পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হত্যা মামলা করবে পরিবার
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুকে ঘিরে সৃষ্ট রহস্যের জট খুলেনি বরং পরিবারের অভিযোগ ও কতিপয় কর্মকর্তার অতি উৎসাহী তৎপরতায় রহস্য আরো ঘনীভূত হয়েছে। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে শুরু থেকে। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা দায়েরেরও প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। যে কোনো সময় হাটহাজারী থানায় মামলাটি দায়ের হতে পারে।
দিয়াজকে পরিকল্পিত খুনের অভিযোগের তীর বেশ কয়েকজনের দিকে। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার চৌধুরীও রয়েছেন বলে অভিযোগ দিয়াজের বড় বোন জোবাইদা সারোয়ার নিপার। তার মৃত্যু নিয়ে ক্যাম্পাসে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এদিকে গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে দিয়াজের বাসা পরিদর্শন করতে আসেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।
এ সময় তিনি বলেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর এপিএসের সাথে দিয়াজের মায়ের কথা হয়েছে। মামলাটি যাতে সঠিক তদন্ত হয় এবং আসল অপরাধীরা পড়ে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনও গুরুত্বের সাথে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। তদন্ত প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয় সে জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে বলে জানান জাকির।
দিয়াজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তথা সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির সূর্যসন্তান দাবি করে তিনি বলেন, ‘দিয়াজের মতো এত মেধাবী, বিচক্ষণ ছাত্রনেতা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তাকে নিয়ে যেন কোনো প্রকার নোংরা রাজনীতি করা না হয় সে জন্য সকলকে অনুরোধ জানান তিনি।
দিয়াজের বড় বোন জোবাইদা সরওয়ার নিপা অভিযোগ করে বলেন, ওরা আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরী তদন্ত প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত ও বানচাল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এ সময় তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, আমার ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত রির্পোট কি পাব? যেহেতু সুরতহাল প্রতিবেদনে তারা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল। এর আগে আনোয়ারের হস্তক্ষেপে ঘর ভাঙচুরের মামলা নেয়নি পুলিশ। আজ আমরা থানায় মামলা করব। এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনকে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
ঘটনার দিন উপস্থিত হাটহাজারী মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানের কর্মকা- রহস্যজনক ছিল বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্সের সভাপতি এ এইচ এম রাকিবুল মাওলা।
তিনি বলেন, ঘটনাটি শোনার পর আমি পুলিশের সাথে দিয়াজের কক্ষের দরজা ভেঙে প্রবেশ করি। এ সময় পরিবারের কোনো সদস্য বা পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তার অবর্তমানে ঝুলন্ত লাশটি নামিয়ে ফেলতে ওসি (তদন্ত) মুজিব তৎপরতা শুরু করেন। তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় পরিবারের অবর্তমানে লাশ নামাতে দেইনি। তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাজটি করে থাকতে পারেন। তার পুরো ভূমিকাই আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে তাই তাকেও নজরদারিতে রাখা দরকার।’
হাটহাজারী থানার ওসি (তদন্ত) মুজিবুর রহমান এ প্রেক্ষিতে বলেন, ‘সিনিয়র পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটসহ আমরা ওই কক্ষে প্রবেশ করেছি। কক্ষে প্রবেশ করে আমি কোনো মোবাইল ফোন পাইনি। পরিবারের কোনো সদস্য না রেখে লাশ দ্রুত নামিয়ে ফেলার কারণ জানতে চাইলে তিনি সিনিয়র পুলিশের ওপর দায় চাপান।
এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর হায়দার চৌধুরী রোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি এরশাদুল রহমান চৌধুরী, শাহাদাত হোসেন রাজন, আদিত্য নন্দী, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি উপস্থিত ছিলেন। তবে ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন উপস্থিতির কথা জেনেও চবি ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু ও তার নেতাকর্মীকে কোথাও দেখা যায়নি। এর আগে দিয়াজের নামাজে জানাজায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও চবি ছাত্রলীগের সাধারণ স¤পাদক ফজলে রাব্বী সুজন উপস্থিত থাকলেও দেখা যায়নি টিপুকে। দিয়াজ ইরফান চৌধুরী ও আলমগীর টিপু দুইজনই চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী।
উল্লেখ্য, গত ২০ তারিখ রাতে নিজ কক্ষ থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর মৃত্যুর পেছনে লুকিয়ে আছে যেন প্রায় শত কোটি টাকার টেন্ডার বাণিজ্য। আবার প্রায় শত কোটি টাকার এই টেন্ডার নিয়ে এর আগে পুঙ্গত্ব বরণ করেছে ছাত্রলীগ নেতা মাহবুব শাহারিয়ার শাহীন, বেধড়ক কুপিয়ে জখম করা হয় সহ-সভাপতি তায়েফুল হক তপুকে এবং সর্বশেষ টেন্ডারবাজির বলি হলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।