পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হজ পালন করা একটি বৈশ্বিক ইবাদত। হজ হচ্ছে এমন একটি ইবাদত যা আদায় করতে দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হতে হয়। আল্লাহ তায়লা ইরশাদ করেন,"মক্কাতেই মানবজাতির জন্য সর্ব প্রথম ঘর তৈরি হয়েছিল। ঐ ঘর বিশ্ববাসীদের জন্য হেদায়াত ও বরকতের উৎস।" (সূরা আলে ইমরানঃ ৯৬)। আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। নগরীর মসজিদগুলোতে জুমার নামাজে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।
গুলিস্থানস্থ ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে জামে মসজিদের খতীব আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী আজ জুমার খুৎবায় বলেন, হজ হচ্ছে এমন একটি ইবাদত যা আদায় করতে দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হতে হয়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,"মানুষের উপর আল্লাহর বিধান ঐ ঘরের হজ করা, যার আছে সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য। আর কেউ কুফর করলে আল্লাহ তো বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন।" (সূরা আলে ইমরান : ৯৭) হাদিসের মধ্যে রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, "পাঁচটি ভিত্তির উপর দ্বীনে ইসলাম স্থাপিত। প্রথমত এই সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। দ্বিতীয়ত নামাজ প্রতিষ্ঠা করা। তৃতীয়ত যাকাত আদায় করা। চতুর্থত বায়তুল্লাহর (কা’বা গৃহের) হজ করা এবং পঞ্চমত রমযানের রোযা পালন করা। (বুখারী ৮, মুসলিম ১২২)।
খতীব আরো বলেন, হজ পালন করা একটি বৈশ্বিক ইবাদত। আল্লাহ তায়লা ইরশাদ করেন, "মক্কাতেই মানবজাতির জন্য সর্ব প্রথম ঘর তৈরি হয়েছিল। ঐ ঘর বিশ্ববাসীদের জন্য হেদায়াত ও বরকতের উৎস।" (সূরা আলে ইমরানঃ ৯৬) খতীব আরো বলেন, বাইতুল্লাহ যেমনিভাবে বৈশ্বিক তেমনিভাবে কোরআন কারীমকেও আল্লাহ তায়ালা বৈশ্বিক বানিয়েছেন। আল্লাহ তায়লা বলেন, "এটি (কোরআন কারীম) সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি উপদেশ ছাড়া আর কিছুই নয়" (সূরা আনআমঃ ৯০) এবং রাসূল (সা.) কেও আল্লাহ তায়ালা বৈশ্বিক রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, "এবং আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।" (সূরা আম্বিয়াঃ ১০৭)। এতে বুঝা গেল, রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বাইতুল্লাহকে হজ, উমরাহ ও ক্বিবলাহ হিসেবে ও কিতাবুল্লাহকে আমাদের জীবন বিধান হিসেবে এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) কে আমাদের উত্তম আদর্শ হিসেবে বৈশ্বিক বানিয়েছেন। আল্লাহ সবাইকে দ্বীনের ছহি বুঝ দান করুন। আমিন।
মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী জুমার বয়ানে বলেন, ইসলামে পোশাকের গুরুত্ব অপরিসীম। এর দ্বারা লজ্জা নিবারণ ছাড়াও মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশে প্রকৃতি অনুভব করা যায়। ব্যক্তি তার নিজের সম্মান সম্ভম খুঁজে পায়। পরিবার, সমাজ অশ্লীলতা দূষণ মুক্ত থাকে। মার্জিত পোশাক পরিধানে পুরুষ মহিলা স্বীয় ভূষন সুসংহত করতে সক্ষম হয়। পুরুষ নিজেকে অনেক গুনাহ থেকে মুক্ত রাখতে পারে । মা বোনেরাও নিজেদেরকে ইভটিজিংয়ের মত মহামারী থেকে বাঁচাতে সক্ষম হয়। প্রত্যেকেই শান্তির সুফল ভোগ করতে পারে । এজন্যই আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, হে আদম সন্তান ! আমি তোমাদের জন্য লজ্জা নিবারণ ও সৌন্দর্যতা সংরক্ষণের লক্ষ্যে পোশাকের ব্যবস্থা করেছি। আর মার্জিত তাকওয়ার পোশাকই তোমাদের জন্য উত্তম, কল্যাণকর। এটা মহান আল্লাহর নিদর্শন । সূরা আরাফ, আয়াত নং ২৬। ইসলামী শরীয়তে পুরুষের নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত , মেয়েদের সমস্ত অঙ্গ প্রতঙ্গ ঢেকে রাখা ফরজ। অবস্থানুযায়ী শীত গরম ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি নিবারণ পোশাক পরিধান ওয়াজিব। নগ্ন, অর্ধনগ্ন, অশ্লীল ও বেহায়াপনা সৃষ্টিকারী পোশাক পরিধান করা সম্পূর্ণ হারাম, কঠিন গুনাহ । এ ধরনের পোশাক পরিধান কারীর পরিনাম সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দুই দল জাহান্নামীদের আমি এখনো দেখেনি, একদল যারা গরুর লেজের মত ছড়িয়ে বা লাঠি দিয়ে মানুষকে প্রহার করে, আর এক দল ঐসব মহিলা যারা পোশাক পরিহিত অর্ধ নগ্ন উলঙ্গের ন্যায়, পুরুষ আকর্ষণকারী ও আকর্ষণ কৃতা। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তারা কিছুতেই জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং জান্নাতের সুঘ্রানও পাবেনা । মুসলিম শরীফ । আল্লাহ সকলকে এধরনের অভিসম্পাত থেকে বাঁচার তৌফিক দান করেন । আমিন। দিনাজপুর গোর এ শহীদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা রেজাউল করিম আজ জুমা পূর্ব খুৎবার বয়ানে বলেন, উম্মতের একটি বড় দায়িত্ব ও সম্মান হলো শুধু নামে মুমিন হলে চলবে না সত্যিকারে মুমিন হতে হবে। তাহলে দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবী নসিব হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমাকে পাওয়ার জন্য যে কষ্ট মোজাহাদা স্বীকার করবে, ত্যাগ স্বীকার করবে, অবশ্যই আমাকে পাওয়ার পথ আমি তাকে দেখাবো। সে আমাকে পাবে। অতএব আল্লাহকে পাওয়ার জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের কামিয়াবী নসিব করার জন্য কষ্ট মোজাহাদা করতে প্রস্তুত হতে হবে। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারীমে বলেন, মানুষ এমন আছে যারা প্রান্তিক ভাবে আল্লাহর ইবাদত করে, তারা ভাল অবস্থায় থাকলে নিশ্চিন্তে ইবাদত চালিয়ে যায়, কিন্তু কোন বিপর্যয় আসলে পিছনের দিকে ফিরে যায়। তাদের দুনিয়া ও আখেরাত সবকিছুই বরবাদ। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারীমে বলেন, যারা ঈমান আনে এরপর ঈমানের উপর অটল অবিচল থাকে,তারা কোন অবস্থায় তাদের ঈমানী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয় না। তাদের কোন ভয় ও দুঃখ নেই। তারা সফল কাম। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন। আমিন।
ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতীব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা ভীষণ পাপের কাজ। আর মুসলিম সমাজে এর প্রচার প্রসার আরও গর্হিত অপরাধ। ‘অশ্লীলতা’ শব্দের আরবি প্রতিশব্দ হিসেবে পবিত্র কোরআনে ‘ফাহশা’ ও ‘ফাহেশা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অশ্লীলতা নিয়ে পবিত্র কোরআনে ২৪টি আয়াত রয়েছে। অশ্লীলতাকে আল্লাহ তায়ালা পরিস্কার ভাষায় হারাম করেছেন। আল্লামা ইবনে কাসীর রহ. বলেন, অশ্লীলতার সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র হলো ব্যভিচার। সুতরাং ব্যভিচার ও ব্যভিচারে প্রলুব্ধকারী সব ধরনের ইঙ্গিত, কথা, কাজ, পোশাক, চিত্র ও ভঙ্গিমা অশ্লীলতার অন্তর্ভুক্ত। ইসলামে সব ধরনের অশ্লীলতা স্পষ্ট ভাষায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, "নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ইনসাফ, ইহসান ও আত্মীয় স্বজনকে দান করার নির্দেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসৎ কাজ ও সীমা লঙ্ঘন করতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যেন তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো।" (সূরা নাহল-৯০)।
খতীব আরও বলেন, ইসলাম বিবাহের মাধ্যমে বৈধ পন্থায় নারী-পুরুষের মেলামেশার সুযোগ দিয়েছে। আর পরকীয়া ব্যভিচারসহ নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ও চলাফেরাকে কঠোরভাবে নিষেধ করে চরিত্র সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সূরা বনি ইসরাঈল : ৩২)। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুখ ও লজ্জাস্থানের হেফাজতের জামিনদার হবে আমি তার বেহেশতের জামিনদার হবো।’ (বুখারিঃ ৭৬৫৮)। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন। আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।