পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারী গৃহকর্মী প্রেরণের শর্তারোপ করে সউদী গমনেচ্ছু পুরুষ কর্মীদের ভিসা দেয়া স্থগিত করেছে ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন ভোরে শত শত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক-প্রতিনিধিরা ব্যাগভর্তি পুরুষ কর্মীর পাসপোর্ট নিয়ে সউদী দূতাবাসে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পাসপোর্ট জমা দিতে পারছেন না। এতে অনেক সউদী গমনেচ্ছু পুরুষ কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রায় ৪০ হাজার সউদীর ভিসা আটকা পড়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও বায়রার নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে নির্বিকার। এ ব্যাপারে গতকাল বায়রার সভাপতি বেনজির আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পরে কথা বলব। সউদী দূতাবাসের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর চুক্তিবহির্ভূত এ ধরনের একতরফা সিদ্ধান্তের কারণে সউদী গমনেচ্ছু কর্মীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যথাসময়ে ভিসা হাতে না পাওয়ায় সউদী নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। অবিলম্বে সউদীর পুরুষ কর্মীর ভিসা ইস্যু কার্যক্রম শুরু না হলে সউদীর শ্রমবাজার হাতছাড়া এবং অভিবাসন ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। একাধিক জনশক্তি রফতানিকারক এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। সউদী গমনেচ্ছু কর্মীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার বেশি নেয়ায় সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় তিনটি রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করেছে। বাংলাদেশ সরকারের সাথে সউদী সরকারের বিভিন্ন কোম্পানিতে পুরুষ কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার শর্ত সম্পর্কিত চুক্তি না থাকা সত্ত্বেও সউদী দূতাবাসের একতরফা সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার পুরুষ কর্মীর যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী রিক্রুটিং মালিক অভিযোগ করেছেন, ঢাকাস্থ সউদ দূতাবাস গত তিন সপ্তাহ যাবৎ অধিকাংশ এজেন্সির মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানিতে যাওয়া পুরুষ কর্মীর পাসপোর্ট জমা স্থগিত রেখেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে মৌখিকভাবে যারা ১০০ জন পুরুষের মধ্যে ২৫ জন নারী গৃহকর্মীর পাসপোর্ট জমা দেবেন শুধু তাদেরই পাসপোর্ট গ্রহণ করা হবে, যা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সউদী আরবে কর্মরত আত্মীয়-স্বজনরা নিজেদের প্রচেষ্টায় এসব ভিসা কিনে তাদের নিকটাত্মীয়দের নেয়ার জন্য ভিসা পাঠিয়েছিলেন।
দীর্ঘ আট বছর বন্ধ থাকার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত প্রচেষ্টায় সম্প্রতি সউদী সরকার বাংলাদেশ থেকে পুরুষ কর্মী নেয়া শুরু করেছে। গত দুই-তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সউদী আরব থেকে প্রায় ৪০ হাজার কর্মীর চাহিদাপত্র সংগ্রহ করে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের সউদী দূতাবাস মহিলা কর্মীর নিয়োগসংক্রান্ত একতরফা সিদ্বান্তের কারণে বিপুল সংখ্যক পুরুষ কর্মী নিয়োগ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। গত বছর সউদী সরকারের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে গৃহপরিচারিকা প্রেরণের চুক্তি সম্পন্ন হয়। ২০১৫ সাল থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৭৮ হাজার ৮৪৩ জন গৃহপরিচারিকা কাজ নিয়ে সউদী গমন করে। নানা কারণে সউদী থেকে স্বল্প সময়েই বেশ কিছু নারী গৃহকর্মী দেশে ফিরে এসেছে। বাংলাদেশ ও সউদী সরকারের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে সউদী আরবের বিভিন্ন কোম্পানিতে বেসরকারি খাতে কোম্পানিগুলোর বিপুল পরিমাণে পুরুষ কর্মী প্রেরণের সাথে উক্ত চুক্তির কোনো সম্পর্ক না থাকলেও সউদী দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা না নেয়ায় বর্তমানে সউদী গমনেচ্ছু হাজার হাজার কর্মীর সউদীর কর্মস্থলে যাওয়া অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে । রিক্রুটিং এজেন্সি ট্রাভেলস নিউজ লি:-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল হক ওয়ালী গতকাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সউদী দূতাবাসে পুরুষ কর্মীদের পাসপোর্ট জমা নেয়া বন্ধ করায় কর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। আরোপিত শর্ত প্রত্যাহার করে পুরুষ কর্মীদের ভিসা ইস্যুর জন্য পাসপোর্ট অবিলম্বে জমা নেয়ার জন্য তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। রিক্রুটিং এজেন্সি হাবিব অ্যাসোসিয়েট (১০৮৭) ও ইয়াম্বু ট্রেড ইন্টারন্যাশনালও সউদী দূতাবাসে পুরুষ কর্মীদের ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছে। এস কে ওভারসীজ (৮৮৬)ও সউদী গমনেচ্ছু শতাধিক পুরুষ কর্মীর পাসপোর্ট ভিসার জন্য জমা দিতে পারেনি।
জানা গেছে, সউদী আরবে মূলত দুই শ্রেণীর এজেন্সি কর্মী প্রেরণ করে থাকে। সর্বমোট ১১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ২২৬ রিক্রুটিং এজেন্সি মহিলা কর্মী প্রেরণের অনুমতি পেয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ বড় বড় রিক্রুটিং এজেন্সি সউদী আরবে নারী কর্মী প্রেরণের পর বিভিন্ন সমস্যার কারণে নারী কর্মী পাঠাতে ইচ্ছুক নয়। অথচ এসব বড় বড় এজেন্সির কাছে বর্তমানে হাজার হাজার পুরুষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে। কর্মীরা দূতাবাস থেকে ভিসা স্ট্যাম্পিং না হওয়ায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া বিএমইটি থেকে সউদী গমনেচ্ছু কর্মীদের ছাড়পত্র পেতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিএমইটির সউদী গমনেচ্ছু কর্মীদের চাহিদাপত্র (আরবী) একমাত্র অনুবাদক ফসিউর রহমানের টেবিলে প্রতিদিন শত শত ফাইল স্তূপ পড়ে থাকে। বিএমইটিতে কমপক্ষে ৫-৬ জন অনুবাদ প্রয়োজন হলেও কর্তৃপক্ষ একজন অনুবাদক দিয়েই জোড়াতালি দিয়ে বিদেশ গমনেচ্ছুদের ছাড়পত্র ইস্যুর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অনুবাদের ফাইল ৭-৮ দিন করে এক টেবিলে পড়ে থাকায় অনেক কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। বায়রার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও আল-রাবেতা ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ আবুল বাশার বলেছেন, প্রতিদিন তিন-চার হাজার কর্মীর ছাড়পত্র ইস্যু করতে গিয়ে একজন অনুবাদকের কাছে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক-প্রতিনিধিরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। তিনি অবিলম্বে আরো ৫-৬ জন অনুবাদক নিযুক্ত করে ছাড়পত্র ইস্যুর কার্যক্রম সহজতর করার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ও সচিবের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়া পরিচালক বহির্গমন টিপু সুলতানের রুমেও শত শত বিদেশ গমনেচ্ছুদের ছাড়পত্রে ফাইল দিনের পর দিন স্তূপ পড়ে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার বায়রার জরুরি বৈঠকে সউদী দূতাবাসে পুরুষ কর্মীর পাসপোর্ট জমা নেয়া বন্ধের বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।