Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনা-ঢাকা স্টীমার সার্ভিস ফের চালু হবে ৩০ নভেম্বর

এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম


দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত খুলনা-ঢাকা স্টীমার সার্ভিস চালু হচ্ছে আগামী ৩০ নভেম্বর থেকেই। রাজধানী ঢাকার সাথে এ নৌসংযোগের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে মালামাল পরিবহন ও নৌযাত্রীদের চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় ৫ বছর পর সার্ভিসটি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। ২০১১ সালে নাব্যতা সংকটের অজুহাতে এ রুটে স্টীমার সার্ভিসটি বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিসি’র জিএম নুরুল আলম আখন্দ (বাণিজ্য যাত্রি ও ফেরী) বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে খুলনা-ঢাকা রুটের স্টীমার সার্ভিসটি চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বর সকালে ঢাকার সদরঘাট থেকে স্টীমার ছাড়বে খুলনার উদ্দেশে। পরবর্তী ১ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় খুলনা বিআইডব্লিউটিসি ঘাটে পৌঁছাবে স্টীমারটি। ওইদিন রাত ৩টায় আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে স্টীমারটি খুলনা ত্যাগ করবে। আপাতত সপ্তাহে একবারই একটি স্টীমার যাতায়াত করবে। তাছাড়া, দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় এ রুটের ঘাটগুলোতে বেশ সমস্যা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মেরামত কাজ করা হবে।
বিআইডব্লিউটিসি’র খুলনার ম্যানেজার আব্দুল মান্নান বলেন, স্টীমার সার্ভিস চালুর বিষয়ে ঢাকা থেকে জানানো হয়েছে। তবে খুলনার স্টেশনগুলোতে জনবল সংকট রয়েছে। আগে খুলনার ডেল্টা, খুলনা ঘাট ও মংলা ঘাট মিলিয়ে প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল। ২০১১ সালে স্টীমার সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সেসব কর্মচারীকে এখান থেকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বদলী করে দেয়া হয়। ফলে এখন জনবল সংকট থাকলেও আমরা পূর্বের সেই জনবল কাঠামো ফিরিয়ে দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। খুব শিগগিরই জনবল পেয়ে যাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০১১ সালের ২ অক্টোবর ঘষিয়াখালী চ্যানেলের নাব্যতা অজুহাতে ঢাকা-খুলনা রকেট সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিকল্প রুট হিসেবে মংলার জয়মনির ঘোল বগি হয়ে খুলনা-ঢাকা রকেট সার্ভিসের স্টীমার চলাচলের জন্য আলোচনা শুরু হয়। রকেট সার্ভিস চলাচলের জন্য নাব্যতাসহ সকল ধরনের সুবিধা থাকলেও সে সুযোগকেও ধামাচাপা দিতে তৎপর ছিল বিআইডব্লিউটিসি অফিসের কর্তাব্যক্তিরা। এছাড়াও বিআইডব্লিউটিসি’র আঞ্চলিক কার্যালয়কে খুলনা থেকে বরিশালে স্থানান্তরের ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সম্প্রতি মংলা ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি ড্রেজিং করার পর সংশ্লিষ্ট নৌ-পথ দিয়ে স্টীমার চলাচলের সকল বাধা দূর হয়। এরপরও বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ এ রুটে স্টীমার চালাতে গড়িমসি শুরু করে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেই স্টীমার সার্ভিস চালুর বিষয়ে তাগিদ দেন। এর প্রেক্ষিতেই চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। গত ২ নভেম্বর বিআইডব্লিউটিএ খুলনা কার্যালয় থেকে গভীরতা যাচাই করে প্রতিবেদন জমা দেয় বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ বরাবর। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মংলা থেকে ঘষিয়াখালী চ্যানেলে ৩১কিলোমিটার নদীপথে মংলা থেকে জয়খালী পর্যন্ত পানির গভীরতা ২ দশমিক ৫ মিটার। আর জয়খালী থেকে ঘষিয়াখালী চ্যানেল পর্যন্ত গভীরতা ৩মিটার। এছাড়াও মংলা থেকে বগুড়ার খাল পর্যন্ত নদী চওড়া প্রায় ৬০ মিটার। বিআইডব্লিউটিসি খুলনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্টীমার চলতে নদীর গভীরতার প্রয়োজন হয় মাত্র এক মিটার বা সাড়ে ৪ ফুট। স্টীমার সাভিস চালু হলে নৌ-পথে মালামাল পরিবহন ও নৌযাত্রীদের চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পুনরায় বাস্তবায়ন হচ্ছে।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, সকল ষড়যন্ত্র নসাৎ করে খুলনা-ঢাকা স্টীমার সার্ভিস চালু করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ কৃতজ্ঞ। সার্ভিসটি চালু থাকলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে রাজধানীর সাথে নৌসংযোগের মাধ্যমে মালামাল পরিবহন ও নৌযাত্রীদের চলাচলের সুযোগ থাকবে। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও যোগাযোগ উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে সার্ভিসটি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ