পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে নিবন্ধিত সাড়ে ৩শ’ বিদেশি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে মাত্র ১২টি। আবার এসব কোম্পানির সামান্য শেয়ার আছে বাজারে। ৯০ ভাগের বেশিই ধরে রেখেছেন বিদেশি মালিকরা। এতে এ দেশ থেকে এসব কোম্পানি বিপুল পরিমাণ মুনাফা তুলে নিলেও কোন সুবিধা পাচ্ছেন না দেশীয় পুঁজির মালিকরা। তাই বিদেশি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তির শর্ত আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ-উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বিদেশি কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত না হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ কাজ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ তালিকাভুক্তির শর্ত থেকে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অব্যাহতি দেওয়া। এ কারণে বিদেশি কোম্পানিকে আনা সম্ভব হচ্ছে না। এর বাইরে বাজরের প্রতি আস্থাহীনতা ও সরকারের উদ্যোগের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। তবে বিদেশি কোম্পানির অংশগ্রহণ বাড়লে শেয়ারবাজারের সব ধরনের সূচক বাড়বে ও বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের মুনাফা পাওয়ার সম্ভবনা তৈরী হবে বলেও তিনি জানান। সরকার দীর্ঘদিন ধরে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হলেও তেমন কাজে আসেনি। ২০০৯ সালে গ্রামীণফোনের পর আর কোনো বিদেশি কোম্পানি শেয়ারবাজরে তালিকাভুক্ত হয়নি। তবে সম্প্রতি বাজারের গভীরতা বাড়াতে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে গত সপ্তাহে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বহুজাতিক কোম্পানিকে তালিকাভুক্তির জন্য সংশ্লিষ্টদের ১০ দিনের মধ্যে মতামত দিতে বলা হয়। সে অনুযায়ী শেয়ারবাজার কর্তৃপক্ষ কাজ করছে বলে জানা গেছে।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯-এর ইস্যু অব ক্যাপিটালের ২(এ) ধারা অনুযায়ী, দেশি-বিদেশি যে কোনো কোম্পানির মূলধনের ওপর বিএসইসির কর্তৃত্ব রয়েছে। যে কোনো কোম্পানির ওপর শর্ত, চুক্তি, মেমোরেন্ডাম দেয়ার ক্ষমতা বিএসইসিকে দেওয়া হয়েছে। এদিকে ২০০৬ সালে বিএসইসি আইন করে কোনো কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা অতিক্রম করলেই সেটিকে তালিকাভুক্তির শর্তজুড়ে দেয়। পরে বিলুপ্ত বিনিয়োগ বোর্ডে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এ শর্ত থেকে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে অব্যাহতি দেয়া হয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য দেশি কোম্পানিগুলোর ওপর নানা ধরনের শর্ত থাকলেও বিদেশি কোম্পানির ওপর নেই। তারপরও তারা শেয়ারবাজরে আসছে না। এতে বড় বড় বিদেশি কোম্পানি হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করলেও বাংলাদেশের জনগণ এর অংশীদারিত্ব পাচ্ছে না।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী দেশি কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন নির্দিষ্টসীমা অতিক্রম করলেই এক বছরের মধ্যে শেয়ারবজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির জন্য পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে আত্মপ্রকাশের ৩ বছরের মধ্যে শেয়ারবাজরে আসতে হয়। কোনো কোম্পানি ওই সময়ে তালিকাভুক্ত হতে না পারলে যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে ৬ মাস সময় বাড়াতে পারে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এসব কোম্পানিকে প্রতিদিন ১ হাজার টাকা হারে জরিমানা দিতে হয়। কিন্তু বিদেশি কোম্পানির জন্য এ ধরনের বাধ্যবাধকতা নেই। অবশ্য মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোকে লাভজনক হওয়ার পর শেয়ারবজারে আসার শর্ত রয়েছে।
এদিকে বিগত কয়েক বছরের শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ দেয় বিদেশি কোম্পানিগুলো। এই হিসাবে বিদেশী কোম্পানিগুলোর ২০ শংতাশও যদি বাজারে আসে তাহলে শেয়ারবাজার থেকে বড় লভ্যাংশ পাবে বিনিয়োগকারীরা। গতবছর বিদেশি কোম্পানি মধ্যে রেকিট বেনকিজার দিয়েছে ৬৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ। বিএটিবিসি ও প্লাক্সো-স্মিথক্লাইন দিয়েছে ৫৫০ শতাংশ করে। এছাড়া মেরিকো ৪৫০ শতাংশ, বার্জার পেইন্টস ৩৭০ শতাংশ, বাটা সু ৩২০ শতাংশ, লিন্ডে বিডি ৩১০ শতাংশ, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ৩০০ শতাংশ এবং গ্রামীণফোন ১৪০ শতাংশ। অথচ দেশিও কোম্পানি তাদের থেকে গড়ে প্রায় ৮০ শতাংশ কম লভ্যাংশ দিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান দুই বিদেশি কোম্পানি ‘ইউনিলিভার’ ও ‘অ্যাভেন্টিস’-এ সরকারের শেয়ার রয়েছে যথাক্রমে ৩৯ দশমিক ১ এবং ৪৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ দুই কোম্পানিকে দেশের শেয়ারবাজারে শেয়ার ছাড়ার জন্য বেশ কয়েকবার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু সেই অনুরোধে তারা কোনো সাড়া দেয়নি।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর আবু আহমেদ বলেন, বিদেশি কোম্পানির ন্যূনতম ১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়া বাধ্যতামূলক করা দরকার। এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় যত তাড়াতাড়ি উদ্যোগ নিবে বিনিয়োগকারীদের জন্য ততই লাভজনক হবে। তিনি আরো বলেন, বিদেশি বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনায় বসতে হবে। সে সব প্রতিষ্ঠানের কোনো বিষয়ে অনাস্থা থাকলে তা দূর করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।