Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গাদের হত্যা-নির্যাতন বন্ধে বিশ্ব বিবেক সোচ্চার হোন মহিউদ্দিন চৌধুরী

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারের আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর বর্বরোচিত হত্যা-নির্যাতন বন্ধে বিশ্ব বিবেককে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) প্রদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর উপর সে দেশের বৌদ্ধ মৌলবাদী, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা বর্বর কায়দায় যে অত্যাচার, হত্যা, গুম, লুটপাট, জ্বালাও-পোড়াওসহ সহিংস ঘটনা অব্যাহত রেখেছে, তা এক কথায় ভয়াবহ। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় রোহিঙ্গা নিপীড়নের যেসব তথ্য প্রচার হচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং নিন্দনীয়ও। এ ব্যাপারে সর্বাগ্রে জাতিসংঘকে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গা নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধের জন্য বিশ্ব বিবেককে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের উপর দমন-নিপীড়ন চলছে বছরের পর বছর। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জাতির দেশ মিয়ানমারে নরহত্যা কখনো কাম্য হতে পারে না। কেন না বুদ্ধের অমর বাণী, ‘প্রাণী হত্যা মহাপাপ’। ধর্মীয় দিক ছাড়াও মানবতার বিষয়টি সর্বাগ্রে প্রাধান্য পাওয়া উচিত। কিন্তু রাখাইন প্রদেশে মানবতা পদে পদে ভুলুণ্ঠিত হচ্ছে। ছোটখাটো বিষয় নিয়েও রোহিঙ্গাদের উপর হামলে পড়ছে সে দেশের মৌলবাদী সংগঠনগুলোর সদস্যরা। এছাড়া দীর্ঘ সময় জুড়ে সামরিক শাসনের কবলে থেকেও রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন চলছে। বর্তমানে সেখানে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সুতরাং এমন সরকারের আমলেও একই কায়দায় রোহিঙ্গাদের উপর বর্বরতা সভ্য সমাজে সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর উপর গত ১০ অক্টোবর থেকে বিভিন্ন কায়দায় হামলা, হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও, নিপীড়ন-নির্যাতন এবং দেশান্তরী হতে বাধ্য করা হচ্ছে; তা ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে প্রচার পেয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বিশ্ব বিবেক এখনো রহস্যজনকভাবে থমকে রয়েছে। জাতিসংঘও এক ধরনের নীরবতা পালন করছে।  
বিবৃতিতে মহিউদ্দিন চৌধুরী উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা-নির্যাতন বন্ধের ব্যাপারে জাতিসংঘকে এগিয়ে এসে মিয়ানমারের বর্তমান সরকারের উপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গা নিধন বন্ধ করতে হবে। সে দেশে রোহিঙ্গাদের জাতিগত অধিকার, নাগরিকত্বের অধিকার, ভোটাধিকারসহ শান্তিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে আন্তরিকতা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে বসবাসের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। জাতিসংঘের ইউএনএইচসিআরের হিসাব অনুযায়ী গত ৯ অক্টোবর থেকে সেনাবাহিনীর চিরুনি অভিযানে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাস্তুভিটাচ্যুত হয়েছে। শত শত ঘরবাড়ি  জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। আশ্রয়হীনভাবে খাদ্যাভাবে রোহিঙ্গারা পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আর চেষ্টা করছে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে। ইতোমধ্যে কিছু রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে কক্সবাজার অঞ্চলে চলে আসার খবর গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। এ ঘটনা উদ্বেগজনক।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গারা নিজ দেশে পরবাসী হয়ে দশকের পর দশক অনগ্রসর পরিবেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। বর্তমানে সে দেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ৮ থেকে ১০ লাখে নেমে এসেছে বলে তথ্য রয়েছে। বাংলাদেশে বৈধ-অবৈধভাবে বহু রোহিঙ্গা বসবাসরত। মানবিক কারণে সরকার রোহিঙ্গা পাকড়াও অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েও তা বাস্তবায়ন করেনি। পক্ষান্তরে মিয়ানমার সরকার দফায় দফায় কথা দিয়েও এ দেশে শরণার্থী হিসেবে যারা রয়েছে, তাদেরও ফিরিয়ে নিচ্ছে না। এ ঘটনা আন্তর্জাতিক সব রীতিনীতি ও আইনের পরিপন্থী। তিনি এ ব্যাপারে অবিলম্বে বিশ্বের শক্তিশালী দেশসমূহ, সাহায্য সংস্থা সর্বোপরি জাতিসংঘ মহাসচিবের কার্যকর উদ্যোগ কামনা করেছেন। এর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব এবং নিরাপদে বসবাসের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন।



 

Show all comments
  • Jamal Musafir ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:৪০ এএম says : 0
    আগে আওয়ামীলীগ সরকারকে বলুন ..বিশ্ব পরে
    Total Reply(0) Reply
  • Manik Khan ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:৪১ এএম says : 0
    yes, you are right
    Total Reply(0) Reply
  • Abdullah Mizan ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:০৯ এএম says : 0
    Bhai, apnake hajar salam.
    Total Reply(0) Reply
  • Md Kamal ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:১২ এএম says : 0
    অন্যায়েরর বিরুদ্ধে মূখ খোলার জন্য স্যারকে ধন্যবাদ। প্রতিবাদ সার্বজনীন এবং আরো তীব্র হওয়া উচিৎ।
    Total Reply(0) Reply
  • faisal ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ২:৩২ পিএম says : 0
    আমার এবং গোটা মুসলিম বিশ্ব থেকে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ