকেও। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী সকল আবেদন, নিবেদন ও অনুরোধকে উপেক্ষা করে চলেছে। উপরন্তু রোহিঙ্গা নিধন অভিযানের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের ন্যায্য অধিকার প্রদান, অভিবাসী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন এবং বর্বর হামলা, খুন, নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন করে বাংলাদেশে তাদের আসতে বাধ্য করা বন্ধ করতে আহবান জানাচ্ছি। বিশ্ব সম্পদায়কে এ বর্বর নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বৈরশাসনের কবলে দেশে দেশে জাতিগত সংঘাত, ধর্মীয় দুর্বল সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে উৎখাত, শোষণ-নিপীড়ন অব্যাহত গতিতে চলছে। পার্শ্ববর্তী দেশে সংখ্যালঘু মুসলিম রাখাইনদের ওপর নিপীড়নে বাংলাদেশ সরকারের দ্রুত তৎপরতা দেখানো উচিত ছিল। উচ্ছেদ হওয়া রোহিঙ্গাদের তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে তাদের বাঁচানো যেতো। পরবর্তীতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যেতো। কিন্তু অকারণে অনেক বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখালেও রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নীরবতা রহস্যজনক। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আহবান জানাচ্ছি নির্যাতিত ও উচ্ছেদ হওয়া মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমি আবারো মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রাখাইনদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তা বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।



 

Show all comments
  • Tusar ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১:০৮ এএম says : 0
    you are right sir
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ