Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আড্ডা দিতে বাধা দেয়ায় খুন : ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা গ্রেফতার ২

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

বন্ধুর খোঁজে কক্সবাজার গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে বাসায় ফিরে এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- রুবেল (১৯) ও জিসানুল ইসলাম (২০)।
গতকাল বুধবার মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, ১০ম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর বন্ধু জিসান চট্টগ্রামে ফুলকলি মিষ্টির কারখানায় কাজ করতেন। ফেসবুকে পরিচয়ের সুবাদে ১ বছর ধরে তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে জিসানুল ইসলাম আরো বেশি বেতনে কক্সবাজারে চাকরি পেয়ে চলে যান। বন্ধু জিসানের আমন্ত্রণেই গত ৩১ মে এক বান্ধবীসহ চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে যায় ওই শিক্ষার্থী। কিন্তু বন্ধু জিসান ব্যস্ত আছেন, দেখা করতে পারবে না বলে জানান এবং তাদেরকে চট্টগ্রাম ফিরে যাওয়ার জন্য বলেন। তখন বন্ধবীসহ ওই কিশোরী একটি টমটম নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে যান চট্টগ্রামে ফিরে যাওয়ার জন্য। টমটম চালক রুবেল ঘটনা জানার পর তাদেরকে আশ্বস্ত করেন জিসান তার পূর্ব পরিচিত। যেভাবেই হোক জিসানের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেবেন।

টমটম চালক রুবেলের কথায় আশ্বস্ত হয়ে বান্ধবীকে চট্টগ্রামের বাসে তুলে দিয়ে নিজে থেকে যায় ওই কিশোরী। রুবেল জিসানকে খুঁজে বের করার অভিনয় করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। রাতে জিসান ‹হোটেল আলামিন›-এ দেখা করবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হোটেলে রুম নিয়ে দেন রুবেল। রাতে জিসান এসেছে জানিয়ে হোটেলের রুমের দরজা খোলার জন্য তাকে বললে সে দরজা খুলে দেয়। তখন রুবেল ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে কৌশলে পালিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, নিরুপায় ওই কিশোরী ১ জুন চট্টগ্রামে নিজ বাসায় ফিরে আসে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ৩ জুন নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সে। এ ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের বোনের দায়েরকৃত মামলায় তদন্তের ধারারাবাহিকতায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।

অন্যদিকে এক স্টুডিও ফটোগ্রাফারকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগে নয়ন মনি ওরফে বাউল নয়ন (২৬) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। আড্ডা দিতে বাধা দেয়ায় কৃষ্ণ সরকার (৪০) নামে স্টুডিও ফটোগ্রাফারকে হত্যা করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন সাতাইশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে নয়নকে গ্রেফতার করা হয়।

সিআইডির একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার নয়নের বাড়ি কুষ্টিয়া হলেও নেশা ও আড্ডার সুবিধার্থে শ্বশুর বাড়ি সাভারের আড়াপাড়া এলাকাতেই বেশিরভাগ সময় থাকতেন। সে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অন্যান্য বখাটেদের নিয়ে জমিদার বাড়ির পুকুর পাড়ে নেশাকরে উচ্চস্বরে অশ্লীল গান বাজনা করতো। গত ৩০ মে রাতে স্টুডিও ফটোগ্রাফার কৃষ্ণ সরকার বাসায় ফেরার সময় সময় তার বাসার সামনে ওই পুকুর পাড়ে বখাটেদের আড্ডা দিতে নিষেধ করেন। এ সময় তাদের চলে যাওয়ার অনুরোধ করেন কৃষ্ণ। কিন্তু একপর্যায়ে নয়নের নেতৃত্বে অন্যান্য বখাটেরা কৃষ্ণ সরকারকে মারপিট করতে থাকে। নয়ন সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে তাকে উপর্যুপরি বুকে ও পেটে আঘাত করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩১ মে কৃষ্ণ মারা যান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ