Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক বছর ১৯ দিন পর দায়িত্বে কেসিসি মেয়র মনিরুজ্জামান

এ.টি.এম. রফিক/আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম


খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি এক বছর ১৯ দিন পর ফের দায়িত্ব পেলেন। হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং ৭০৯৮/১৬ মূলে প্রদত্ত স্থগিতাদেশ বজায় থাকাকালীন সময়ে মেয়রের সাময়িক বরখাস্তের আদেশটির কার্যকারিতা স্থগিত করে প্রজ্ঞাপনজারী হয়। গতকাল সোমবার স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব কাজী আসাদুজ্জামান প্রেসিডেন্টের আদেশক্রমে এ প্রজ্ঞাপনজারী করেন। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগর ভবনের মেয়র কার্যালয়ে ঢুকে দায়িত্ব করেন কেসিসি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি। এরআগে, গত ১৩ নভেম্বর সাময়িক বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রেখে সরকারের করা আপীল খারিজ হয়। গেল বছরের ২ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৫টায় মন্ত্রণালয়ের আদেশে সাময়িক বরখাস্ত হন তিনি।
সরেজমিন দেখা গেছে, সোমবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রজ্ঞাপনজারীর পর মেয়র মনিরুজ্জামান মনি দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আসছেন বলে কাউন্সিলররা প্রধান নির্বাহী পলাশ কান্তি বালাকে জানান। দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ আনিসুর রহমান বিশ্বাস খুলনা না থাকায় আপত্তি তোলেন তিনি। এসময় কাউন্সিলর মাহবুব কায়সার, আশফাকুর রহমান কাকন, গিয়াসউদ্দিন বনি, কেএম হুমায়ুন কবির, সমশের আলী মিন্টু, রাবেয়া ফারিদ হাসনাহেনাসহ উপস্থিত কাউন্সিলররা প্রজ্ঞাপনটির অনলাইন থেকে প্রাপ্ত প্রিন্ট কপি দেখান। তবুও দায়িত্ব হস্তান্তরে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। কাউন্সিলরদের সাথে বাকযুদ্ধের একপর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগর ভবনের প্রধান সিঁড়ি দিয়ে প্রবেশ করেন মেয়র মনিরুজ্জামান মনি। এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নগর শাখার সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, কাউন্সিলরসহ সর্বস্তরের মানুষ তার সাথে ছিলেন। উৎসুক মিডিয়াকর্মীদের ছিল ভিড়। কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ছিলেন উন্মুখ। ঠিক বিকেল ৩টা ৩৭ মিনিটে মেয়র কক্ষে প্রবেশ করেন। ঢুকেই ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন মেয়র। এরপর ৩টা ৪২ মিনিটে আসেন কেসিসি’র নবাগত প্রধাননির্বাহী পলাশ কান্তি বালা। তার সাথে কুশল বিনিময়ের পরেই চেয়ারে বসেন মেয়র মনিরুজ্জামান মনি। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। পরে কেসিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এসে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন মেয়রের সাথে। সকলের সাথে কুশলাদি বিনিময়ের ফাঁকে তার রেখে যাওয়া (কেসিসি’র) তহবিল ও প্রকল্পগুলোর সংক্ষিপ্ত খোঁজ-খবর নেন তিনি। এসময় প্রকৌশলী মশিউর রহমানের চিকিৎসার খোঁজ নেন মেয়র। একই সকলকে আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে যথারীতি অফিস ও দাপ্তরিক কাজ করতে বলে আগামীতে ‘টীমওয়ার্ক’ করার জন্য তাগিদ দেন। এসময় প্রধান নির্বাহীকে কিছু বলতে বলেন মেয়র। প্রথমেই তার বিপত্তির ব্যাখ্যা দিয়ে ক্ষমা চেয়ে প্রধান নির্বাহী পলাশ কান্তি বালা বলেন, “আমি সদ্য যোগদান করেছি। এখনো সেভাবে দায়িত্ব বুঝে উঠতে পারিনি। তাই চেয়েছিলাম-আপনি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন।” এসময় প্রজ্ঞাপনটি দেখিয়ে আইনী ব্যাখ্যা দেন মেয়র মনি। তবুও বুঝতে কোন আপত্তি থাকলে প্রধান নির্বাহীকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে পরামর্শ দেন তিনি। সকল মত পার্থক্য ভুলে এক সাথে নগরের উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানান। কর্মকর্তারা উঠে গেলে বিকেল ৪টা ৯ মিনিটে কাউন্সিলরদের সাথে মতবিনিময় করেন মেয়র। তিনি সকলকে জনগণের নিকট দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে খুলনাবাসীর স্বার্থে এক সাথে কাজ করার আহ্বান জানান। মাগরিবের আযানের সময় তিনি নগর ভবন ত্যাগ করেন।
গতকাল ১৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ কেসিসি মেয়র মনিরুজ্জামান মনির সাময়িক বরখাস্তের সরকারি আদেশের বিরুদ্ধে দেয়া হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে সরকারের করা আপীল খারিজ করে দেন। আপীল বিভাগের মামলার শুনানিতে প্রবীণ আইনজীবী এ কে মোহাম্মদ আলীকে সহযোগিতা করেন এ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও এ্যাড. আনিসুর রহমান খান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ