পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি আজ বলেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের ধারাবাহিক ও সুসঙ্গত নীতিমালা দেশে জাপানি বিনিয়োগ দ্বিগুণ এবং বাণিজ্য তিনগুণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, নীতির সমন্বয়, নীতির ধারাবাহিকতা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং এটি ভবিষ্যতে আরও বেশি ভূমিকা পালন করবে।
রাষ্ট্রদূত জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিক্যাব) এর ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বিকশিত করতে সহায়তা করবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাপান-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব দেশের স্বাধীনতার পর থেকে পাঁচ দশকের মধ্যে গত এক দশকে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছে এবং নীতিগত ধারাবাহিকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী এক দশকে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে আরও ভালো অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব থাকবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানির সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে এবং তাদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ এখানে তাদের ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত অবস্থান, মেগা অবকাঠামো প্রকল্প, বৈচিত্র্যময় সাপ্লাই চেইনের সম্ভাবনা এবং আরএমজি রপ্তানি বাজার এবং শক্তিশালী রেমিট্যান্সের ভিত্তি হলো আরও বেশি জাপানি কোম্পানি এদেশে ব্যবসা করতে উৎসাহিত করার প্রধান কারণ।
ইতো নাওকি বলেন, টোকিও এবং ঢাকা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও সমৃদ্ধ করতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির মতো দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের চুক্তি করার অপেক্ষায় রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) গ্রুপ থেকে মধ্যম আয়ে উন্নীত হওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের আরও বেশি সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রয়োজন।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, টোকিও বাংলাদেশের কাছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি করতে আগ্রহী কারণ ঢাকা বর্তমানে প্রতিরক্ষা ক্রয়ের উৎসে বৈচিত্র্য আনার কথা বিবেচনা করেছে।
জাপানও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির ক্ষেত্রে তাদের বিধি-বিধান শিথিল করেছে। টোকিও ইতোমধ্যে ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন এবং আসিয়ান দেশগুলোতে কিছু প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানি করছে।
তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিশেষ করে বিমান বাহিনীর জন্য রাডার কেনার ক্ষেত্রে আগ্রহ সম্পর্কে জানতে একটি জাপানি প্রাইভেট কোম্পানি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সফর করেছে।
নাওকি আরও বলেন, জাপানি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগের চেয়ে বেশি আগ্রহী কারণ বর্তমান সরকারের আরও সুসঙ্গত নীতি রয়েছে যা বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে এবং এর অর্থনীতি ক্রমাগত জোরদার হচ্ছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটকে এই অঞ্চলের জন্য অস্থিতিশীলতার কারণ হতে দেওয়া উচিত নয়।
সমস্যা মোকাবেলায় আমাদের আরও সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি থাকা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে ফিরে যেতে পারে সেলক্ষ্যে তার দেশ রাখাইন রাজ্যে পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাব্য সব উপায় অন্বেষণে নিয়োজিত রয়েছে।
বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ আশা করে এখানে কোনো সহিংসতা ছাড়াই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, আমি আশা করি এখন থেকে আগামী বছরের মধ্যে, সরকার নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু এবং ২০১৮ সালের আগের নির্বাচনের চেয়ে ভালো হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেবে।
টোকিওতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে সম্প্রতি গঠিত ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক (আইপিইএফ) প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত ওয়াশিংটনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ ‘এই কাঠামোতে (যোগদানের জন্য) কিছু অর্থনৈতিক যোগ্যতা অর্জন করবে’।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিক্যাবের সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।