পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের দেশের বাইরে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকায় এবং অব্যাহত পাচার ঠেকাতে পূর্বের রক্ষণশীল মনোভাব থেকে সরে এসেছে সরকার। কিভাবে দেশীয় ব্যবসায়ীদের এই সুযোগ দেয়া যায় তা নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে আপাতত বিদেশে শিল্প স্থাপনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। শুরুতে সেবা খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হবে। এটা ফলপ্রসূ হলে পরে শিল্পে বিনিয়োগেরও সুযোগ দেয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দেশে বর্তমানে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ রয়েছে। এটা আমাদের বহিঃবাণিজ্যের জন্য যথেষ্ট। এছাড়া বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ না থাকায় প্রচুর অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে যা ওই সব দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে। এই অর্থ পাচার কোনভাবেই আটকানো যাচ্ছে না। তাই বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার জন্য অর্থমন্ত্রী নমনীয় হয়েছেন। তার নির্দেশনার প্রেক্ষিতেই এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
উন্নত দেশগুলোর অসংখ্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গত শতকের ষাটের দশক থেকে বিদেশের বাজারে বিনিয়োগ শুরু করে। এমনকি ভারতও ১৯৫৬ সালে বিদেশে বিনিয়োগের দ্বার উন্মুক্ত করে দেয় তার দেশের উদ্যোক্তাদের জন্য। অথচ মুক্ত অর্থনীতিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হলেও এ বিষয়ে রক্ষণশীল মনোভাব পরিবর্তন করেনি বাংলাদেশ।
১৯৪৭ সালের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশনের বিধি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে আইনে সামান্য পরিবর্তন করে কেস টু কেস ভিত্তিতে বিদেশে বিনিয়োগের দ্বার উন্মোচন করা হয়। তবে বাছাই করা কয়েকটি কোম্পানিই বর্তমানে বিনিয়োগের সুযোগ পাচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রস্তাব জমা দিতে হয়। পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিচার বিশ্লেষণ করে অনুমোদন দেয়। তবে এ ক্ষেত্রেও বর্তমানে কঠোরতা অবলম্বন করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কয়েক ডজন প্রস্তাব জমা থাকলেও একটিরও অনুমোদন দিচ্ছে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের রক্ষণশীল অর্থনীতির কারণে ভিনদেশের বাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রুদ্ধ থাকায় মুদ্রা পাচার হচ্ছে। অর্থনীতির ব্যাপ্তি বাড়ার যে সম্ভাবনা রয়েছে, তাও থেমে আছে। গত চার দশকে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৮০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। এসব টাকা মালয়েশিয়া, কানাডা, ভারত, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে পাচার হচ্ছে। অথচ এসব দশে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের সুযোগ করে দিলে বিদেশি বাজার থেকে উচ্চহারে রিটার্ন পেত বাংলাদেশ। পাশাপাশি পরিবহন খরচ কমা ও বিদেশে দেশীয় জনশক্তির কর্মসংস্থান বাড়তো।
বাংলাদেশের রিজার্ভ বাড়ার নেতিবাচক দিকও রয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়ার পাশাপাশি রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে। আবার পণ্যের অবমূল্যায়নও হতে পারে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ উন্মুক্ত করার জন্য সরকার চিন্তা করছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এদিকে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বাধা চিহ্নিত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এগুলো হলোÑ বিশ্ব অর্থনীতিতে সংযুক্ত হওয়ার সক্ষমতার অভাব, সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর একীভূতকরণ ও সুসংহতকরণের অভাব, ব্যবসায়ীদের ওপর সরকারের আস্থার অভাব প্রভৃতি। কিভাবে এসব বাধা দূর করা যায় তা নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।
২০১৩ সালে বিদেশে বিনিয়োগের নীতিমালা প্রণয়নের জন্য কাজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তখন দেশে রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৩ বিলিয়ন ডলার। শক্তিশালী রিজার্ভ না থাকাসহ আরও কয়েকটি কারণে তখন বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি আগায়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন পরিবেশ অনুকূলে থাকায় নীতিমালা প্রণয়নের কাজে হাত দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।