Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রতিদিন বাড়ছে আটকেপড়া কার্গো জাহাজের সংখ্যা

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১৬ এএম, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬

গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া এলাকায় পদ্মা-যমুনা নদীতে অস্বাভাবিক নাব্যতা সংকটে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি বন্দরগামী আটকে পরা বিভিন্ন পন্যবাহী কার্গো জাহাজের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। সোমবার কয়েকটি জাহাজ আংশিক পণ্য আনলোড করে ড্রাফট কমিয়ে ছেড়ে গেলে আটকা ছিল আরো ১৯টি জাহাজ।
বিআইডব্লিউটিএ ও আটকে থাকা কার্গো চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পদ্মা-যমুনা নদীতে অস্বাভাবিক নাব্যতা সংকটের কারণে চট্টগাম থেকে ছেড়ে আসা উত্তরাঞ্চলগামী সার, তেল, চাল, ভুট্টাসহ বিভিন্ন বোঝাই কার্গো জাহাজ গত এক সপ্তাহের অধিক দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের পাশে জয়দার ম-লপাড়া এলাকায় আটকা পড়েছে। নদীর এ এলাকায় ৮-৯ ফুট পানির গভীরতা আছে। কিন্তু এসব কার্গো জাহাজ চলাচলের জন্য অন্তত ১২-১৩ ফুট পানির গভীরতার প্রয়োজন হয়। ফলে কার্গো জাহাজগুলো এ এলাকায় এসে আটকা পড়ছে। ৪-৫ দিন আটকে থাকার পর ট্রলারের সাহায্যে মালামাল আনলোড করে ড্রাফট কমানোর পর তা গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা নদীতে নোঙর করে আছে এমভি খিজির, এমভি নার্গিস-১, এমভি আল্ ইনসান, এমভি গ্রিন বার্ড-২, এমভি তমাল-১, এমভি দোহার করিয়া, এমভি নদীর মায়া, এমভি শেখ এন্টারপ্রাইজ, এমভি হিমু, এমভি নজরুল ইসলাম, এমভি পারভীন-২, এমভি পোটন-২, এমভি ইউরেকা-১, এমভি মাষ্টার সুমন, এমভি সাদ, এমভি পোটন-৩, এম ভি মিইনিখ, এমভি আছিয়া লুৎফরসহ ১৯টি জাহাজ। এ সময় শতাধিক শ্রমিক ওই জাহাজগুলো থেকে সার, সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ‘ক্লিংটার’, ভুট্টা, পোল্ট্রিখাদ্যসহ বিভিন্ন মালামাল নামিয়ে সেগুলো বোলগেট ও ট্রলারে বোঝাই করছে। এভাবে প্রতিদিন তিন-চারটি জাহাজ ছেড়ে গেলেও নতুন করে আটকা পড়ছে আরো জাহাজ। এ কারণে এ এলাকায় আটকেপড়া জাহাজের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পরিবহন কোম্পানি স্বাধীন এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি রাসেল হাওলাদার মুসা জানান, এমভি সাদ-২ কার্গো জাহাজে ব্রাজিল থেকে আমদানিকৃত কোয়ালিটি পোল্ট্রি ফিডসের ভুট্টা নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। গত ১৭ নভেম্বর দৌলতদিয়া এলাকায় এসে নাব্যতা সংকটে আটকা পড়ে। অনেক জাহাজ আটকে পড়ায় পণ্য আনলোডের শ্রমিক সহজে মিলছে না। চড়া দামে শ্রমিক নিয়ে অর্ধেক পণ্য আনলোড করে তারপর গন্তব্যে যাওয়া চেষ্টা করা হবে। এতে করে তাদের পণ্য পরিবহনের অনেক বেশি খরচ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পণ্যের মালিকপক্ষ চুক্তির বাইরে কোনো টাকা দেবে না। এতে তারা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।
মাল খালাসকারী শ্রমিক সরদার জনাব আলী জানান, তার নেতৃত্বে ৮০জন শ্রমিক দিন-রাত আটকে থাকা জাহাজ থেকে মাল খালাস করছেন। তাদের মতো আরো কয়েকটি দল এখানে এ কাজ করছে। ঝুঁকি ও পরিশ্রম বিবেচনায় তারা খুব কম টাকায় কাজ করছেন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে বিআইডাব্লউটিএর উপ-পরিচালক (নৌসপ) আব্দুস সালাম জানান, এ নৌরুট মূলত ৯ ফুট ড্রাফটের নৌযান চলাচল উপযোগী। জাহাজগুলোকে সেভাবেই নির্দেশনা দেয়া আছে। কিন্তু যে কার্গো জাহানগুলো আটকা পড়ছে, সেগুলোর ড্রাফট ১২-১৩ ফুট। এ কারণেই আটকেপড়ার ঘটনা ঘটছে। তবে দু’-এক দিনের মধ্যে নাব্যতা সংকট কাটাতে নৌরুটে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ