Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আপিল শুনানির জন্য গৃহিত

ডেসটিনির বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

ডেসটিনি-২০০০ লি: গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত সেনা প্রধান হারুন-অর-রশিদের সাজা বৃদ্ধির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন চেম্বার কোর্ট। এ তথ্য জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)র কৌঁসুলি খুরশিদ আলম খান। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমীনকে দেয়া দণ্ডাদেশ (১২ বছর কারাদণ্ড) বহাল রাখা হয়েছে। তবে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে হারুন-অর-রশিদ যে আবেদন করেছেন Ñসেটিও শুনানির জন্য গৃহিত হয়েছে। আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে উভয়য় আপিলের শুনানি একত্রে অনুষ্ঠিত হবে। শুনানি শেষে চেম্বার জাস্টিস এম. ইনায়েতুর রহিমের আদালত গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৯ জুন এ মামলায় হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ডেসটিনির দণ্ডপ্রাপ্ত ৩৯ আসামির বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ নির্দেশের পর দন্ডিত আসামি রফিকুল আমীনের স্ত্রী ফারাহ দীবা ১২ জুন বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
হারুন-অর-রশিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু। দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান শুনানি করেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের দায়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ১২ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই মামলায় কোম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।‘স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের’ কথা বিবেচনায় নিয়ে আদালত তার সাজা কমিয়ে দেয়ার কথা রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই রায়ে ৪৬ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে সবাইকে মোট ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেন। ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই কলাবাগান থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট অভিযোগ গঠন করে আদালত আসামিদের বিচার শুরু করে। ২০০০ সালে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড নামে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি দিয়ে এই গ্রুপের যাত্রা। পরের বছর বিমান পরিবহন, আবাসন, মিডিয়া, পাটকল, কোল্ড স্টোরেজ, বনায়নসহ বিভিন্ন খাতে ৩৪টি কোম্পানিতে ডেসটিনির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়। পরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।
এর মধ্যে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ কওে ডেসটিনি। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। তাতে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
আইন অনুযায়ী অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের সর্বোচ্চ শাস্তি ১২ বছরের কারাদণ্ড। ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীনকে সেই দণ্ডই দেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ২০০ কোটি টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ বছরের সাজা দেয়া হয় রায়ে। ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হারুন-অর-রশীদকে ৪ বছরের কারাদণ্ড এবং সাড়ে ৩ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ আইনে এটি সর্বনিম্ন সাজা।


দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমান, মেজবাহ উদ্দিন, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ, ফারাহ দীবা, জামসেদ আরা চৌধুরী, শেখ তৈয়েবুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, আজাদ রহমান, আকবর হোসেন, মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সাইদুল ইসলাম খান, সুমন আলী খান,শিরীন আকতার, রফিকুল ইসলাম সরকার, মজিবুর রহমান, দিদারুল আলম, এম. হায়দার উজ্জামান, জয়নাল আবেদীন, কাজী মো. ফজলুল করিম, মোল্লা আল আমীন, শফিউল ইসলাম, জিয়াউল হক মোল্লা, সিকদার কবিরুল ইসলাম, ফিরোজ আলম, ওমর ফারুক, সুনীল বরণ কর্মকার, ফরিদ আকতার, এস সহিদুজ্জামান চয়ন, আবদুর রহমান, সাকিবুজ্জামান, এস. এম আহসানুল কবির, এ. এইচ. এম আতাউর রহমান, জি. এম. গোলাম কিবরিয়া, আতিকুর রহমান, খন্দকার বেনজীর আহমদ, এ কে এম সফিউল্লাহ, শাহ আলম, দেলোয়ার হোসেন, জেসমিন আক্তার ও শফিকুল হক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ