Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বার্মা মানে নিশ্চিত মৃত্যু পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বক্তব্য

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু থেকে পালিয়ে আসা অনেক রোহিঙ্গা বলেছেন, মিয়ানমারে থাকা মানে নিশ্চিত মৃত্যু। তাই তারা বাংলাদেশেই থেকে যেতে চান। বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে কঠোর নজরদারি চালালেও বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় এসে আশ্রয় নিচ্ছেন রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিমরা। রোববার রাতেও নৌকায় করে টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় এসেছেন অন্তত ১৩ জন রোহিঙ্গা। এদের সাথে কথা বলেছেন বিবিসির সংবাদদাতা আকবর হোসেন।
জানা গেছে, রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে রোববার রাতে একটি নৌকায় করে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা দেন অন্তত ২০ জন রোহিঙ্গা মুসলমান। কিন্তু নাফ নদীর মাঝপথে তাদের নৌকা ডুবে যায়। তখন অন্য একটি নৌকা এসে তাদের বাঁচালেও ৭ জন যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। প্রাণভয়ে পরিবার নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে আসার সময় তিন সন্তানকে হারিয়েছেন হুমায়ুন কবির ও রোকেয়া বেগম।
হুমায়ুন কবির বলেছেন, তিনি আর মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান না, যেভাবেই হোক বাংলাদেশেই থেকে যেতে চান তারা। ‘ওখানে খারাপ ছিলাম না। কিন্তু এখন সেখানে যে পরিস্থিতি থাকার মতো অবস্থা আর নেই। ওখানে ফিরে গেলে নিশ্চিত মৃত্যু’Ñ বলছিলেন হুমায়ুন কবির।
জনাব কবির বলছেন, তাদের সাথে আরো অনেক রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কয়েকটি নৌকায় তারা রওনাও দিয়েছিল। কিন্তু তাদের এখন কী অবস্থা, জানেন না তিনি। হুমায়ুন কবিরের ভাষ্য অনুযায়ী, মংডুতে তাদের গ্রামে আর কোনো রোহিঙ্গা মুসলিম খুঁজে পাওয়া যাবে না। সবাই প্রাণভয়ে পালিয়ে আছেন কোথাও। নয়তো বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছে। টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় এসে আশ্রয় নিয়েছেন হুমায়ুন কবির, তার স্ত্রী রোকেয়া বেগমসহ ১৩ জন। তাদের সাথে আসা মোতায়রা বেগমও নাফ নদীতে তার সন্তানকে হারিয়েছেন, নৌকায় আসার সময় মোতায়রার একমাত্র সন্তানও ডুবে গেছে। হ্নীলায় এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছেন মোতায়রা ও তার স্বামী। মোতায়রা বেগম অভিযোগ করে বলেছেন, রাখাইনে যে অত্যাচার-নির্যাতন চলছে তা বলে বোঝানো যাবে না।
‘সেনাবাহিনীর মানুষ এসে ঘরের দরজা আটকিয়ে আগুন দেয় আর বলে এরা রোহিঙ্গা মুসলিম। কোনোভাবে যদি কেউ বাড়ি থেকে পালাতে চায় তাহলে তারা গুলি করে।’
রাখাইনের মেয়েদের ওপর ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ করছেন এ রোহিঙ্গা মুসলিমরা। রোহিঙ্গাদের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব সত্ত্বেও সীমান্তের ওপারে চরম সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে পড়া মানুষদের প্রতি বাংলাদেশীদের সহানুভূতি বাড়ছে বলে বিবিসির সংবাদদাতা জানাচ্ছেন।
তবে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের দাবি বরাবরই ‘অতিরঞ্জিত’ বলে বর্ণনা করে থাকে, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বর্মী সরকারের একজন মুখপাত্র য থে একটি বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, ‘রাখাইনে যা ঘটছে, তা ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ